সিয়াম তাদের সেস্পশীপে বসে তার বোন সিপুর জন্য অপেক্ষা করছে ।আজকের বিকালটা দুই ভাই বোন মিলে প্লুটো গ্রহে কাটাবে ।দুই ভাইবোন এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে । তাদেও স্পেসশীপটা .৫c বেগে চলতে পারে। এটা একটি লেটেস্ট মডেলের স্পেসশীপ । পথে কোন বাঁধা না থাকলে প্লুটে তে যেতে তাদের ১৫ মিনিটের বেশী সময় লাগবে না । ১০ মিনিট ধরে সিয়াম সেস্পশীপে বসে আছে সিপু এখনো আসেনি। হয় ব্যস্ত না হয় বিশ্রাম । তার কোন কিছুতেই অপেক্ষা করতে ভাল লাগে না ।
সে অপেক্ষা করতে করতে বিরক্ত হয়ে শেষে সেস্পশীপের গেমিং রুমে ঢুকল । এ রুমটি একটু বিশেষ ভাবে তৈরি । প্রোগ্রামিং গেমের যে গেমটি সিলেক্ট করবে কক্ষটা সে ভাবেই রূপান্তরিত হবে এবং গেমের সবগুলো চরিত্রই বাস্তব আকার ধারণ করবে। সে প্রতিপক্ষকে আগাত করলে প্রতিপক্ষও তাকে আগাত করবে । গুলি করলে রক্ত পাত হবে । ঘুষি দিলে নাক পাটবে । আবার রুমের বাহিরে আসলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
সে একটি গেম সিলেক্ট কওে সিপুর কথা ভাবতে ভাবতে খেলা শুরু করল । কেন যে মেয়েরা সব কাজে এত দেরি করে সে কিছুতেই ভাবতে পাওে না । সে যদিও নিজের প্রাণের চেয়ে সিপুকে বেশি ভালবাসে তবুও সিপুর এ দিকটি ভাল লাগে না । যে কোন যায়গায় যেতে সাজতে গোছাতে বেশী সময় নেয় ।
ওহ! তা বুকে একটি বুলেট এসে লাগল । তার এম্বুলেন্স ডাকা দরকার । সিপু এসে দরজায় নক করছে তা সে গেমিং রুম থেকে বের হয়ে গেল ।
তারা মহাকাশের দিকে রওনা হল । সিপুর ইচ্ছে সে মঙ্গল গ্রহে একটু নামবে। মঙ্গলের আকাশ কি সুন্দর । লাল রং এর আবা চারিদিকে ছড়িয়ে আছে।যদিও পৃথিবীর তুলনায় কিছুই না । তবুও সে একটু গিয়ে দেখে আসবে।
সিয়াম তার বোনের কথায় মঙ্গলে ল্যান্ড করল । সে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল ”মঙ্গলের আকাশ সত্যিই সুন্দর” । সে সিপুকে বলল চল এবার শনি গ্রহে যাই । ঐ খানে একটু গুরে তার পর প্লুটো গ্রহে যাব । শনির বলয় গুলো ও খুব সুন্দর । দেখতে ঠিক পরমাণুর চারদিকের ইলেকট্রনের মতো ।
যাই হোক তারা স্পেশশীপের মধ্যে ঢুকবে এমন সময় একটা কণ্ঠ শোন গেল । হ্যান্ডস আপ! নড়বার চেষ্টা করলে মহাশূন্য থেকে হারিয়ে যাবে ।
সে দেখল দু জন লোকের কাছে দুটি লেজার গান , তাদের দু ভাই বোনের দিকে তাক করানো । সিয়াম মনে মনে বলল তারা ছিনতাই কারীর কবলে পড়েছে । তারা ভুলেই গেছে যে কয়েক বছর ধরে এই গ্রহে ছিনতাই কারীর সংখ্যা বেড়ে গেছে । আগে মনে পড়লে তো এখানে ল্যান্ড করতো না ।
ছিনতাইকারীরা বলল , তোমাদের স্পেশশীপের মায়া ছেড়ে দিতে হবে । এটা এখন থেকে আমাদের। ঐ খান থেকে সরে এসো।
সিয়াম ভাবলো এ স্পেশশীপটা ছাড়লে তারা বিকেলে এবং ছুটির দিনে আর বেড়াতে পারবেনা । তাছাড়া এমন ভালো মানের স্পেশশীপ সহজে কিনতে পাওয়া যাবে না । তার মনের অজান্তেই তার মুখ থেকে বেরিয়ে এল , না আমরা সোরবোনা ।
তাদের একজন বলে উঠলো তোমার সাহসের তারিফ করতে হয়। সরে আস, তা-নাহলে তোমরাই বুঝ এখানে কি ঘটবে।
সিয়াম তার বোনের দিকে তাকিয়ে বলল না আমরা সোরবনা । সিপু ভয়ে কেমন কুঁকড়ে গেছে । তার নিজের ও ভয় হতে লাগল ।
ছিনতাই কারিদের একজন বলে উঠল আমি এক থেকে তিন পর্যন্ত গুনবো এর মধ্যে না সরলে এ লেজার গানের এক সেকেন্ডের লেজারে তোমরা শেষ হয়ে যাবে ।১……..
সিয়াম হতাশ হয়ে পড়ল । সে এখন কি করবে । তার কাছে কোন অস্ত্র নেই । থাকলেও লাভ হতো না বের করতে পারতো না । আর স্পেশশিপের ভিতরে থাকলে ও একটা ভালো হত । পুরো স্পেশশিপটাকেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যেত ।
২………….
সিয়াম জানে এখান থেকে সরে লাভ নেই কারণ এরা স্পেশশীপ দখল করে তাদেরকে এখানেই মেরে রেখে যাবে । তবে একটু আগে আর পরে এই যা ।
৩…..
তোমাদেরকে বাঁচাতে ছেয়েছিলাম তোমরা বাছতে চাওনি বলে সে অস্ত্র তাক করল।
সিয়ামের মাথায় তখন মৃত্যুর আগের শেষ বুদ্ধি আসল । ওরা ট্রিগার চাপবে এমন সময় সিয়াম একটা কোড বলে বলল রিফ্লেক্ট এবরিথিং বলেই সে সিপুকে নিয়ে শুয়ে পড়ল।
সাথে সাথেই তাদের স্পেশশিপের বাহিরের আবরণ কাঁচে পরিণত হল এবং ওদের লেজার ওদের গায়ে গিয়ে পড়ল।
সিয়াম সিপুকে নিয়ে তাড়াতাড়ি উঠে পড়ল । এবং স্পেশশিপের দিকে রওনা দিল ।
দূরে ছিনতাই কারীদের আরো লোক ছিল । তারা প্রথমে কিছু বুঝতে পারেনি।পরে যখন বুঝল তখন স্পেশশিপকে লক্ষ কওে গুলি চুড়তে চুড়তে এগিয়ে আসতে লাগল।
এদিকে সিয়াম স্পেশশিপের ভেতরে ঢুকে স্পেশশিপ কে মঙ্গলের মাটি থেকে তুলে নিতে শুরু করল। তখনই একটা গোলা এসে স্পেশশিপ পড়ল এবং স্পেশশিপ বড় একটা ঝাঁকুনি খেল। সিয়াম স্পেশশিপ কে স্বাভাবিক গতি থেকে আরও দ্রুত চালাতে শুরু করল ।
ওরা আরও বেশি করে পাগলের মতো স্পেশশিপকে লক্ষ করে গুলি ছুড়তে লাগল।ওদের হাত থেকে রক্ষার জন্য সিয়াম স্পেশশিপকে সর্বোচ্চ গতি দিল।
মঙ্গল গ্রহ থেকে অনেক দূরে আসার পর সিয়াম স্বস্থির নিশ্বাস পেলে সিপুকে বলল যাক ওদের হাত থেকে বাঁচা গেল। এবার স্পেশশিপকে আস্তে চালানো যায় , আজকে আর কোথাও যাবো না । সোজা বাসায় যাবো । সে স্পেশশিপের গতি কমার জন্য কন্টোলারে চাপ দিল কিন্তু কোন কাজ হয় না । স্পেশশিপ তার কমান্ড মানছে না । যন্ত্রটি উল্টা পাল্টা পথে নিজের ইচ্ছে মতো চলতে লাগলো । তারা পৃথিবী থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে । সে খুব ভাবনার মধ্যে পড়ল । সিপু কাঁদো গলায় জিজ্ঞেস করল ভাইয়া এখন কি হবে। সে নিজেও জানেনা কি হবে ,সে নিজেও ভয় পেয়েছে কিন্তু মুখে বলল কিছুই হবে না এখনই ঠিক হয়ে যাবে ।
হঠাৎ করে বিপদ ঘণ্টিটি বেজে উঠল । সে দেখল মনিটরে একটি লাল বিন্দু ভেসে উঠেছে এবং তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হচ্ছে । ওয়ার্নিং মেসেজ পড়ে তার কপাল ভাঁজ হয়ে গেল।আশে পাশে কোথাও ব্ল্যাক হোল রয়েছে এবং তা বেশি দূরে নয়। আর স্পেশশিপ আস্তে আস্তে ঐ দিকে যাচ্ছে ।
সিয়াম জেনে গেছে তাদের মৃত্যু অনিবার্য।এখান থেকে ফেরার আর কোন রাস্তা নেই। মঙ্গল গ্রহতে মৃত্যুই তো ভালো ছিল। তবুও তাদের কথা তাদের বাবা মা জানতো।এখন কেউই কিছু জানবে না ।
লাল বিন্দুটি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠলো। স্পেশশিপের গতিবেগ আগের থেকে তীর্ব হল। সে আর নিজের গতিতে চলতে পারে না।সে এখন ব্ল্যাক হোলের আকর্ষণ জনিত গতিতে চলছে। স্পেশশিপটি এবার ব্ল্যাক হোলের কাছে আত্মসমর্পণ করল । ব্ল্যাক হোল তাদের আকর্ষণ করে নিজের দিকে টেনে নিয়ে চলছে।আর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই তারা দুই ভাই বোন ব্ল্যাক হোলের খাদ্য হবে ।
সিয়ম এখন আর তার নিজের কথা চিন্তা করে না । সে এখন পৃথিবীর চিন্তা করে । পৃথিবীর এত কাছে একটি ব্ল্যাক আছে অথচ পৃথিবীর মানুষেরা কিছুই জানে না । পৃথিবীর মানুষকে কিভাবে সতর্ক করবে তাসে কিছুতেই চিন্তা করতে পড়তেছে না।
ব্ল্যাক হোল এর টানে তাদের স্পেশশিপটি বাঁকা হতে আরম্ভ করল । তারা তাদেও শরীরে খুব টান অনুভব করল । এক সময় তা অসহনীয় পর্যায় পৌছল ।
মৃতুর আগে সিয়ামের একটি আক্ষেপ রয়ে গেল । কেন সে পৃথিবী বাসীকে সতর্ক করতে পারল না !
ভাই, আপনি কবে লেখা শুরু করলেন…..শুভ কামনা রইল
অনেক আগে থেকেই 🙂
khub sundor vaiya
next kobe asbe??
Jodiyo ay aktai Porsi…