ব্লগ এবং ফেসবুক
ফেসবুক একটা সেন্ট্রালাইজড সোশাল মিডিয়া হলেও মানুষকে সেন্ট্রালাইজড করে নাই, উল্টো ডিসেন্ট্রালাইজড করেছে। আমাদের লিস্টের বাহিরের কারো সুন্দর কোন কন্টেন্ট খুব কম সময়ে দেখি। অনেক সুন্দর কন্টেন্ট এই ডিসেন্ট্রালাইজড সিস্টেমের কারণে ঢাকা পড়ে যায়।
ব্লগিং যুগে ফিরে যাই। ভালো ভালো কন্টেন্ট নিয়মিত প্রকাশ হত। গার্বেজ যে প্রকাশ হতো না, তেমন না। কিন্তু ব্লগের হোম পেইজে গেলে ভালো কন্টেন পাওয়া যেত শিউর। লেখকদের মধ্যে একটা প্রতিযোগিতা ছিল। কারণ ভালো লেখা হলে ফিচার্ড হতো।
ফেসবুক সব দখল করে নিয়েছে। ব্লগ ছেড়ে ফেসবুক মুখি হয়েছে সব লেখক। ব্লগের কল্যাণে যে সব অডিয়েন্স পেয়েছে, অনেকে সে অডিয়েন্সের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। নতুন অডিয়েন্স আর তৈরি হয় নি। কারণ ততদিনে ফেসবুক তাদের পলিসি পরিবর্তন করে ফেলেছে। কোন পোস্ট সবার কাছে যাবে, ফেসবুক নিজেও জানে না। হুট করে একটা পোস্ট ভাইরাল হবে। কিন্তু ভাইরাল না হলে সঠিক অডিয়েন্স পাবে না। টাইমলাইনে হারিয়ে যায় কন্টেন্ট গুলো।
ব্লগে সব কিছু সাজানো ছিল। কারো একটা লেখা ভাল লাগলে অন্য লেখা গুলো পড়ার একটা আগ্রহ জাগত। তার প্রোফাইলে গেলে পাওয়া যেত। ফেসবুকেও যে পাওয়া যায় না, তেমন না। কিন্তু এত শত পোস্টের মধ্যে লেখা গুলো বেচে বেচে পড়ার মত সময় এবং শক্তি কার আছে?
ব্লগ আমাদের জন্য আশির্বাদ ছিল তা এখন বুঝতে পারছি। ভাইরাল হওয়ার লক্ষ্যে হয়তো অনেকে লিখে যায়। ভিডিও তৈরি করে যায়। কিন্তু কয়জন সবার কাছে পোঁছাতে পারে? টাইমলাইনে হারিয়ে যায় বাকিরা।
লেখকের পাসফেক্টিভ থেকে বললাম এতক্ষণ। পাঠকের পাসফেক্টিভ থেকে এবার বলি। আগের মত ভালো কন্টেন্ট পড়াও হচ্ছে না। ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতে দুই একটা লেখা পাই, যেগুলো পড়ার মত। এই দুই একটা লেখার জন্য কত যে স্ক্রল করতে হয়। ব্লগে কত সহজ। নিজের পছন্দের টপিক্স নিয়ে সহজে পড়তে পারতাম। কিওয়ার্ড অনুযায়ী সব ভাগ করা ছিল।
এখন ব্লগ আছে ঠিকই, ব্লগে লেখক নাই। পাঠক নাই। ফেসবুক সব খেয়ে ফেলছে। লেখক খেয়ে ফেলছে, পাঠক খেয়ে ফেলছে।