বিল গেটসকে এডমায়ার করার অনেক গুলো কারণ আছে। admire ইংরেজিতে যে অর্থে ব্যবহার হয়, বাংলায় এর অর্থ করলে এর সঠিক ভাব প্রকাশ হয় না। যাই হোক, বর্তমান আমরা যে ডিজিটাল জগতে বাস করি, এর পেছনে বিল গেটসের এর অবদান অনেক। ওপেন সোর্স ওয়ারিয়ররা আবার আমাকে মারতে আইসেন না। সে ব্যবসায়ী, ব্যবসা করলেও পৃথিবীকে অনেক অনেক বছর এগিয়ে নিয়ে এসেছে। ফ্রি জিনিস হলে এত বেশি ডেভেলপমেন্ট হতো না। লেখার উদ্দেশ্য যদিও অন্য কিছু।
বিল গেটসের মত টানা অনেক বছর বিশ্বের সেরা ধনী এখন পর্যন্ত কেউ হতে পারেনি। এত ধন সম্পদ। তো তার বয়স হয়ে এসেছে। মৃত্যু তো অনিশ্চিত। এরপরও বয়সের সাথে একটা সম্পর্ক রয়েছে। মারা যাওয়ার পর কি হবে? প্রথমে অধর্ম দিয়েই শুরু করি। সে মারা যাওয়ার সাথে সাথেই তার ধন সম্পদের সাথে তার সকল সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে। থেকে যাবে শুধু নামটা। সে যা যা করেছে, তার ইতিহাস। কিন্তু কোন ধন সম্পদই তো তার আর কোন কাজে আসবে না, তার কোন ধন সম্পদ তার নামেও থাকবে না।
এবার ধর্মের কথা বলি। নিজ ধর্ম দিয়েই বলি। এত ধন সম্পদ রেখে মারা গেলো, কিন্তু আখেরাতে তো তা নিয়ে যেতে পারল না। যা যাবে, তা হচ্ছে তার ভালো কাজ। আল্লাহর সামনে তো পৃথিবীর ধন সম্পদ কোন কাজেই আসবে না। কারণ পৃথিবীর কারেন্সি এবং আখেরাতের কারেন্সি ভিন্ন। বিচারক আল্লাহ, উনিই বিচার করবেন কে আখেরাতের কারেন্সিতে বড়লোক।
এই যে দেখেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ফজরের দুই রাকাআত সুন্নাত নামাজ দুনিয়া এবং এর মধ্যকার সব কিছুর চেয়েও উত্তম। অর্থাৎ বিলগেটস থেকেও বেশি ধনি আখেরাতের কারেন্সিতে।
চিন্তা করলাম যেহেতু ফজরের দুই রাকাত সুন্নাহ পড়ে ফেলছি, তাহলে তো আমি ধনী। এছাড়া যদি বাকি সব নামাজ পড়তে পারি, আখেরাতে আমাকে ঠেকায় কে! এবার আল্লাহর হিসেবে আসেন। আল্লাহ কত কিছু নিষেধ করল। হারাম হালাল সেট করল। এগুলো সব কিছু কি মানতে পারি? পারি না তো। নামাজ ক্বাযা হলো, ফজরের সুন্নাহ পড়ে যে সওয়াব পেয়েছি, এমন কয়েকটা সুন্নতের সওয়াব দিয়েও তো তা পূরণ হবে না। কারণ সুন্নত থেকে ফরজের গুরুত্ব বেশি। এরপর কারো হক মেরেছি! কতো মানুষের উপকার করেছি, হয়তো দেখা গেলো একজনের হক পরিশোধ করতেই সব চলে গেলো। গীবত তো সারাদিনই করা হয়। গেলো আরো কত গুলো আমল নষ্ট হয়ে। কারণ যার গীবত করেছি, আমার আমলনামা থেকে সওয়াব তার আমলনামায় ট্রান্সফার হবে। বিনা কারণে নন মাহরামের সাথে কথা বলছি, গেছে আরো কত গুলো ভালো কাজের সওয়াব কাটা।
সদকায়ে জারিয়া করতে পেরে কত খুশি। গুনাহে জারিয়া গুলোর কথা ভুলে যাই।
পর্দার লঙ্গন করে একটা ছবি শেয়ার করেছি, যত মানুষ দেখছে এবং দেখবে তদিন নিজের আমল নামায় গুনাহ লেখা হবে। ভালো আমল গুলো থেকে কাটা যাবে সওয়াব গুলো। কাটাছেড়া করার পর কি থাকবে চিন্তা করতে পারি? এভাবে সব হিসেব করার পর চিন্তা করি বিল গেটসের মত সম্পদ থেকেও তো আখেরাতে রিক্ত হস্তে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে হবে। তখন তো উনার দয়া ছাড়া আর কোন পথ থাকবে না। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুক।
ফজরের দুই রাকাত সুন্নত দুনিয়া ও দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু আছে তার চেয়ে উত্তম। এবার চিন্তা করেন ফজরের ফরজ দুই রাকাত নামাজের প্রতিদান কেমন হবে? এরপর চিন্তা করেন ঐ দুই রাকাত যদি মসজিদে গিয়ে পড়া যায়, তার প্রতিদান কেমন হবে?
কেউ কেউ খেলা দেখার জন্য অনেকেই জেগে ছিলেন। অনেকেই এলার্ম দিয়ে রেখেছেন সকালে উঠবেন চিন্তা করে। উঠেছেনও, উঠে খেলাও দেখেছেন। এতে সাময়িক আনন্দ ছাড়া আর কোন লাভ হয়নি। ফজরের নামাজের জন্য কতদিন এমন কষ্ট করেছেন?
আহা, নিছক আনন্দের জন্য কত ত্যাগ। তার একটুও যদি আল্লাহর হুকুম পালনের জন্য করতাম। আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুক। বিচারের দিন একে একে সবাই মুকুট পরে জান্নাতের দিকে যাবে, আর কিছু মানুষকে ছুড়ে ফেলবে ভয়ংকরতম জাহান্নামে। যার ফুয়েল হচ্ছে মানুষ এবং পাথর। চিন্তা করা যায় কতটা ভয়ংকর তা? জাহান্নামের ফুয়েল না হওয়ার জন্য সর্বোচ চেষ্টা করা উচিত আমাদের। আর আমরা সে চেষ্টাটুকু করি ভুল যায়গায়। খেলা দেখা কোন অপরাধ নয়। বিনোদনেরও দরকার আছে। এতটুকু চিন্তা করা উচিত যে যেটা ফরজ, ঐখানে অন্তত সিমিলার এফোর্ট দিচ্ছি কিনা।