আমি ইন্ট্রোভার্ট নাকি এক্সট্রোভার্ট, তা নিয়ে আমি নিজেই কনফিউজড হয়ে থাকি। অফলাইনে মানুষের সাথে খুব একটা কথা বলা হয় না আমার। কারো সাথে কথা শুরু করলে তাও বেশিদূর আগায় না। ফোনে আমার কথা বলা হয় না। সপ্তাহে দুই একবার হয় কিনা সন্ধেহ। আর হলেও সর্বোচ্চ ৩০ সেকেন্ড! অফলাইনে একজন ইন্ট্রোভার্টের সব গুণ আমার মধ্যে বিদ্যমান।
অনলাইনে আবার পুরোটাই উল্টো। কারো সাথে তেমন কথা না বললেও আমি অনলাইনে যে কারো সাথে ফ্লুয়েন্টলি চ্যাট করতে পারি। এছাড়া তো প্রতি ঘন্টায় ঘন্টায় হাবিজাবি পোস্ট দিয়ে আপনাদের সবাই বিরক্ত করে চলছিই!
নিজের মধ্যে এমন দৈত স্বত্তা দেখে ইন্ট্রোভার্ট এবং এক্সট্রোভার্ট নিয়ে একটু কিউরিসিটি জন্মালো। জানলাম ইন্ট্রোভার্ট এবং এক্সট্রোভার্ট এর মাঝা মাঝি আরেক ধরণের মানুষ থাকে, তাদের বলা হয় এম্বিভার্ট। আমি ইন্ট্রোভার্ট নাকি এক্সট্রোভার্ট নাকি এম্বিভার্ট জানি না। তবে এই বিষয় গুলো সম্পর্কে জানতে দারুণ লাগে। আমি যে সব সমস্যায় ভুগতাম, একটু পড়াশুনা করার পর দেখি আমার মত অনেকেই রয়েছে। সুতরাং এটা আসলে কোন সমস্যা না। স্বাভাবিক।
প্রতি তিনজনে একজন ইন্ট্রোভার্ট থাকতে পারে, এমনকি প্রতি দুইজনে একজন ইন্ট্রোভার্ট থাকতে পারে। ইন্ট্রোভার্টরা সব কিছু একভাবে চিন্তা করে, এক্সট্রোভার্টরা একভাবে। ইন্ট্রোভার্টরা হয়তো নিরিবিলি থাকতে পছন্দ করে, নিরিবিলি কোথাও কাজ করতে পছন্দ করে। এক্সট্রোভার্টরা হয়তো অনেক মানুষের মধ্যেও কাজ করতে পারে। এসব নিয়ে একটা দারুণ টেড টক রয়েছেঃ The power of introverts | Susan Cain এটি সর্বকালের সেরা টক গুলোর একটা!
ভিডিওটি থেকে দুই একটা বিষয় নিয়ে বলি। যেমন স্কুলের কথাই ধরি। যে ফ্রেন্ডটা নিরিবিলি থাকতে পছন্দ করে, তাকে তার ঐ সমস্যার জন্য হয়তো বাকি সবাই হাসাহাসি করে। নিরিবিলি একা একা কেউ ভালো করতে পারে, আবার কেউ গ্রুপ বেঁধে। আমাদের (পুরা বিশ্বেরই) স্কুল গুলো কিন্তু ইন্ট্রোভার্টদের চিন্তা করে তৈরি করা হয় নি, হয়েছে এক্সট্রোভার্টদের কথা চিন্তা করে। এ জন্য হয়তো দেখা পৃথিবীর সেরা মানুষ গুলোর অনেকেরই কিন্তু স্কুলের রেকর্ড খুব একটা ভালো না! (স্কুল কলেজে খারাপ করলে চিন্তা করার দরকার নেই যে আপনি অন্য কোন বিষয়ে ভালো করবেন না!)
কর্মক্ষেত্রের কথা চিন্তা করি। আমাদের সফটওয়ার ইন্ড্রাস্ট্রি নিয়েই উদাহরণ দেই। সফটওয়ার ইন্ড্রাস্ট্রিতে ওপেন অফিস স্পেস খুব জনপ্রিয়। কিন্তু ইন্ট্রোভার্টদের জন্য এই ওপেন অফিস স্পেস খুব একটা ভালো কর্মক্ষেত্র না। তারা একাকি কাজ করতে পছন্দ করে বা নিরিবিলি কোথাও বসে কাজ করতে পছন্দ করে। তো ওপেন অফিস স্পেসে কোওয়ার্কাররা কিন্তু কোন না কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা করে, প্রতিবারই ইন্ট্রোভার্টদের মনোযোগ নষ্ট হয়। যেখানে হয়তো এক্সট্রোভার্টদের তেমন একটা সমস্যা হয় না। এমনকি গ্রুপ ওয়ার্ক ইন্ট্রোভার্টদের জন্য না! তো এসব ক্ষেত্রে একজন ইন্ট্রোভার্ট নিজের সেরাটা নাও দিতে পারে।
কোন কারণে যদি আপনার একা একা নিরিবিলিতে কাজ করতে ইচ্ছে করে, তাই করা উচিত। ইন্ট্রোভার্ট হলে নিজেকে এক্সট্রোভার্ট হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করা থেকে বিরত থেকে নিজের মত করে সব করে যাওয়া উচিত। Everyone is a genius. But if you judge a fish by its ability to climb a tree, it will live its whole life believing that it is stupid.
আপনি ইন্ট্রোভার্ট নাকি এক্সট্রোভার্ট তা আপনি ভালো জানেন। নিজেকে পরিবর্তন করার দরকার নেই। আপনি যা, আপনি তা! নিজেকে পরিবর্তন না করে নিজের সেরাটা চেষ্টা করতে পারেন। তা করতে পারলে সফলতা সুখ বা শান্তি বেশি দূরে নয় 🙂
ami amybe introvort ami eka eka kaj korte pochondo pochobndo kori tobe ekta aommosha holo nijeke extrovort hishebe pochondo kori jar.ekhon ar ei vulta ar korbona .ar eita niye-o mon khrap korbonaa….
“কোন কারণে যদি আপনার একা একা নিরিবিলিতে কাজ করতে ইচ্ছে করে, তাই করা উচিত। ইন্ট্রোভার্ট হলে নিজেকে এক্সট্রোভার্ট হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করা থেকে বিরত থেকে নিজের মত করে সব করে যাওয়া উচিত।” ন্যাচারাল্ভাবে যার যেটা নিজস্বতা সেটা বজায় রাখাটা খুব জরুরী। পৃথিবীর প্রচুর মেধাবী ইন্ট্রভার্ট মানুষ ছিলেন, এবং তুলনামূলকভাবে এক্সট্রভার্টদের চেয়ে ক্রিয়েটিভিটির দিক থেকে ইন্ট্রভার্টরা অনেক বেশি এগিয়ে। অস্তিত্ব শঙ্কটটা কমবেশি অনেকের মধ্যেই থাকে। তাই এ নিয়ে হতাশায় থাকার আসলেই কিছু নেই। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
ইন্ট্রোভার্ট এবং এক্সট্রোভার্ট সম্পর্কে আগে কিছুই জানতাম না আপনাদের লেখাটা পড়ে বুঝলাম যে ইন্টোভার্ট ব্যক্তির সব বৈশিষ্টিই আমার মধ্যে আছে। আমি কেমন প্রকৃতির সেটা প্রায়ই অনুধাবন করি এবং নিজেকে প্রশ্ন করি যে আমি আশেপাশের আর সবার মতো না হওয়ার কারন কি? আমার ব্যক্তিত্বটা কি ভালো না খারাপ? লাজুক স্বভাব(লোকে কি বলবে),অতি সরলতা যার কারনে সবাই পেয়ে বসে,অতিরিক্ত ইমোশন যার কারনে নিজের ক্ষতি হয়,এইগুলো পরিবর্তন করার চেষ্টা করি কিন্তু পেরে উঠি না, অন্য বৈশিষ্ট্যগুলো তো ভালই লাগে। আমাকে অনেকেই বলেছে আমি কম কথা বলি তার জন্য কথা বলা বাড়িয়েও দিয়েছিলাম কিন্তু পরে মনে হলো, না যতটুকু বলা দরকার আমি তো সেটুকু বলি এবং কেউ কেউ আমার কথার প্রশংসাও করে।
নিজে যেমন, তেমনই থাকা উচিত। পরিবর্তন করতে গেলে তো আর নিজের স্বকীয়তা থাকে না।