একদিন তো মরেই যাবো চিন্তা করলে আইনেস্টাইন, স্টিভেন হকিং বা স্টিভ জবসের মত লোক গুলোকে আমরা পেতাম না। তারাও তো মরেই গিয়েছে। মরে গিয়েও বেঁচে রয়েছে। বেঁচে থাকবে। আমরা একদিন তো মরেই যাবো চিন্তা করতে করতে মরে যাবো। পঁচে যাবো। তারা তখনো বেঁচে থাকবে।
পৃথিবীতে অমর না হতে চাইলেও সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকার জন্যই আমাদের নিজের অপছন্দের অনেক কাজই করতে হয়। খুব ভোরে ক্লাস করতে কার ইচ্ছে করে? কারো না। এরপরও করতে হয়। এই ছোট্ট স্যাক্রিফাইস গুলোই পরবর্তীতে আমাদের সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে।
প্রতিদিন এলার্মের ডাক শুনে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে জ্যামের মধ্যে ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে অফিসে যেতেও কত কষ্ট। প্রতিদিনই তো মনে হয়, অফিস না করলেই কি হয় না? কিন্তু মাস শেষের ঐ টাকাটার যে ভীষণ দরকার। কত কিছুই নির্ভর করে ঐ টাকাটার উপর। মরে যাবো চিন্তা করে বসে থাকলে অফিস ও করা হবে না। মাস শেষের টাকাটাও পাওয়া হবে না। একটু একটু করে টাকা জমানোও হবে না। নিজের সুন্দর কোন ইচ্ছেও পূরণ হবে না।
প্রতিটা ব্যবসাতেই কত বড় রিক্স নিতে হয়। নিজের সব কিছু বাজি রেখে প্রতিটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এত চিন্তা মাথায় নিয়ে কি হবে, একদিন তো মরেই যাবো চিন্তা করলে আজকের প্রাণ কোম্পানির মত মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি বাংলাদেশ থেকে হয়তো হতো না। বিড়ির পুরিয়া থেকে এত বিশাল আকিজ গ্রুপটাও তৈরি হতো না।
কত পাগল হলে নতুন কিছুর পেছনে মানুষ গুলো নিজের জীবন দিয়ে দেয়। নতুন কিছু আবিষ্কারের পেছনে সময় দিতে গিয়ে পৃথিবীর বাকি সব কিছুর মায়া ত্যাগ করে। ওরাও তো চিৎ হয়ে শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে চিন্তা করতে পারত, এত কিছু করে কি হবে, একদিন তো মরেই যাবো। অন্য মেয়েরা যেখানে স্নো পাউডার নিয়ে মুখ ঘসা মাঝা করত সেখানে মাদাম কুরি তেজস্ক্রি পদার্থ নিয়ে গবেষনা করত। সেও তো ভাবতে পারত কি হবে এত কিছু করে, একদিন তো মরেই যাবো। চিন্তা করেনি। আর ঐ রকম চিন্তা না করার কারণেই বেঁচে গিয়েছে। মরে গিয়েও বেঁচে রয়েছে এই পৃথিবীর বুকে। বেঁচে থাকবে।
একদিন তো মরেই যাবেন। যাওয়ার আগে পৃথিবীর বুকে নিজের পায়ের ছাপ রেখে যেতে ইচ্ছে করে না? একটুও না? একদিন তো মরেই যাবো। মরে যাওয়ার আগেই যেন মরে না যাই। মরে যাওয়ার আগে বেঁচে থাকি।