বিদেশে উচ্চ শিক্ষার প্রস্তুতি।

বিদেশের কলেজ বা ইউনিভার্সিটি গুলোতে এডমিশন নেওয়ার জন্য কিছু Standardized Test দিতে হয়। যেমন IELTS, TOEFL, GRE, GMAT, SAT, GED etc.

যেমন কেউ যদি US এর কোন ইউনিভার্সিটিতে আন্ডারগ্র্যাজুয়েশন এর জন্য ভর্তি হতে তার জন্য তাকে TOEFL বা IELTS এবং SAT এক্সাম দিতে হবে। এবং ভর্তির আবেদনের সাথে স্কোর গুলো পাঠাতে হবে। TOEFL বা IELTS হচ্ছে ইংরেজী দক্ষতা যাচাই এর জন্য। আর SAT হচ্ছে বিষয় ভিত্তিক জ্ঞান যাচাই এর জন্য।

আবার কেউ যদি MSc বা PhD করতে চায়, তাহলে তাকে TOEFL বা IELTS স্কোরের পাশা পাশি GRE অথবা GMAT স্কোর পাঠাতে হবে। GRE হচ্ছে সাইন্স এবং আর্টস এর বিষয় গুলো নিয়ে পড়া লেখার জন্য। আর GMAT হচ্ছে বিজনেস সাবজেক্ট গুলো নিয়ে পড়ার জন্য।

এক একটা ইউনিভার্সিটিতে এক এক ধরনের রিকোয়ারম্যান্ট। মিনিমাম একটা স্কোর থাকতে হয় Standardized Test গুলোর।

USA এর ইউনিভার্সিটি গুলোতে পড়ালেখার খরচ যথেষ্ট বেশি। স্কলারশিপ ছাড়া পড়তে যাওয়া মোটামুটি অসম্ভব বলা যায়। আর স্কলারশিপ পেতে হলে Standardized Test গুলোতে ভালো স্কোর থাকতে হয়। সবাই বলে একাডেমিক স্কোর গুলো থেকেও এই Standardized Test গুলোর স্কোর বেশি প্রাধান্য পায়।

এই টেস্ট গুলো কিভাবে দিতে হয়, কি কি আসতে পারে, এসব সম্পর্কে যে যত ভালো করে জানে, সে তত ভালো স্কোর করতে পারে। প্র্যাকটিসের ব্যপার। আর একটু আধটু পড়ালেখা। আমাদের ন্যাটিভ ল্যাঙ্গুয়েজ ইংরেজী না হওয়াতে TOEFL বা IELTS টেস্টে অনেকেই খারাপ করে। তার কারণ যথেষ্ট প্র্যাকটিসের অভাব। এমন না যে এখানে অনেক কঠিন কঠিন ইংরেজী জানতে হয়। সহজ ইংরেজী, তবে বুদ্ধি খাটাতে হয়। কোন প্রশ্ন দ্রুত বুঝতে পারা, ঐভাবে উত্তর দেওয়া, এসব। তাছাড়া ইংরেজী স্পিকিং টেস্ট ও যেহেতু করা হয়, তাই কিভাবে ইংরেজীতে কথা বলা যায়, তাও জানতে হয়।

Saifur’s, GRE center সহ অনেক গুলো ইন্সটিটিউটে এ পরীক্ষা গুলো কিভাবে দিতে হয়, কিভাবে প্রিপারেশন নিতে হয় এসব সম্পর্কে জানায়। অনেক গুলো বই, লেকচারশিট সরবরাহ করে। বাকিটা নিজে নিজে শিখতে হয়। নিজে নিজে প্র্যাকটিস করতে হয়।আর পরীক্ষার প্রস্তুতি হিসেবে কিছু প্রিপারেশন টেস্ট দেওয়ার সুযোগ করে দেয়। যেন মূল পরীক্ষা কিভাবে দিতে হয়, মূল পরীক্ষার এনভারনম্যন্ট সম্পর্কে জানতে পারা যায়। তবে নির্দিষ্ট পরিমান এক্সাম দেওয়ার সুযোগ দেয়। এরপর প্রস্তুতি মূলক এক্সাম দিতে হলে নির্দিষ্ট পরিমান ফি দিতে হয়।

অ্যামেরিকান সেন্টার হচ্ছে অ্যামেরিকার সরকার পরিচালিত একটা প্রতিষ্ঠান। যারা USA তে পড়তে যেতে ইচ্ছুক, তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে। অনেক গুলো সেমিনার, ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। কিভাবে USA তে পড়তে যাওয়া যায়, কিভাবে এডমিশনের জন্য প্রস্ততি নিতে হয় এসবের উপর। এসব ইভেন্ট কখন হয়, সে গুলো সম্পর্কে জানা যাবে U.S. Embassy-Dhaka এর ওয়েবসাইটে অথবা ফেসবুক পেইজে। 
তাছাড়া এখানে অনেক গুলো বই রয়েছে। রয়েছে ম্যাগাজিন, মুভির ডিভিডি। সেরা বই, ম্যাগাজিন গুলো ঐখানে গিয়ে যে কেউই পড়তে পারে।কম্পিউটার এক্সেস সহ অনেক কিছু। এগুলোর জন্য মেম্বার হতে হয় না। যে কেউই এমেরিকান সেন্টারে গিয়ে বই, ম্যাগাজিন, পত্রিকা পড়তে পারবে। যে কোন সেমিনার বা ওয়ার্কশপে অংশ গ্রহন করতে পারেব। মেম্বার হলে বাড়তি কিছু সুবিধে পাওয়া যাবেঃ

  • বই বাসায় নিয়ে আসার সুযোগ।
  • ডিভিডি বাসায় নিয়ে আসার সুযোগ।
  • অনলাইন ডাটাবেজে এক্সেস করার সুযোগ। যেখানে প্রচুর ইবুক রয়েছে।
  • ল্যাপটপ বা মোবাইলের জন্য ওয়াইফাই সুবিধে।
  • IELTS, TOEFL, GRE, GMAT, SAT, GED এগুলো প্র্যাকটিস টেস্ট দেওয়ার সুযোগ।ইত্যাদি।

মেম্বার হতে মাত্র ৫০০টাকা লাগে। একটা পাসপোর্ট সাইজ ছবি লাগে। আর কিছু না। ঐখানে গিয়ে একটা মেম্বারশিপ ফরম পূরণ করে এরপর জমা দিলেই হবে। কিছু দিনের মধ্যে মেম্বারশিপ কার্ড দিয়ে দিবে। অ্যামেরিকান সেন্টার হচ্ছে ঢাকার নতুন বাজারের কাছা কাছি। এড্রেসঃ

The American Center
Embassy of the United States of America
Plot No-1, Progati Sharani, J-Block
Baridhara Residential Area, Dhaka
Phone: (880) (2) 5566-2000

এখানে প্রতি সপ্তাহে ইংরেজী প্র্যাকটিস সেশন হয়। ইংরেজীতে দক্ষতার জন্য যেটা দারুণ কাজে দেয়। রয়েছে সেরা মুভি গুলো দেখার সুবিধে।

অ্যামেরিকান সেন্টারের মত এমন সুবিধে পাওয়া যায় EMK Center, ধানমন্ডিতে।

বিদেশে পড়ালেখা করতে যাওয়া নিয়ে ফেসবুকে দারুণ কিছু গ্রুপ রয়েছে. গ্রুপ গুলোর ফাইল সেকশনে অনেক গুলো ডকুমেন্ট রয়েছে। সেগুলো পড়লে দারুণ কাজে আসবে। এছাড়া এরকম রিলেটেড অনেক গ্রুপ রয়েছে। রয়েছে অনেক ওয়েবসাইট। একটু খুজলেই পাওয়া যাবে।

 

Standardized Test গুলো ETS নামক একটা প্রতিষ্ঠানের দারা নিয়ন্ত্রিত হয়। IELTS, TOEFL, GRE, GMAT, SAT ইত্যাদির যে কোন এক্সাম দিতে হলে তাদের ওয়েব সাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট পরিমান ফি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। কবে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক, কোন সেন্টারে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক এসব তথ্য দিয়ে রেজিট্রেশন করতে হয়। ওয়েবসাইটের ঠিকানাঃ

http://www.ets.org/

প্রত্যেকটা এক্সামের জন্য বিস্তারিত অনেক তথ্য রয়েছে ওদের ওয়েব সাইটে। রয়েছে অনেক ফ্রি এবং প্রিমিয়াম রিসোর্স।যে টেস্টটি দিতে ইচ্ছুক, সে সম্পর্কে সবার আগে ETS এর ওয়েব সাইটে জেনে নেওয়া দরকার। এরপর দরকার প্রিপারেশন।ইউটিউবে অনেক গুলো সুন্দর সুন্দর ভিডিও রয়েছে। টেস্ট গুলোর প্রিপারেশন নেওয়ার জন্য কোন ইন্সটিটিউটে ভর্তি হয়ওয়ার আগে একটু অনলাইন ঘেটে জেনে নিলে দারুণ হবে। এমনকি অন্য কোন ট্রেনিং সেন্টার ও লাগবে না। বিদেশে পড়তে যেতে ইচ্ছুক হলে ঘেটে দেখতে পারেন এসব। শুভ কামনা, সবার জন্য 🙂

3 thoughts on “বিদেশে উচ্চ শিক্ষার প্রস্তুতি।”

  1. অনেক উপকারী একটা পোষ্ট ভাই। ধন্যবাদ ভাই এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট লিখার জন্য।

    Reply

Leave a Reply