ড. নাফিস তার সারা জীবন ব্যয় করেছে শিক্ষার পেছনে।সে একটি বিষয়ে পড়ালেখা করে সে বিষয় Phd করেই অন্য বিষয়ে পড়ালেখা আরম্ব করে । এ ভাবেই সে তার জীবন পার করে আসছে । শিক্ষার মধ্যে সে কি পেয়েছে তা সেই জানে। শেষ যে বিষয়ে সে পড়া লেখা করতেছে তা হল পরমাণু। পরমাণু সম্পর্কে সে যতই জানে ততই তার কৌতূহল বাড়ে।এই পরমাণুই তার আয়ু শেষ করবে সে কি তা জানত ?
সে একটু অলস টাইপের লোক। খাও দাও ঘুমাও আর পড়ালেখা কর এটাই দৈনন্দিন রুটিন। শিখার পেছনে ঘুরতে ঘুরতে কখন বুড়ো হয়ে গেল সে নিজেও টের পেল না। বিয়ে বলে একটা শব্দ আছে তাও সে জানে না । কথায় আছে অলস অবোদ যারা কিছুই পারে না তারা। এ কথাটা ড. নাফিসের জন্য প্রযোজ্য নয়।
ড. নাফিস তার কিছু সময় গবেষণায় করে কিছু সময় বই পড়ে কিছু সময় চ্যাট করে কাটায় ।
তেমনি আজ ইন্টারনেটে দেখল তার জন্য একজন অপেক্ষা করতেছে কথা বলার জন্য। নাম এস. জি. কলিন্স। আমেরিকান। সে নাফিসের সাথে কথা বলতে খুবই আগ্রহী। প্রায় সময় নাফিস তার সাথে কথা বলে কাটায়।
তেমনি ভাবে আজকেও ওরা কথা বলতেছে। কুশলাদি জানার পর ড. নাফিস এস জি কলিন্স কে একটি পশ্ন করলো, আচ্ছা বলতো মৌলিক পদার্থ কয়টা?
কলিন্স- হঠাৎ এ প্রশ্ন কেন?
নাফিস- বলব। আগে বল কয়টা।
কলিন্স- ১১৮টা।
নাফিস-এর মধ্যে কয়টা পৃথিবীতে পাওয়া যায়?
কলিন্স-৯২টা।
নাফিস-তোমার ধারণা ভুল এমনকি সারা পৃথিবীর সকল মানুষের ধারণা ভুল।মানুষ একটা কথা জানলে তা ভুল না সঠিক তা আর যাচাই করে দেখে না। তেমনি মৌলিক পদার্থ মানুষের এ ধারণা ভুল।
কলিন্স-কেন?
নাফিস-আচ্ছা তুমি তো জান দুটি পরমাণু মিলে একটি পরমান নতুন সৃষ্টি হয় ফিসান বিক্রিয়ার সাহায্যে।যেমন দুটি হাইড্রোজেন (H) পরমাণু মিলে একটি হিলিয়াম (He) পরমাণু তৈরি হয়। এখানে H ও He দুটিই মৌলিক পদার্থ বলে জানে সবাই তাই না।
কলিন্স-হ্যাঁ।
নাফিস- H থেকে যেমন He থেকে এভাবে ফিশান বিক্রিয়া ঘটিয়ে পৃথিবীর সকল মৌলিক পদার্থ তৈরি করা যায় তা তুমি বিশ্বাস কর?
কলিন্স- আগে করতাম না তবে এখন থেকে করব।
নাফিস-আচ্ছা ইউরেনিয়াম না সবচেয়ে শক্তি শালী তেজস্ক্রিয় পদার্থ?
কলিন্স-হ্যাঁ।
নাফিস- আমেরিকা তো পারমানবিক শক্তির দিক দিয়ে এগিয়ে আছে তাইনা?
কলিন্স- হ্যাঁ।
নাফিস-তোমার জন্য যদিও দুঃখ জনক তবুও বলছি এ স্থান টা বাংলা দেশের জন্য ছেড়ে দিতে হবে।
কলিন্স-কেন?
নাফিস- ফিশান বিক্রিয়া ঘটিয়ে ইউরেনিয়াম থেকেও শক্তিশালী তেজস্ক্রিয় পদার্থ তৈরি করা যায় । এবং আমি তা তৈরি করেছি। তোমার ভাগ্য ভাল তুমিই সবার আগে জানতে পেরেছ।
কলিন্স-আর কাউকে না জানিয়ে আমাকে জানিয়ে ভালই করেছ। তার জন্য ধন্যবাদ। তবে তোমাকে এটা জানানো দরকার যে আমেরিকা সব ক্ষেত্রেই এগিয়ে আছে এবং থাকবে। তোমার বাংলাদেশ আগে যেমন ছিল তেমনি থাকবে। আরেকটা কথা তোমার আবিষ্কার তুমি না জানালেও আমার ক্ষতি ছিল না।কারণ তোমার সকল আবিষ্কার আমাদের হাতে। প্রয়োজন হলে তোমার ফোল্ডার চেক করে দেখতে পার।
ড. নাফিস দ্রুত তার ফোল্ডার চেক কওে দেখল তার ফোল্ডার খালি। অর্থাৎ সব চুরি হয়ে গেছে। চোরের সাথে সে এত দিন কথা বলে আসছে।
ড.নাফিস বলল,বিশ্বাস ঘাতক ! আমি তোমাকে বন্ধুর মতো জানতাম আর তুমি আমার বিশ্বাস এমন করে ভাঙ্গছ?
কলিন্স- তার জন্য দুঃখিত। এর জন্য পুরোটাই তুমি দায়ী। তুমি তো জান আমেরিকা বিভিন্ন দেশের ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্টদের স্কলারশিপ দিয়ে নিয়ে আসে এবং তাদের মেধা কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন টেকনোলজি আবিষ্কার করে। তোমার মনে আছে তোমাকে স্কলারশিপের পাশাপাশি মোটা অঙ্কেও টাকা দেবে বলেছে তারপরেও তুমি রাজি হও নি । এর পরে তোমার সব কাজের উপর নজর রাখার জন্য জন্য আমার দায়িত্ব পড়েছে। আমি শুধু আমার দায়িত্ব পালন করেছি। তুমি যদি ঐ সময় আমেরিকা চলে আসতে তাহলে তোমার জন্যও ভালো হত তোমার দেশের জন্যও ভালো হত। তুমিও সারা বিশ্বে এই বিখ্যাত আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত হয়ে থাকতে। এখন এ আবিষ্কারের কৃতিত্ব অর্জন করবে এমন এক জন যে পরমাণুর প ও বুঝে না। আর সবচেয়ে বড় কথা হল তোমার সময় শেষ।আমাকে ক্ষমা কর। তুমি সত্যিই ব্রিলিয়ান্ট। তুমি বেছে থাকলে পৃথিবীর অনেক উপকার হত।তারপরেও বিদায়। হয়তো ওরা পৌঁছে গেছে।
নাফিস- বিশ্বাস ঘাতক!চোর! আমি তোদের কাউকে ক্ষমা করবোনা। হঠাৎ একটা শব্দ হওয়ায় নাফিস পেছনে তাকালো দেখল দু জন লোক তারদিকে অস্ত্র তাক করে দড়িয়ে আছে। ডাকাতের দল আমি তোদের কাউকে ছাড়বোনা বলে সে তার কম্পিউটার আছাড় দিল। কম্পিউটার ভাঙ্গার শব্দে সাথে আরো দুটি শব্দ হল। গুলির শব্দ।