হতাশার বিপরীত হচ্ছে বিশ্বাস।

অন্তত বাংলাদেশীদের জন্য ফেসবুক হচ্ছে তাদের চায়ের দোকানের মত। নাহ!! চায়ের দোকান থেকেও বেশি কিছু। কারন চায়ের দোকানে মেয়েরা যেতে পারে না, বড়োদের সাথে ছোটরা বসতে পারে না, নিজেদের সমবয়সী ছাড়া অন্য কারো সাথে আড্ডা দেওয়া যায় না। ফেসবুক এসব এর উর্ধে। সবার সাথেই এখানে আলোচনা করা যায়, সকল বয়সের মানুষের সাথেই এখানে বন্ধুত্ত্ব করা যায়। আর এর ফলে অনেকের সম সাময়িক অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়। ফেসবুকিং আবার এত ভালো ও না যে সারা দিন এখানে পড়ে থাকতে হবে।

ফেসবুকে দুইটা জিনিস বেশি শেয়ার করে মানুষ। এক খুশির খবর এবং দুই- হতাশার বা ব্যর্থতার খবর। গণনা করে দেখলে দ্বিতীয়টাই জয়ী হবে। আচ্ছা, হতাশ হয়ে কেন? তার উত্তর সংক্ষিপ্ত, ব্যর্থ হলেই হতাশ হয়। আরেকটা কারনেই হতাস হয় উঠে মানুষ। তা হচ্ছে অন্যের সাথে নিজেকে তুলনা করে। ফেসবুকের কল্যানে এটার পরিমান বেশি হয়ে গেছে। এখন যেহেতু সবাই নিজের সুখের খবর বা নিজের সাফল্যের খবর সহজেই ফেসবুকের সাহায্যে সবার সাথে শেয়ার করে তখন সাফল্য দেখে নিজেকে তুচ্ছ মনে হয়। মনে হয় আমি কেন পারি না ও কেন পারে। এটা সম বয়সীদের সাথেই তুলনা করা হয়।
আচ্ছা, এবার চিন্তা করুন ও কেন কোন কিছু পারে, আপনি কেন পারেন না। উত্তর গুলো বের করার চেষ্টা করুন। আমি সেন্টপার্সেন্ট শিউর যে বিশ্বাস তাকে সফল হতে সাহায্য করেছে।
নিজের উপর যদি আপনি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন তাহলে আপনি হতাশতায় ডুববেন। আপনার কাছা কাছি যারা সফল হয়েছে তাদের সাথে কথা বলুন। তারা কেন একটা বিষয় নিয়ে কাজ করলে তাতে সাফল্য আশে তা নিয়ে ভাবুন। তারপর ভাবনা থেকে কাজ করা শুরু করুন।

অন্যরা কিভাবে কাজ করে তা ভেবে আপনি শুরু করবেন করবেন করেও যদি না করেন তাহলে চরম ভুল করবেন। সময়, খুব দামী জিনিস। কোন একটা বিষয় শুরু করবেন করবেন করে যদি না করেন দেখবেন আপনার সময় পুরিয়ে গেছে। আপন তখন অনেক বড় হয়ে যাবেন যে ঐ কাজ টা করতে লজ্জা বা আলস্য লাগবে। আর আপনার পাশের বন্ধুরা যদি ভালো যাগায় চলে যায় তখন নিজেকে”I am good for nothing” মনে হবে। এটা যেন ভুলেও না হয়। সকল মানুষকে আল্লাহ একটা ক্ষমতা দিয়েছে, আর তা হচ্ছে যে কোন জায়গা থেকে সফল হওয়ার শক্তি। আপন যত বয়স্কই হোন না কেন, আপনি যত খারাপ অবস্থায়ই থাকেন না কেন আপনি ঐ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। তার জন্য দরকার আপনার ইচ্ছে শক্তি, বিশ্বাস। এ দুটা জিনিস হচ্ছে মানশিক শক্তি। এবার এ দুইটা শক্তির সাথে শারিরিক শক্তি কাজে লাগান। আপনার ইচ্ছেকে পূরন করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন। চেষ্টা করার সময় নিজে নিজে ভাবুন আমি যা করছি তা কে যথেষ্ট? উত্তর যদি না হয় তাহলে আরো বেশি করে পরিশ্রম করুন। এভাবে চলতে থাকুন।

দুই এক মাস বন্ধুদের সাথে কথা না বললে কিন্তু কিচ্ছু হবে না। কিচ্ছু হবে যখন আপনার পকেটে টাকা থাকবে না আর বন্ধুরা তখন মনের আনন্দে কোথায়ো ঘুরতে যাবে বা সুন্দর একটা মুভি দেখতে যাবে। আপনি যদি তখন ওদের সাথে যুক্ত হতে যান তখন অবহেলার মধ্যে থাকতে হবে, নিজের কাছেই খারাপ লাগবে। সবার হাসি/আনন্দের খোরাক ও হতে পারেন।

যখন যা ইচ্ছে করবে তা করা কিন্তু অনেক ভালো একটা গুন। কে কি বলছে না বলছে তা বলুক। আপনার যদি বিশ্বাস থাকে আপনি খারাপ কাজ করছেন না তাহলে কারো কথায় মন দেওয়ার দরকার নেই।

আর যে সকল কাজ করবেন তা কিন্তু আপনাকে আনন্দ দিতে হবে। চিন্তা করুন ঐকাজটি কি আপনি দুই একদিন ঘুম না গিয়ে করতে পারবেন?যদি হ্যা হয়ে তাহলে করুন। না হয় অন্য কাজ শুরু করুন। আপনার যদি ভালো না লাগে কাজটি, আপনি যদি কাজটিকে ভালোনাবাসেন তাহলে দুই একদিনের মধ্যেই আপনাকে ঐ কাজটি ছেড়ে দিতে হবে। মানে আপনি ব্যর্থ।

আচ্ছা, কাজ তো কিছু শুরু করতে হবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য। কি কাজ করবেন? আপনি ছাত্র হলে যে বিষয়ের উপর পড়ালেখা করেন তার উপর কি কি কাজ রয়েছে তা বের করার চেষ্টা করুন। তার পর ঐ কাজ গুলো থেকে কি কি আপনার দ্বারা সম্ভব তা বের করুন। লিস্ট অনেক ছোট হয়ে যাবে। এবার বের করুন কোথায় আপনি সবছেয়ে কম সময় দিয়ে সবচেয়ে ভালো ফল পাবেন। আর ঐ কাজটা জানলে ভবিশ্যতে আপনার জন্য কি অপেক্ষা করছে তা ও বের করে ফেলুন। লিস্ট মনে হয় তখন ১০ এর মধ্যেই থাকবে। এবার সুন্দর মত যেকোন একটা বেচে নিয়ে শুরু করুন। যাই করুন না কেন আপনাকে অনেক জানতে হবে। অনেক শিখতে হবে। জানা থেকে দূরে থেকে আপনি কোনদিন ও কিছু করতে পারবেন না। পারলে এমন কিছু করার চেষ্টা করুন যা থেকে নিয়মিতই কিছু না কিছু শিখতে পারেন। যে কাজ বার বার করা লাগে ঐ ধরনের কাজ গুলো পছন্দের তালাকে আগেই বাদ দিয়ে দিন। কি দরকার বোরিং কাজ করার? আচ্ছা, যে পছন্দ করছেন তা দিয়ে কোনদিন নিজের ছোট্ট খাট্টো একটা প্রতিষ্টান শুরু করতে পারবেন? মুনাফার হিসেবে পরে হবে। যদি হ্যা হয় তাই লিস্টে সবার আগে রাখবেন। আজ যারা অনেক সফল তারা কিন্তু নিজের প্রতিষ্টান দিয়েই সফল হয়েছে। আরেকজনের নিচে কাজ করে টাকা পাওয়া যা কিন্তু সফলতা নয়।
একজনে একটা বিষয় নিয়ে সফল হয়েছে আপনিও ঐটা করলে সফল হবেন এমন ধারনা নিয়ে কাজ শুরু না করাই ভালো। আপনি কি ভালো জানেন তাই করুন।

আজ হোক আর কাল হোক আপনার কাজটি যদি অন্যকে প্রতারনা না করে, মিথ্যে যদি না বলতে হয় তাহলে আপনি পারবেন। বিশ্বাস বিশ্বাস আর বিশ্বাস কে পুজি করেই শুরু করুন, সত্যকে কিন্তু বাদ দিবেন না।

কেউ কেউ হতাশ হলেই ধর্মের প্রতি আস্থা উঠে যায়। আচ্ছা, আপনি যদি চেষ্টা না করেন তাহলে কে দিবে আপনাকে মূল্য? আল্লাহ আপনাকে যা দিয়েছে তার কথা ভাবুন। দুইটা হাত, দুইটা পা … দৃশ্য মান অঙ্গ গুলোর কথা চিন্তা করুন। আপনাকে একটা প্রতিবন্ধির সাথে তুলনা করুন। তার কি নেই আর আপনার কি আছে। চোখ বন্ধ করে ভাবুন। অনেক কিছুই আছে শোকর করার মত। জ্ঞান মানুষকে ধর্মভিরু তৈরি করার কথা। আপনার জ্ঞান বেশি হলে অদৃশ্য শক্তি আপনার সামনে বেশি করে ধরা দেওয়ার কথা। দেখবেন পৃথিবী অনেক নিখুত, আপনার প্রতিটা অঙ্গ অনেক নিখুত। তাই কোন কিছু শুরু করার সাথে সাথে আল্লাহর কাছেও চান। হতাশ হবেন না। আল্লাহ সত্যি মহান। নামাজ কি পড়েন নিয়মিত?

টাকা নয় বুদ্ধি দিয়ে সকল কিছু জয় করা যায়। আপনার মস্তিস্ক অনেক বড় একটা জিনিস। আপনার মস্তিস্ক তৈরি করে যদি একবার চালানো হয় পৃথিবীর সকল শক্তি শেষ হয়ে যাবে। তাই একে ছোট ভাববেন না। মস্তিস্ককে কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন। সব সময়ই চিন্তা করুন কি করলে ভালো কিছু করা যায়। অনেক গুলো পথ আপনার জন্য খোলা থাকবে। নিজেকে কোন দিন ও ছোট মনে করবেন না। একাও মনে করার কোন কারন নেই। আপনি নিজেকে প্রমাণ করতে পারলে দেখবেন অনেকেই আপনার পাশে এসে দাঁড়াবে। এটা আপনার চারপাশের দোষ না, পৃথিবীর নীতি। যারা আজ অনেক বড়, তাদের সকলকেই এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে। এখন শুধু একবার প্রমাণ করুন নিজেকে। আপনি পারবেন।

সকলের জন্য শুভ কামনা। সকলের ইচ্ছে গুলো পূরণ হোক

14 thoughts on “হতাশার বিপরীত হচ্ছে বিশ্বাস।”

  1. ঘুম থেকে উঠে পড়ছিলাম। আবার ঘুমে ধরছে। ২ দিন নাঘুমিয়ে কোন কাজই করতে পারবনা। So, I’m good for ঘুম।

    Reply
  2. জাকির ভাই আপনি এত মেধাবি কেন? আপনার কথার পতি লাইন আমার কাছে অনেক সাহস উৎসাহ দান করে।

    Reply
    • আপনি উৎসাহ পেয়েছেন শুনে ভালো লাগলো 🙂 শুভ কামনা।

  3. লি খাতা ২০১২ এর এখন ২০১৮।ঠিক ৬ বছর পর নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে আবার কমেন্ট করার আশায় রইলাম

    Reply

Leave a Reply