ঐখানের পানি গুলো লাল ছিল। টকটকে লাল। কারণ তখন সূর্য মামা সকল রাগ চারদিকে ছড়িয়ে ক্লান্ত হয়ে নিজের বাড়ির দিকে যাচ্ছিল। পুরো পশ্চিম আকাশ রক্তে রাঙ্গানো ছিল। সেই রঙ এর ছায়া পানিতে পড়ে পানিগুলোও লাল হয়ে গিয়েছে। পানি বেচারা কি করবে, নিজের কোন রঙ নেই। তাই পরিবেশের রঙ্গেই রঙ্গিন হয়।
সেই রঙ্গিন পানিতে মেয়েটি তার শুভ্র পা ডুবিয়ে বসে ছিল। মেয়েটি অশান্ত ছিল। সেই অশান্ত ভাবটা তার পা দিয়ে পানি গুলোর মধ্যেও ছড়িয়ে দিতে লাগল। তৈরি হচ্ছিল অসংখ্য ঢেউ। ঢেউ গুলোর মাঝে ঘরে ফেরা পাখি গুলোর প্রতিফলন দেখা যেতে লাগলো।
দৃশ্যটি মেয়েটির অনেক পছন্দ। বয়স ছিল কম। ১৩-১৪। প্রেমে পড়ার বয়স। যে কোন সময়ই মেয়টি টুপ করে কোন একটি ছেলের প্রেমে পড়ে যাবে। যার কোন কারণ থাকবে না। যেমন এখনো ও কোন কারণ ছাড়া পানিতে পা দিয়ে বসে আছে। সূর্য ডুবে যাওয়া পর্যন্ত বসে থাকবে। পাখি গুলোর ঘরে ফেরা শেষ হবে, সেও ঘরে ফিরে যাবে।
মেয়েটি তখনো জানতো না, একদিন ঐ ছেলেটির জন্য এখানে অপেক্ষা করবে। ছেলেটির দেরি হচ্ছে মনে করে আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবে। এর পর সন্ধ্যা হবে। ছেলেটি আসবে না। সূর্যটি ডুবে যাবে। পশ্চিম আকাশের লাল আভা কালো হয়ে যাবে। আর কালো হতে থাকবে একটি মেয়ের শুভ্র মুখ।
ঐ দিন সব পাখি ঘরে ফিরলেও সদ্য উড়তে শেখা একটি পাখি পথ হারিয়ে ফিরতে পারবে না। মেয়েটি ঘরের ফেরার পথ জেনেও ফিরবে না। ঐ পানি গুলোকে আপন করে টুপ করে নেমে যাবে। পাহাড়ের কেনারে থাকা ছোট নদীটির পানিতে।