উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ, সপ্তম দিনঃ বগুড়া, রাজশাহী

 

দিনাজপুর থেকে এসেছি বগুড়াতে। রাতে বগুড়াতে একটা হোটেলে ছিলাম। সাত রাস্তার মাথা। সকালে ঘুম থেকে উঠেছি সাড়ে আটটার দিকে। উঠে ফ্রেস হয়ে নাস্তা করছি আম আর লিচু দিয়ে। এরপর আবার একটু রেস্ট নিলাম। উঠলাম ১০ টার দিকে। হোটেলের নিচেই রেস্টুরেন্ট, দ্বিতীয়বারের মত নাস্তা করে নিলাম।

এরপর ঘুরতে বের হয়েছি। আরিফুর রহমান ভাই এসেছে। উনার সাথে বগুড়া পার্ক গিয়েছি। হাঁটতে হাঁটতে এ মাথা থেকে সেই মাথা। অনেক গরম। রোদ ও অনেক বেশি। পার্ক থেকে গিয়েছি স্যার আজিজুল হক কলেজ। সেখান থেকে গিয়েছি বগুড়া মেডিকেল কলেজে। এদিক সেদিক ঘুরে হোটেলে ফিরে এসেছি।

 

আজ জুমাবার। নামাজ পড়তে গিয়েছি বগুড়া সেন্টাল মসজিদ। নামাজ পড়ে লাঞ্চ করার জন্য গিয়েছি আকবরিয়াতে। খাবার ভালোই লেগেছে। এরপর রওনা দিয়েছি প্রেম যমুনার ঘাটের দিকে। যমুনার তীরে।

কালীতলা ঘাটে গিয়ে ট্রলার নিয়ে নদীর মাঝখানের দিকে গিয়েছি। তখন সাড়ে তিনটা। অনেক বেশি রোদ, গরম। ট্রলারে ছাউনি ছিল। নদীর মাঝখানে গিয়ে ইচ্ছে করল নদীতে লাফ দিতে। ব্যাকপ্যাক সাথেই ছিল। থ্রি-কোয়াটার বের করে পরে নিলাম। এরপর দিলাম নদীতে লাফ। আহ! কি দারুণই না লাগল। ব্যাকপ্যাকে থ্রি কোয়াটার রাখার কারণ হচ্ছে উত্তরবঙ্গের দিকে এসে যদি কোন পুকুর পাই, গোসল করব। ৬ দিন চলে গেছে, পুকুরে নেমে গোসল করার সুযোগ হয় নি। আজ নদীতে গোসল করে ইচ্ছে পূরণ হয়ে গেলো।

IMG_2424
যমুনা নদীতে ট্রলারের উপর আমরা
IMG_2436
ট্রলারের উপর আমরা
IMG_2465
যমুনাতে লাফ দেওয়ার আগে 😀
IMG_2504
যমুনার পাড়
IMG_2512
যমুনা নদী পার হচ্ছে যাত্রীরা
IMG_2520
যমুনাতে গোসল

নদী থেকে এসে শহরে ফিরলাম। ফিরতে ফিরতে ৬টা বেজে গেলো। আমি রাজশাহী ফিরব। রনি ভাই আমাকে রাজশাহীর বাসে তুলে দিল।

বাসে উঠেছি টিকেট কেটে। মানে আমার জন্য সীট আছে, তা বলে টিকেট বিক্রি করল। উঠে দেখি দাঁড়ানোর মত জায়গাও নেই। বড় সড় বাস সম্ভবত মহানগর নাম। তারপর ও এ অবস্থা! আমার পিঠে ব্যকপ্যাক। মোটামুটি ওজন। এ ওজন নিয়ে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে রাজশাহীর দিকে রওনা দিলাম। নাটোর এসে সীট ফেলাম বসার জন্য। বসলাম।

বাস থেকে নেমে সাহেব বাজার আসলাম। গুগলে ম্যাপে হোটেল লিখে সার্চ করার সময় Hotel Nice International সবার আগে পেলাম। ঐখানে গিয়ে দেখি কোন রুম খালি নেই। এর পর গেলাম হোটেল আনামে। রুম পছন্দ হয় নি। এর পর এসেছি হোটেল মিডনাইট এ। রুম পছন্দ হয়েছে। নন এসি। এত বেশি গরম যে রাতে ঘুমাতে পারব না। আরেকটাতে গেলাম। Hotel SB International. রুম আছে, এসি রুম নেই। আর নন এসি রুম যা আছে তার থেকে মিড টাউন ভালো মনে হয়েছে। মিড টাউনে ফেরত এসেছি। ফ্রেস হয়ে বের হয়ে পড়লাম, রাতের খাবার খাওয়ার জন্য। হোটেলের পাশে একটা রেস্টুরেন্ট রয়েছে। তেমন ভালো নয়। তবে ভাতের সাথে চিংড়ি পেয়ে গেলাম। ভালোই লাগল।

রুমে ফেরার সময় আম আর লিচু কিনে ফিরেছি। জানি না ফরমালিন মুক্ত কিনা। ঢাকা থেকে এত্ত দুরে এসেছি তাজা ফল খাওয়ার জন্য। এরপর ও যদি না খেতে পারি, তাহলে আর কি করা। এখানে কয়েকটি ফুলের দোকান দেখেছি। ফুল দেখলে কেন জানি ভালো লাগে। কিনতে ইচ্ছে করে। কয়েকটি কিনে নিয়ে এসেছি।

ফলের মধ্যে আমার পছন্দের ফলের মধ্যে সবার আগে হচ্ছে আম আর লিচু। আমার খারাপ লাগে এ জন্য যে, লিচু খুব কম সময়ের জন্য পাওয়া যায়। আর ঢাকায় আম কিনতে ইচ্ছে করে না। ফরমালিন এর জন্য। যেখানে লেখা থাকে ফরমালিন মুক্ত আম পাওয়া যায়, সেখানেও নাকি ফরমালিন যুক্ত আম বিক্রি হয়। তারপর ও আম দেখলেই কিনতে ইচ্ছে করে।

রুমে ফেরার সময় যে লিচু গুলো কিনে এনেছি, সেগুলো দারুণ রসালো। এবং অনেক মিষ্টি। দিনাজপুর যে লিচু খেয়ে এসেছি, সে গুল থেকেও বেশি মিষ্টি। দিনাজপুর অনেক রকমের লিচু টেস্ট করেছি। আমি নাম ও জানি না সব গুলোর।

গত কয়েক দিন প্রতিদিন লিচু খেয়েছি। সারা বছর লিচু পাওয়া গেলে কি দারুণই না হতো। হোটেলের রিসিপসনে বসে থাকা ছেলের কাছ থেকে রুমের চাবি নেওয়ার সময় জিজ্ঞেস করলাম আম খাবেন? বলল খাওয়া যায়। তাকে আম দিলাম।

রুমে ঢুকে কম্পিউটার নিয়ে বসে পড়া। রুমটা অনেক সুন্দর। এসি থাকলে দারুণ হতো। দক্ষিন দিকে পুরোটাই জানালা। জানাল খুলে দিলাম। খারাপ লাগে নি। গরমে ঘুমের জন্য অপেক্ষা করতে করতে এক সময় ঘুমিয়ে গেলাম।

বগুড়া থেকে সব গুলো ছবি

1 thought on “উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ, সপ্তম দিনঃ বগুড়া, রাজশাহী”

Leave a Reply