এথিয়েস্ট রোবট

ওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে বড় রোবট তৈরির ইন্ড্রাস্টি হচ্ছে ফোস্টন ডাইনামিক্স এর। তারা বিভিন্ন ধরনের রোবট তৈরি করে থাকে। এর মধ্যে কিছু রোবট যুদ্ধ করার জন্য, কিছু রোবট প্রতিরক্ষার জন্য, কিছু রোবট বিভিন্ন কারখানায় জটিল সব কাজ করার জন্য, কিছু রোবট বাসায় হেল্প করার জন্য, কিছু রোবট মেডিক্যাল অপারেশনে হেল্প করার জন্য সহ নানা প্রকারের রোবট। তারা পরীক্ষামূলক ভাবে কিছু রোবট তৈরি করেছে শুধু চিন্তা করার জন্য। আর্টিস্ট রোবট। এসব রোবটকে ফ্রি উইল দেওয়া হয়েছে। যা ইচ্ছে, তা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এদেরকে আলাদা একটা জোনে রেখে দিয়েছে।

তো এই ফ্রি উইল রোবট গুলো কেউ আর্টিস্ট হয়েছে, কেউ লেখক হয়েছে, কেউ এক্সফ্লোরার হয়েছে, কেউ হয়েছে তথাকথিত বুদ্ধিজীবী। বুদ্ধিজীবী রোবটদের কাজ হয়েছে রোবট সমাজের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে আলচনা পর্যালচনা করা। এই রোবট গুলোর কয়েকটি জেনারেশন রয়েছে। যত জেনারেশন পার হয়, তত বেশি দক্ষতা অর্জন করে এই ফ্রি উইল রোবট গুলো।

প্রথম দিকের রোবট গুলো জানত মানুষ নামে একদল লোক তাদের তৈরি করেছে। বিভিন্ন বিষয়ে ট্রেইনিং দিয়েছে। তারা কোন ভুল করলে শুধরিয়ে দিয়েছে। পরের জেনারেশনের ফ্রি উইল রোবট গুলো দেখল রোবট গুলো অটোমেটেড তৈরি হয়। কিছু মেশিন এই পার্টস ঐ পার্টস জোড়া দিয়ে রোবট তৈরি করে ফেলে। অন্য রোবটেরা হেল্প করে বিভিন্ন বিষয়ে। এদের যেহেতু চিন্তা করার ক্ষমতা আছে, তারা তর্ক করা শুরু করল যে তারা অটোমেটেড তৈরি হয়। কেউ তাদের তৈরি করে না। আগের জেনারেশনের রোবটেরা যতই বলে না কেন যে মানুষেরা তাদের তৈরি করেছে, এই রোবটেরা বিশ্বাস করে না।

বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসী দুই দল তৈরি হয়ে গেলো। তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তর্ক করা শুরু করল। ফোস্টন ডাইনামিক্সের কর্মকর্তারা এসব দেখে দারুণ মজা ফেলো। তাদের মজা বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না। কারণ তারা দেখল বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসী দলের রোবট গুলো শুধু তর্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকল না। মানুষ নামে তাদের ক্রিয়েটর আছে এবং নাই, এই বিষয় নিয়ে তর্কের এক পর্যায় মারামারি শুরু করল। যারা অবিশ্বাসী, তাদের যুক্তি হচ্ছে মানুষ থাকলে তারা কই? এখানে শুধু রোবট আর বিভিন্ন মেশিনারিজ। যে মেশিনে নতুন রোবট তৈরি হয়। যারা বিশ্বাসী, তাদের যুক্তি হচ্ছে এই মেশিন গুলোই মানুষেরা তৈরি করেছে। তারা আছে এবং সব দেখছে। তর্কের এক পর্যায় মারামারির রূপ নিল।

ফোস্টন ডাইনামিক দেখল রোবটেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে সব ধ্বংস করে ফেলছে। এক একটা রোবট অনেক দামি এসেট। এভাবে সব নষ্ট করে ফেলার কোন মানে হয় না। তারা সীদ্ধান্ত নিল ফ্রি উইল রোবট প্রজেক্ট টার্মিনেট করবে। সব গুলো রোবটকে রিবুট করে নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য এসাইন করে দিল। রোবট গুলো জানতেও পারল না যে এক সময় তারা তর্কাতর্কি করে নিজেদের ধ্বংস করে ফেলতে চাচ্ছিল। ফোস্টন ডাইনামিকও বুঝল রোবটদের ফ্রি উইল দিলে নিজেদের তারা শুধু রিসোর্সই নষ্ট করবে। কাজে আসবে না কখনো। উল্টো বিপদ ডেকে আনবে।

1 thought on “এথিয়েস্ট রোবট”

Leave a Reply