সিলেট / বিছানাকান্দি ভ্রমণ

পরীক্ষা শেষ হলে সিলেট যাবো, আগে থেকেই সব ঠিক। সিলেটের সব ঘুরব। সময় নিয়ে। দূর্ভাগ্য ক্রমে একটা পরীক্ষা দিতে পারি নি। ফাইনাল পরীক্ষা।  ৫ তারিখে সব পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। যে পরীক্ষাটা দিতে পারি নি, ম্যাম এর সাথে ৫ তারিখে কথা হয়েছে তা ৮ তারিখে নিবে। হাতে মাত্র তিন দিন সময়। তাই ৫ তারিখেই বের হতে চেয়েছি। মাসুদ ভাই এবং শামীম ভাই হবিগঞ্জ যাবে। ঐখানে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা চলে। উনারা বলল উনাদের সাথে যেতে। হবিগঞ্জ উনাদের সাথে চলে গেলাম। গত বছর একই সময় হবিগঞ্জ ছিলাম। হবিগঞ্জ গেস্ট হাউজে ছিলাম। অসাধারণ যায়গা। এবার ছিলাম হবিগঞ্জ রেস্টহাউজে।

সকালে মেলাতে গিয়ে পার্থদা এর সাথে দেখা। আমি সিলেট আসব। উনি নাস্তা করালো। তারপর আমি রিক্সা নিয়ে স্টেশন এসে সিলেটের বাসে উঠলাম।
সিলেট আসতে আসতে ৩টা বেজে গেছে। ঐখানে আমার জন্য কাওসার অপেক্ষা করতেছিল। ইউনিভার্সিটির জুনিয়র। সাথে ছিল তার বন্ধু। ফরহাদ খান। পরে এক সাথে খাওয়া দাওয়া করে শহরের কাছেই একটা চা বাগানে গেলাম। সিলেট ক্রিকেট স্ট্যডিয়াম এর কাছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ঐ দিকে থেকে পরে রুবেল ভাই [Syed Rezwanul Haque Rubel] এর সাথে দেখা করলাম। উনাদের অফিসে। অনেকক্ষণ কথা বার্তা বলে রুমে ফিরলাম। ফ্রেস হয়ে রাত্রে বের হলাম। খাওয়া দাওয়া করে ফিরলাম।
ঘুমুতে ঘুমুতে ৪টা বেজে গেলো। তাই ঘুম থেকে উঠছি দেরি করে। ১১টার দিকে। প্ল্যান ছিল বিছনাকান্দি যাওয়ার।
সিলেট শহর থেকে CNG  নিয়ে অনেক দূরে হাদারপাড় বাজার গিয়েছি। গ্রাম থেকে বেশি গ্রাম। এখনো মাটির ঘর চোখে পড়ে।  তারপর আর ১ ঘণ্টার মত হেঁটে বিছনাকান্দি গেলাম। কারণ ঐদিকে না চলে কোন গাড়ি, না চলে কোন রিক্সা। ভাঙ্গা চুরা রাস্তা। তবে ট্যাফে ট্যাক্টর গুলো ভয়াবহ ভাবে পাথর আনার কাজে ব্যবহার করে। বিছানাকান্দি যত সুন্দর তার থেকে বেশি সুন্দর হচ্ছে যাওয়ার পথের চারদিকের পরিবেশ।
আমাদের শহর তৈরি করার জন্য যে সব পাথর ব্যবহার করে, তা এসব অঞ্চল থেকেই নেওয়া হয়। পাথর গুলো নেওয়ার কারণে প্রকৃতির ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে… কারো ক্ষতি, কারো লাভ। সমান সমান।
ভালো কথা, ছোট্ট একটা ফেরি পার হতে হয়েছিল হাদারপাড়া যেতে। ছোট, তারপর ও প্রথম। ফেরি ফী ছিল মাত্র দুই টাকা।
আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে গেলো। আমি ফিরব ঢাকা। দুপুরে কোন খাবার খেতে পারি নি। তাই এক বারে দুপুরের + রাতের খাবার খেয়ে নিয়েছি। পানসি নাকি অনেক ভালো, তাই পানসিতেই খেলাম। এর পর এসে টিকেট কাটলাম। বাস রাত ১১.৩০ এর দিকে। হাতে অনেক সময়, তাই মাজার থেকে ঘুরে আসলাম। এর পর এসে কাউণ্টারে বসে বসে পরীক্ষার প্রিফারেশন নিচ্ছিলাম। পরের দিন নয়টায় পরীক্ষা। পরীক্ষার প্রিপারেশন নেয়ার জন্য আমাকে  Faruq Hossain এবং আশিক নামে দুইজন জুনিয়র যথেষ্ট হেল্প করতেছিল।  রাতে ঘুমানোর কোন প্ল্যান নেই। ৯টায় পরীক্ষা। ঘুমালে আর উঠতে পারবো না। আবার পরীক্ষা মিস হবে। ঢাকায় বাস থেকে সকালে নামিয়ে দিবে। বাসায় গিয়ে ফ্রেস হয়ে যেন ইউনিভার্সিটিতে আসতে পারি।
পড়ার মাঝে মাঝে ফেসবুক চেক করতেছিলাম। Pradyut Baran Chowdhury মেসেজ দিয়েছিল। কোথায় আমি, আমি বললাম। উনি চলে আসলো দেখা করতে। কথা বলতে বলতে বললাম চলেন, চা খাই এক সাথে। বাহিরে বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি দিয়ে রাস্তা পার হয়ে রেস্টুরেন্টে। আমি শুধু চা খাওয়ার জন্য নিয়ে আসছি উনাকে। আর উনি কাবাব, লাচ্ছি, পরটা সব অর্ডার দিয়েছে। তার কিছুক্ষণ আগেই ইচ্ছে মত খেয়েছি। পেটে যায়গা নেই একটু। তারপর ও খেতে হয়েছে।
এরপর কথা বলে উনি বিদায় নিলো। আমি ঢাকার উদ্দ্যেশে রওনা দিলাম। এই হচ্ছে আমার সিলেট ভ্রমণ। অসম্পুর্ণ। কয়েক দিনের মধ্যেই আবার যাবো। যেতেই হবে। এই বর্ষাতেই।
কিছু ছবি শেয়ার করলাম 🙂
চা বাগান
চা বাগান
চা বাগান
চা বাগান
জীবিকা
জীবিকা
চা বাগান
চা বাগান
 রাবার সংগ্রহ
রাবার সংগ্রহ
কাঠমালতি ফুল
কাঠমালতি ফুল
ব্যাং
ব্যাং
পোকা
পোকা
গ্রামের পথে
গ্রামের পথে
রাখাল
রাখাল
মেঘ এবং গ্রাম
মেঘ এবং গ্রাম
পাখি পাথর বা গ্রাম
পাখি পাথর বা গ্রাম
বন্ধন
বন্ধন
ক্লান্ত
ক্লান্ত
ফেরি ঘাটে
ফেরি ঘাটে
স্বর্গ
স্বর্গ
গ্রাম, রাখাল প্রকৃতি
গ্রাম, রাখাল প্রকৃতি
ঐ দূর পাহাড়
ঐ দূর পাহাড়
মেঘ পাহাড় এবং খোলা মাঠ
মেঘ পাহাড় এবং খোলা মাঠ
স্কুল
স্কুল
IMG_3562
খোলা মাঠ
পাহাড়ের দেশের স্কুলটি
পাহাড়ের দেশের স্কুলটি
প্রজাপতি
প্রজাপতি
পাহাড় এবং মেঘ
পাহাড় এবং মেঘ
পাহাড়ের কাছে
পাহাড়ের কাছে

পাহাড় এবং মেঘ

পাহাড়ী ঝরনা
ঐ দূর পাহাড়ী ঝরনা
এত্ত গুলো রাস্তা হাটতে হয়েছিল
এত্ত গুলো রাস্তা হাটতে হয়েছিল
ক্লান্ত
ক্লান্ত
এটার নাম মনে হয় অনুভুতি :P
এটার নাম মনে হয় অনুভুতি 😛


6 thoughts on “সিলেট / বিছানাকান্দি ভ্রমণ”

  1. ভাই, ছবি গুলোকি আপনার তোলা? আপনার ক্যামেরার নাম ও মোডেলটা কি? দাম কত?

    Reply
    • জ্বি, আমার ক্যামেরায় তোলা ছিল। মডেল Canon 70D.
      দুঃখিত, অনেক দেরি করে রিপ্লাই দিয়েছি। আমার চোখে আগে পড়ে নি।

  2. একটা লেখা পড়তে এসে অনেক লেখা পড়ে ফেললাম। অসম্ভব সুন্দর করে লিখেছেন।

    Reply

Leave a Reply