IELTS এক্সামের প্রস্তুতি এবং আমার এক্সাম অভিজ্ঞতা

আইএলটস পরীক্ষার জন্য রেজিট্রেশন

অগাস্ট মাসে IELTS পরীক্ষা দেওয়ার জন্য রেজিট্রেশন করি ব্রিটিশ কাউন্সিলের ওয়েবসাইট থেকে। রেজিট্রেশন করার পর টাকা পে করতে হয়। আমি পে করি স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের মেইন ব্রাঞ্চে। কি ভাবে টাকা পে করতে হয়, কোন কোন ব্যাংক বা ব্রাঞ্চে টাকা পে করা যায়, তা রেজিট্রেশন করার পর জানা যায়। ইমেইল অথবা ওয়েব সাইট থেকে এসব তথ্য পাওয়া যায়। যে সব ব্রাঞ্চে টাকা পে করতে হয়, সে সব ব্রাঞ্চে ব্রিটিশ কাউন্সিলের ফরম রয়েছে। ১৬৫০০ টাকা পে করতে হয় আইএলটস একাডেমিক মডিউলের জন্য।

টাকা পে করার কয়েক দিনের মধ্যে রেজিট্রেশন কমপ্লিট হওয়ার মেইল পাওয়া যায়। ঐ মেইলে ব্রিটিশ কাউন্সিলের অফিশিয়াল কিছু রিসোর্সের এক্সেস ও পাওয়া যায়।

আমার IELTS এক্সাম ছিল ২৯ তারিখে। আমি প্রায় দেড় মাস আগে রেজিট্রেশন করি। তো অনেক দিন হয়ে যাওয়ার পর ও যখন পরীক্ষা কোথায় হবে এসব নিয়ে কোন মেইল পেলাম না, আমি ব্রিটিশ কাউন্সিল ঢাকার অফিসে ফোন দেই। ফোন নাম্বার এবং এড্রেস রেজিট্রেশন করলে মেইলে এবং ইনফরমেশন পেইজে দেখায়। ফোন করার পর ওরা জানায় ওরা এখনো এক্সাম লোকেশন এবং সময় সম্পর্কিত তথ্য কাউকে পাঠানো শুরু করেনি। পরীক্ষার কিছুদিন আগে তা মেইল করা হয়। আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে সরাসরি তাদের অফিসে গিয়ে কথা বলতে পারেন অথবা কল সেন্টারে ফোন করেও জানতে পারেন।

  • Address: 5 Fuller Road, Dhaka, 1000
  • Telephone: 09666773377

২১ তারিখে আমি মেইল পাই। স্পিকিং সেকশনের জন্য ২৪ তারিখে ১১.৩০ এ Wings Learning Centre এ উপস্থিত থাকতে বলছে। এটা হচ্ছে ধানমন্ডির জিগাতলায়। ১২ টায় এক্সাম। লিসিনিং, রিডিং এবং রাইটিং মডিউল এর এক্সাম হচ্ছে ২৯ তারিখে। ১২টা, একই সেন্টারে।

স্পিকিং টেস্ট

স্পিকিং টেস্ট দেওয়ার জন্য আমি সাড়ে এগারোটার আগেই সেন্টারে উপস্থিত থাকি। ঐখানে যাওয়ার পর মানিব্যাগ, মোবাইল, ঘড়ি এসব জমা নিল। এরপর ফিঙ্গার প্রিন্ট নিল এবং ছবি তুলল। এরপর যে রুমে এক্সাম হবে, সেই ফ্লোরে যেতে বলল। ঐখানে আমার মত আরো দুই একজন ওয়েট করছিল স্পিকিং টেস্ট দেওয়ার জন্য। একজনের পর একজন করে টেস্ট দেওয়ার জন্য গেলো। একই সাথে ভিন্ন ভিন্ন রুমে কয়েকজনের টেস্ট এক সাথে নেওয়া হয়।

আমার এক্সাম নিয়েছিল মাঝ বয়সী একজন। ব্রিটিশ একসেন্টে আমার সাথে কথা বলেছিল। মাঝে মাঝে একটু পেছনে গিয়ে বা একটু আস্তে কথা বলছিল যা বুঝতে কষ্ট হয়েছিল। আমি জানি না অন্যরা কিভাবে কথা বলে বা প্রশ্ন করে। মাঝে মাঝে মনে হয়েছিল শার্লকে বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচ আরেকটু স্পষ্ট ভাবে কথা বলে!

স্পিকিং সেকশনের সব প্রশ্নই আপনার কমন পড়বে। আপনি যা জানেন, সে সব নিয়েই জিজ্ঞেস করবে। নিজে কোথায় থাকেন, কি করেন, কি পছন্দ, কি খান, কেন খান, কে আপনার প্রিয় এসব প্রশ্নের উত্তর গুলো ভালো ভাবে আগে থেকে নিজে নিজে প্র্যাকটিস করে গেলে এক্সামে ভালো করা যাবে। স্পিকিং সেকশনে কি ধরনের প্রশ্ন আসবে ঐ গুলো লিখে সার্চ করলেই অনেক গুলো প্রশ্ন পাওয়া যাবে। ঐ খান থেকে অল্প কিছু প্র্যাকটিস করে গেলেই স্পিকিং এ ভালো করা যাবে। এছাড়া ইউটিউবে অফিশিয়াল স্পিকিং কিভাবে নেওয়া হয়, তার উপর অনেক গুলো ভিডিও রয়েছে। অফিশিয়াল ভিডিও রয়েছে অনেক। ঐ গুলো দেখলে আইডিয়া হবে কিভাবে এক্সামটা নিবে। ১৫ মিনিটের মধ্যেই এক্সাম শেষ হয়ে যাবে।

স্পিকিং টেস্ট সাধারণত মেইন টেস্টের কয়েক দিন আগে বা পরে হয়।

রিডিং, লিসিং এবং রাইটিং টেস্ট

আমার বাকি মডিউল গুলোর টেস্ট ছিল ২৯ তারিখে। যে তারিখ আমি সিলেক্ট করেছি। একই সেন্টার। ১২টায় এক্সাম। যেতে বলেছে ১১.৩০ এর মধ্যে। সময় মত গেলাম। স্পিকিং টেস্টের দিন অল্প কয়েক জন ক্যান্ডিডেট দেখলেও আজ দেখলাম অনেক অনেক ক্যান্ডিডেট। সবার মোবাইল, মানিব্যাগ, ব্যাগ ইত্যাদি কালেক্ট করল। রোল অনুযায়ী কে কোন ফ্লোরে যে হবে, তা লেখা থাকে। এছাড়া ওরা নিজেরাই ডেকে নিয়ে যাবে আপনাকে সময় মত।

আমাদের এক্সাম ১২টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয় প্রায় ১টার দিকে। শেষ হতে হতে ৪টা। এক্সাম দেওয়ার জন্য পেন্সিল বা কোন কিছুই নিয়ে যেতে হয় না। পেন্সিল, কলম, সার্ফনার, ইরেজার সবই ওরা ডেস্কে রেখে দেয়। পুরা এক্সাম পেন্সিল দিয়েই দেওয়া যায়। কলম ব্যবহার করতে হয় না। প্রথমে লিসিং এর এক্সাম নেওয়া হয়। হেডফোন টেস্ট করার জন্য কয়েকবার অডিও চালিয়ে দেখা হয়। ওয়ারলেস হেডফোন। ভালোই বলা যায়। লিসিং এর পর রিডিং এরপর রাইটিং।

পরীক্ষা শেষে বলবে কবে স্কোর জানা যাবে।  সাধারণত ১০-১৫ দিন সময় নেয় স্কোর জানানোর জন্য।

এর আগে আমি একবার TOEFL এক্সাম দেই। আমার কাছে মনে হয়েছে IELTS থেকে TOEFL এ স্কোর তোলা সহজ। TOEFL এ পুরোটাই হচ্ছে কম্পিউটারাইজড। ঝামেলাও কম মনে হয়েছে আমার কাছে। বেশির ভাগ হচ্ছে Multiple choose questions। সহজে দেওয়া যায়। IELTS রাইটিং সেকশন সহ সব কিছু হাতে লিখতে হয়। রিডিং এবং লিসিং সেকশনে কোন বানান বা গ্রামার ভুল হওয়া মানে ঐটা ভুল উত্তর। এসব কারণে আমার কাছে মনে হয়েছে TOEFL এ স্কোর তোলা সহজ। আমার মত যাদের হাতের লেখা খারাপ, তাদের জন্য TOEFL বেটার অপশন 😛

TOEFL নিয়ে এর আগে লিখেছি একটা পোস্টে। IELTS প্রিপারেশনের জন্য ইউটিউবে বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচুর ভিডিও রয়েছে। এছাড়া ফেসবুকেও কিছু গ্রুপ রয়েছে। রয়েছে দারুণ কিছু অ্যান্ড্রয়েড বা আইওএস অ্যাপ। সার্চ করলেই পাওয়া যাবে।  পরীক্ষা সম্পর্কে জানার পর বেস্ট প্র্যাকটিস হচ্ছে নিয়মিত টেস্ট দেওয়া। টেস্ট দিতে দিতেই স্কিল অনেক বাড়বে। মক টেস্ট দেওয়ার জন্য দারুণ একটা ওয়েব সাইট হচ্ছে http://ieltsonlinetests.com এখানে মক টেস্ট দেওয়া যাবে। নিজের স্কোর দেখা যাবে। প্রোগ্রেস ও দেখা যাবে। এই তো। শুভ কামনা আপনার টেস্টের জন্য 🙂

2 thoughts on “IELTS এক্সামের প্রস্তুতি এবং আমার এক্সাম অভিজ্ঞতা”

  1. We have developed a web application to integrate online learning environments. It is accessible not only to our students but also to IELTS candidates all over the world. By using this application candidates can take IELTS tests, check their band scores, learn from their mistakes and get useful tips and advice from some of our highly experienced instructors.

    Reply

Leave a Reply