পৃথিবীটা যখন প্রায় বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছিল, তখন কিছু কিছু মানুষ মহাকাশ স্টেশন গুলোতে বসবাস করা শুরু করল। কারণ তখনো পৃথিবীর মত বসবাসের যোগ্য গ্রহ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। যেগুলো পৃথিবীর মত বসবাসের যোগ্য, সেগুলোতে পৌঁছাতে পৌঁছাতেই মানুষের জীবন শেষ হয়ে যায়। তাই কেউই অত দূরের পথ পাড়ি দিতে চাইতো না। আর মহাকাশ স্টেশন গুলোতে শুধু মাত্র যাদের অনেক টাকা পয়সা তারাই এভাবে থাকতে পারত। বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর উপর তখনো আশা ছেড়ে দেয় নি। তারা মহাবিশ্বে মানুষের অস্তিত্ব বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করে যাচ্ছিল।
বিজ্ঞানীরা তত দিনে মানুষের DNA সম্পূর্ণ ডিকোড করতে পেরেছে। যে কারো DNA কেই কপি করা যাচ্ছিল। DNA তেই একটা মানুষের সকল গুণ এনকোড করা থাকে।
এর আগে বিজ্ঞানীরা মানুষের শরীরের ভিন্ন ভিন্ন অঙ্গ তৈরি করতে পারত। কারো কোন অঙ্গ নষ্ট হলে ল্যাবে তৈরি করা অঙ্গ দিয়ে প্রতিস্থাপন করে দিত। এরপর তারা চেষ্টা করল সম্পুর্ণ মানুষের শরীর তৈরি করা যায় কিনা। এক সময় তাও পারল। যে কারো DNA সিকোয়েন্স পড়ে তা দিয়ে মানুষের শরীর তৈরি করলে হুবুহু একই রকম একটা মানুষ তৈরি হয়ে যেতো। শরীর তৈরি হলেও আরেকটা সমস্যা থেকে যেতো। জ্ঞান, বুদ্ধি।
মানুষের মাথায় কম্পিউটারের মাধ্যমে জ্ঞান প্রবেশ করানোর সিস্টেম অনেক আগেই আবিষ্কার হয়েছিল। এরপর আবিষ্কার হয়েছিল একটা মানুষের মাথার সব জ্ঞান স্টোর করে রাখার পদ্ধতি। DNA সিকোয়েন্স পড়ে এবং জ্ঞান বুদ্ধি স্টোর করে বিজ্ঞানীরা অনেক চেষ্টা পর একটা মানুষকে সম্পুর্ণ কপি করতে সক্ষম হয়েছে।
এখন একটা মানুষ তৈরি করতে দুইটা জিনিস দরকার। একটা হচ্ছে DNA সিকোয়েন্স। এবং আরেকটা হচ্ছে মস্তিষ্কের সকল জ্ঞান। এ দুইটা তথ্যই আলোর বেগে আধান প্রধান করা যায়। আর এ দুইটা তথ্য ব্যবহার করেই বিজ্ঞানীরা অনেক দূরের পৃথিবী সদৃশ গ্রহ গুলোতে মানুষ পাঠানো শুরু করেছে।
আসলে মানুষ নতুন করে পাঠানো হয় না। একটা মানুষের DNA এবং মস্তিষ্কের জ্ঞান রিড করে মানুষটি যে গ্রহে যেতে চায়, ঐ গ্রহে পাঠিয়ে দেয়। ঐ গ্রহে মানুষের শরীর তৈরি করার কারখানা রয়েছে। কারখানাতে DNA সিকোয়েন্স থেকে হুবুহু একটা নতুন মানুষ তৈরি করে। এবং পরে মস্তিষ্কের সকল জ্ঞান লোড করে দেয়। এর ফলে হুবুহু একই রকম একটা মানুষ তৈরি হয়ে যায়। পুরাতন মানুষটাকে পরে ডিসএবল করে কোল্ড স্টোরেজে রেখে দেয়। সিস্টেমটা নতুন কম্পিউটার কেনার পর পুরাতন কম্পিউটারের ডেটা নতুনটাতে ট্রান্সফার করে পুরাতনটাকে ফেলে দেওয়ার মত।
এভাবে অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন গ্রহে চলে গিয়েছে। যারা খুব বেশি গরীব, তারা যেতে পারছে না। আর অল্প কিছু মানুষ রয়ে গিয়েছে পৃথিবীর প্রতি মায়ার কারণে। তেমন একটা মানুষ হচ্ছে ইভা। জঞ্জালে ভরা এ পৃথিবীটাকে সে প্রচণ্ড ভালোবাসে। আর এ ভালোবাসার কারণেই সে পৃথিবীটাকে ছেড়ে যেতে চাচ্ছে না।
ইভার ফ্যামিলির সবাই একে একে চলে গেলো। ইভাকে যত বলল, ইভা যেতে রাজি হলো না। পৃথিবীর প্রতি ভালবাসা থেকে এক সময় তার মনে হলো, ফ্যামিলি বন্ধন থেকেও পৃথিবীর প্রতি একটা মানুষের বন্ধন অনেক গভীর। এই বন্ধনের কারণেই ফ্যামিলি বন্ধন ছেড়ে সে একা একা এখন পৃথিবীতে থাকতে পারছে। সে বিশ্বাস করে পৃথিবীটা থেকে সব স্বার্থপর মানুষ গুলো চলে যাওয়ার কারণে আবার পৃথিবী সুন্দর হয়ে উঠবে। যে মানুষ গুলো এ পৃথিবীটাকে জঞ্জাল বানিয়েছে, এখন আর তারা নেই। আবার আস্তে আস্তে পৃথিবীটা সবুজ হয়ে উঠবে। ছোট বেলায় সবচেয়ে পুরাতন রোবটটা পৃথিবীর যেমন গল্প শুনাতো, তেমন সবুজ।
সাইন্স ফিকশনের গল্প গুলা সত্যি অসাধারণ
Osadharon!!
tnx…bro
valo laglo