ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া

ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসা বা যে কোন ভিসার ক্ষেত্রে প্রথমে অনলাইনে ফরম পূরণ করে নিতে হয়। ফরম পূরণ করার জন্য ভিজিট করতে হয় indianvisa-bangladesh.nic.in/visa/Registration। অনলাইন ভিসা এপ্লিকেশন ফরম পূরণ করার সময় এপ্লিকেশনটির ড্রাফট সেভ করে রাখা যায়। যেন কোন ভুল হলে পুনরায় এডিট করা যায়। এবং সময় নিয়ে পুরো এপ্লিকেশন পূরণ করা যায়। তবে অ্যাপ্লিকেশনের প্রথম পেইজ দ্বিতীয় বার এডিট করা যায় না। তাই প্রথম পেইজ একটু দেখে শুনে পূরণ করা ভালো। প্রথম পেইজ বলতে এই অংশটাঃ

 

জন্ম তারিখ, ইমেইল আইডি এসব সঠিক ভাবে এই পেইজে পূরণ করতে হবে। এরপর Continue তে ক্লিক করতে হবে। এরপরের পেইজে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে ফরমটি পূরণ করতে হবে। পরের পেইজে গেলে উপরের দিকে ফরমের একটা টেম্পোরারি আইডি দিবে। ঐ আইডিটি কোথাও সেভ করে রাখতে হবে। এই আইডি ব্যবহার করে পরবর্তীতে এপ্লিকেশনটি এডিট করা যাবে। যদি কোন কারণে এই পেইজের তথ্য গুলো ভুল ইনপুট দিয়ে থাকেন, তাহলে নতুন করে আরেকটা অ্যাপলিকেশন পূরণ করলেই ভালো হবে। ভুল হলে নতুন অ্যাপ্লিকেশন পূরণ করা যাবে। কোন সমস্যা হবে না।

  • ফরম পূরণ করার সময় সদ্য তোলা আপনার একটা ছবি লাগবে। ঐ ছবিটি আপলোড করতে হবে।
  • এর আগে ইন্ডিয়ায় গিয়ে থাকলে কোন হোটেলে থেকেছি, তার ইনফরমেশন চাইবে। এগুলো তো কেউ মনে রাখে না। এর জন্য একই পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। ম্যাপ থেকে কোন একটা হোটেলের ইনফরমেশন দিয়ে দিতে পারেন।
  • ফরম পূরণের সময় আপনি ইন্ডিয়ায় কোথায় থাকবেন, সে ইনফরমেশন দিতে হবে। তো গুগল ম্যাপে আপনি ইন্ডিয়ার কোথায় যাবে, সেখানের একটা হোটেলের ইনফরমেশন দিয়ে দিতে পারেন। রেফারেন্সেও সেই হোটেলের ইনফরমেশন দিয়ে দিতে পারেন।
  • দেশে কারো একজনের রেফারেন্স দিতে হবে। পরিচিত কারো নাম আর মোবাইল নাম্বার দিয়ে দিতে পারেন। ভাই, আংকেল বা যে কারো ইনফরমেশন হলেই হবে।
  • অবশ্যই অবশ্যই পাসপোর্টে আপনার তথ্য গুলো যেভাবে রয়েছে, ঠিক সে ভাবে তথ্য গুলো ইনপুট দিতে হবে। না হলে ভিসা সেন্টারে এপ্লিকেশন গ্রহণ করবে না।

ফরম পূরণ শেষে সাবমিট করার পর সব তথ্য আবার যাচাই করার সুযোগ দিবে। ভুল হলে কারেকশন করে নিতে পারবেন। সাবমিট করে দেওয়ার পর আর এডিট করার অপশন থাকবে না। সাবমিট করার পর এপ্লিকেশনের PDF জেনারেট করে দিবে। ঐ PDF প্রিন্ট করে এক কপি সদ্য তোলা 2*2 ইঞ্চি ছবি এটাচ করে নিতে হবে। স্ট্যাপলার করা যাবে না। গ্লু দিয়ে লাগাতে হবে ছবি। ইন্ডিয়ার ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য সম্ভবত ৮৪০ টাকা ফি লাগে। ঢাকার ক্ষেত্রে যমুনার সামনে ফি দেওয়া যায়। এছাড়া অনেক গুলো ট্রাভেল এজেন্সিও ফি জমা দিতে সাহায্য করে। যমুনার দ্বিতীয় তলায় অনেক ট্রাভেল এজেন্সি রয়েছে।   ফি জমা দিয়ে নিকটস্থ IVAC এ এপ্লিকেশন জমা দেওয়া যাবে।

 

বিকাশেও ইন্ডিয়ান ভিসা ফি জমা দেওয়া যায়। তার জন্য বিকাশ অ্যাপ থেকে পে বিল > অন্যান্য > Indian Visa Application Process Fee সিলেক্ট করতে হবে।

 

এরপর কোন IVAC এ অ্যাপলিকেশন জমা দিবেন, তা সিলেক্ট করে ওয়েব ফাইল নাম্বার এবং মোবাইল নাম্বার দিয়ে ফি জমা দিতে পারবেন।


মোবাইলে SMS আসবে। IVAC এ ঐ মেসেজ দেখানো লাগতে পারে। তাই মোবাইল সাথে রাখবেন।

 

এপ্লিকেশনের সাথে কিছু সাপোর্টিং ডকুমেন্ট লাগে। যেমনঃ

৪ নম্বরে বলা আছে ব্যাংক স্টেটমেন্ট অথবা ডলার এন্ডোর্সমেন্ট। তো ডলার এন্ড্রোর্সমেন্ট করলে ঐ পেইজের ফটোকপি দিতে পারেন।  ক্রেডিট কার্ড বা ডুয়েল কারেন্সি যদি পাসপোর্টে এন্ডোর্স করে নিয়ে থাকেন, তাহলে তা দিয়েও আবেদন করা যাবে। তবে সেই ক্ষেত্রে কার্ডের দুই পাশের ফটোকপি এপ্লিকেশনের সাথে দিতে হবে। যেটা আমার কাছে সিকিউরিটি রিস্ক মনে হয়। সেই ক্ষেত্রে ব্যাংক স্টেটমেন্টই সবচেয়ে সেইফ মনে হয়।

৫ নম্বরে রয়েছে পেশাগত প্রমাণপত্র। এখানে যারা চাকরি করেন, তাদের ক্ষেত্রে সাধারণত Non Objection Letter দিতে হয়। যারা বিজনেস করেন, তাদের ট্রেড লাইন্সের কপি দিতে পারেন। আমি ফ্রিল্যান্সিং করি। তো ব্যাসিস থেকে ফ্রিল্যান্সার সনদ পত্র নিয়েছি এক সময়। ঐটা সাথে দিয়েছি আমি। সরকারি ভাবেও ফ্রিল্যান্সার আইডি কার্ড দিয়ে থাকে। এছাড়া যদি ফ্রিল্যান্সার মার্কেট প্লেসে কারো প্রোফাইল থাকে, তাহলে ঐ প্রোফাইলের একটা স্ক্রিনশট দিয়েও আবেদন করতে পারবেন। এর আগে আমি আপওয়ার্ক প্রোফাইলের স্ক্রিনশট জমা দিয়েছি ভিসা করার সময়। ভিসা পেয়েছিও।

এখানে যে বিষয়টা উল্লেখ নেই, তা হচ্ছে  পূর্ববর্তী সর্বশেষ ইন্ডিয়ান ভিসা যদি থাকে, তার ফটোকপি দিতে হয়। 

এই ডকুমেন্ট গুলো উপরের সিরিয়াল অনুযায়ী সাজিয়ে দিতে হবে। আর কারো পুরাতন পাসপোর্ট থাকলে তা অবশ্যই যুক্ত করে দিতে হবে।

 

আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মেয়েদের ছবি তোলার সময় অবশ্যই কান দেখা যেতে হবে। কান না দেখা গেলে অ্যাপলিকেশন গ্রহণ করবে না।

 

আগে পুরো ফ্যামিলি থেকে একজন গিয়েই জমা দিতে পারত। এখন সবাইকে যেতে হয়। কারণ বায়োমেট্রিক নেয় সবার। তাই যারাই ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তাদের সবাইকে যেতে হবে।

 

ঢাকার ক্ষেত্রে এখন IVAC অফিস হচ্ছে যমুনা ফিউচার পার্কের গ্রাউন্ড ফ্লোরে। আবেদন গ্রহণ করার সিরিয়ালে দুপুর 1.30 পর্যন্ত দাঁড়ানো যায়। সকালের দিকে প্রচুর ভিড় থাকে। ১২-১টার দিকে একটু কম সিরিয়াল থাকে। আবার পাসপোর্ট কালেক্ট করার সময় হচ্ছে বিকেল ৩-৫টা। এই ক্ষেত্রেও ৩টার দিকে গেলে বিশাল সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। 4-5টার মধ্যে গেলে সিরিয়ালে না দাঁড়িয়েও পাসপোর্ট কালেক্ট করা যায়। ঢাকার বাহিরের IVAC সেন্টার সম্পর্কে আইডিয়া নেই আমার।

2 thoughts on “ইন্ডিয়ান ট্যুরিস্ট ভিসা আবেদনের প্রক্রিয়া”

  1. রিমোট জবের ক্ষেত্রে কি করবো। US based একটা স্টার্ট আপ এ আছি।

    Reply

Leave a Reply