সিলেট গেলেই দূর থেকে ঝর্ণা গুলো দেখে মেঘালয় এবং শিলং ভ্রমণ করতে যেতে ইচ্ছে করত। খুব আপসুচ হত যে সুন্দর এই ঝর্ণা এবং পাহাড় গুলো ইন্ডিয়ার অংশ। ইচ্ছে করত ঐ পাহাড়ের উপড়ে উঠতে। তাই মেঘালয় যেতে খুব ইচ্ছে করত। মেঘালয় সরাসরি কোন এয়ার নেই বাংলাদেশ থেকে। এয়ারে যেতে হলে ঢাকা থেকে কলকাতা, কলকাতা থেকে এরপর মেঘালয়। তা বাস জার্নি থেকে কম কষ্টের না। বাই রোডে যেতে হলে তামাবিল/ডাউকি পোর্ট দিয়ে যেতে হয়। তার জন্য ভিসা করার সময় ডাউকি পোর্ট উল্লেখ করে দিতে হয়। এবার ইন্ডিয়ান ভিসা করেছি স্পেশালি মেঘালয় যাওয়ার জন্য।
স্বপ্ন যাত্রা থেকে মামুন ভাই একটা ট্যুরের আয়োজন করেছে। মামুন ভাইদের সাথে রওনা দিলাম মেঘালয়ের দিকে। গ্রীন লাইনে করে। রাজারবাগ থেকে বাস ছাড়ল ১২টার দিকে। রওনা দিলাম সিলেটের দিকে। রাত আড়াইটার দিকে যাত্রা বিরতি দিল। গ্রীন লাইনে ফ্রি বুফ্যে খাবার দেয়। ফ্রি হিসেবে ভালো বলা যায়।
প্রথম দিন
সিলেটে পৌছেছি সকাল সাড়ে পাঁচটার দিকে। ছয়টার দিকে লোকাল একটা বাস রিজার্ভ করে আমরা রওনা দিলাম তামাবিল বর্ডারের দিকে। পথে একটা রেস্টুরেন্টে নাস্তা করে নেই। নাম VIP হলেও কাজে VIP না। ঘুরতে এসে ভালো খারাপ খুঁজতে গেলে ঘুরার আনন্দ নষ্ট হয়। যা পাওয়া যায়, তাতে সন্তুষ্ট থাকলে ভালো উপভোগ করা যায়।
তামাবিল বর্ডারে তখনো কাজ শুরু করে নাই। অনেক অনেক পর্যটক দাঁড়িয়ে রয়েছে। আমরা তামাবিল পৌছাই প্রায় ৮টার দিকে। কিছুক্ষণ পর শুনি ইমিগ্রেশন ফরম শেষ! আমরা ভাগ্যক্রমে আগেই পেয়েছি। এরপর লাইনের ধরে ইমিগ্রেশন শেষ করে ট্যাক্স জমা দেই। বর্ডারে কোন ফরম ছাড়া যে ট্যাক্স জমা নেওয়া হয়, মনে হয় না সেগুলো রাজস্বতে জমা হয়। অফিশিয়াল কাজ কর্ম শেষ করে এরপর বাংলাদেশ বর্ডার পার হয়ে ইন্ডিয়াতে ঢুকি। ইণ্ডিয়ার পাশে একজন দাঁড়িয়ে ছিল পাসপোর্ট চেক করার জন্য। চেক করা শেষে সামনের দিকে গেলাম আমরা।
ইন্ডিয়াতে এসে আবার ইমিগ্রেশন। এখানেও বিশাল লাইন। অনেক আস্তে আস্তে কাজ এগুচ্ছে। পাসপোর্ট জমা দিয়ে হাটাহাটি করলাম। এরপর এক সময় কাজ শেষ হলো। তখন প্রায় এগারোটা।
আমরা টাটা সুমোতে করে রওনা দিলাম উমক্র্যামের দিকে। ঝর্ণা দেখতে। পাহাড়ি রাস্তা। পাহাড়ের উপর থেকে বাংলাদেশ দেখা যায়। দেখা যায় জাফলং ঘুরতে আসা বাংলাদেশী পর্যটক। তারা তখন হয়তো চিন্তা করে ঐ পাহাড়ের উপর কি রয়েছে। আমরা তখন ওই পাহাড়ের উপর।
আমাদের ড্রাইভার ভুল করে আমাদের শিলং এর দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। পরে আবার অনেকদূর রাস্তা ব্যাক করি আমরা। বর্ষাকাল হওয়াতে উমক্র্যামে প্রচুর পানি। কিছুক্ষণ এখানে থেকে রওনা দেই পরবর্তী স্পটে।
এরপর থামি আমরা বড় হীল নামক একটা ঝর্ণাতে। এটা উমক্রেম থেকেও বিশাল একটা ঝর্ণা। এছাড়া চারপাশ এত সুন্দর। আমার বসে থাকতে খুব ইচ্ছে করছিল। কিন্তু বসে থাকলে পরের স্পট তো আর দেখা হবে না।
বড় হিল থেকে আমরা গেলাম মউলিন নামক গ্রামে। লিবিং র্যুট ব্রিজ দেখার জন্য। গাছের শিকড় ব্রিজ তৈরি করে দিল। ছবি দেখে ভাবতাম অনেক বড় সড় একটা ব্রিজ হবে। কিন্তু গিয়ে দেখি ছোট্ট একটা ব্রিজ। তারপর ও সুন্দর। ব্রিজে হেঁটে এক পাশ থেকে অন্য পাশে যাওয়া যায় কিন্তু এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা যায় না। দাঁড়ালেই ঐখানে পাহারা দেওয়া লোক গুলো বাঁশি বাজানো শুরু করে। নিচ দিয়ে ঝর্ণা বয়ে যায়। মউলিন গ্রাম থেকে কিছুটা নিছের দিকে এই ব্রিজটি। দেখতে হলে কিছদূর ট্র্যাকিং করতে হয়।
দেখা শেষে ফিরে এলাম গ্রামে। তখন সম্ভবত ৪টা। দুপুরের খাবার খেতে হবে। ডাল, আলু ভাজি, ডিম ভাজি আর এক টুকরো পেয়াজ। বিস্বাদ এ খাবার ও ক্ষুদা থাকায় খেয়ে নিলাম।
খাওয়া দাওয়া শেষে গাড়িতে এসে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। আমাদের পরবর্তী গন্তব্য শিলং, হোটেলে। বাকিদের খাওয়া হলে সবাই আসলে রওনা দেই আমরা। পাহাড়ি রাস্তা। গাড়িতে ঘুমানো কষ্টকর। তারপরও ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে শিলং পৌছাই। মাঝে মাঝে শুধু দেখলাম মেঘের কারণে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। আমরা পাহাড়ের এতই উপরে, চাইলে প্যারাসুট দিয়ে লাফ দেওয়া যাবে।
হোটেলে এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। হোটেলের ওয়াইফাই কাজ করে না ঠিক মত। বের হলাম সিম কেনার জন্য। এতক্ষণে সব দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাত ৮টার মধ্যে পুরা শহর ঘুমিয়ে যায়। শান্ত শহরে কিছুক্ষণ হাঁটলাম।এরপর হোটেলে ফিরে এলাম। আমাদের জন্য খাবার তৈরি করছিল। সাড়ে নয়টার দিকে রাতের খাবার খেলাম। খাবারের টেস্ট খুব ভালো ছিল। আলু ভর্তা, ডাল, পুদিনা চাটনি, সবজি, মাছ এবং বাসমতি চালের ভাত। খাওয়া দাওয়া করে রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়লাম।
দ্বিতীয় দিন
সকালে ভোরেই ঘুম ভেঙে গেলো। ফ্রেশ হয়ে শিলং শহরে ঘুরতে বের হলাম। পুলিশ বাজার মোড়ে গিয়ে দেখি স্ট্রিট ফুড বিক্রি করছে। রুটি, পরটা, লুচি, সবজি ইত্যাদি। রুটি সবজি আর ডিম খেয়ে নিলাম।
আমরা সবাই বের হবো ৭ টার দিকে। তাই হোটেলে ফিরে এলাম। ৭ টার দিকে রওনা দিলাম সোহরা এর দিকে। Duwan Sing Syiem ভিউ পয়েন্টের দিকে। ঐখানে একটা ঝর্ণা আছে। তার জন্য প্রায় ৩০০ স্টেপ নিচে নামতে হয়। মোটামুটি মানের একটা ঝর্ণা। নামার রাস্তাটা সুন্দর, চার পাশের ভিউও সুন্দর।
নামা যত সহজ, উঠা তত কঠিন। উঠে ঐখানে আমরা নাস্তা করলাম। খাবার কোয়ালিটি তেমন একটা ভালো লাগেনি। লুচি সবজি অথবা নুডুলস রয়েছে খাওয়ার জন্য। নুডুলস খেয়ে নিলাম।
এরপর রওনা দিলাম সেভেন সিস্টার ফলসের দিকে। সাতটা ঝর্ণা এক সাথে। গিয়ে দেখি আকাশ মেঘলা। কিছুই দেখা যায় না। শব্দ শুনা যায়। শব্দ শুনে চিন্তা করতে লাগলাম কেমন হতে পারে ঝর্ণাটি। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। ভালো লাগছিল ঐ বৃষ্টি।
কিছুক্ষণ পর মেঘ কাটল। দেখলাম সাত আপা গুলোকে। অনেক দূর থেকে।
সেভেন সিস্টার্স ফলস থেকে গেলাম মৌসুমি ক্যাভে। বড় সড় একটা গুহা। ভেতরে লাইট দেওয়া। অনেক জায়গায় সিড়ি করা। গুহার ভেতরের স্ট্রাকচার কেমন অদ্ভুত সুন্দর। উপর থেকে পাথর ঝুলে আছে। রঙ বেরং এর পাথর।
গুহা থেকে বের হয়ে গেলাম ইকো রিসোর্টে। এটা মূলত সেভেন সিস্টার্স ওয়াটারফলের উপরে। জায়গাটা সুন্দর। কিছু কিছু জায়গায় পাহাড় সামনের দিকে বের হয়ে গিয়েছে। ঐ জায়গায় যাওয়ার লোভ কিভাবে সামলাই? ঐ পাথর গুলোর উপর দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল যেন পৃথিবীর এক শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে রয়েছি।
ইকোপার্কে কিছুক্ষণ থেকে সোহরা থেকে আমরা শিলং এর দিকে রওনা দিলাম। তখন দুপুর তিনটের মত। দুপুরের খাবার খেতে হবে। যেখানে সকালে নাস্তা করলাম, সেখানেই ফিরে এলাম। Duwan Sing Syiem ভিউ পয়েন্টে।
খাবার খেলাম মাছ, ডাল আর সবজি দিয়ে। এখানেও বাসমতি চাল। ঘ্রাণটা খুব ভালো লাগে।
এখানেই জিপলাইন করা যায়। খাওয়া দাওয়া শেষে জিপলাইনে উঠার জন্য টিকেট কেটে নিলাম। দুইটা লাইন। যাওয়া আসা মিলে চারবার। মাত্র ৮০০ রুপি। আমাদের টিমে আমিই সবার আগে উঠলাম। বাকিদের সাহস হচ্ছিল না। আমি হলাম গিনিপিগের মত! আমি শুরু করার পর টিমের অনেকেই টিকেট কেটে নিল।
জিপলাইনের এক্সপেরিয়েন্স খুবি দারুণ। নিজে নিজেই লাইন ধরে গ্র্যাভিটির ফোর্সে নেমে যাওয়া। নির্দিষ্ট দূরত্বে গিয়ে ব্রেক করা। ভালো লাগে। শূন্যে ভেসে চলা। দুই পাহাড়ের মাঝ দিয়ে। যাদের হাইট ফোবিয়া রয়েছে, তাদের ভয় লাগার কথা। পুরো মেঘালয় এই রোদ থাকে তো এই মেঘে সব ঢেকে যায়। আমি শেষ করে আসার পর দেখি সব মেঘে ঢেকে গিয়েছে। এরপর যারা করল, তারা মেঘের ভেতর দিয়ে জিপলাইন করল, ঐটাও হয়তো দারুণ এক্সপেরিয়েন্স।
জিপলাইন এডভেঞ্চারের ভিডিওঃ
জিফলাইনিং শেষে রওনা দিলাম শিলং এর দিকে। শিলং এর কাছা কাছি ছিল এলিফেন্ট ফল। শেখানে নামলাম আমরা। এরপর ঘুরা শেষে ফিরে গেলাম হোটেলে। ততক্ষণে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। শিলং শহরে একটু ঘুরতে বের হলাম। সন্ধ্যার দিকে শহরে মোটামুটি ভিড় থাকে। ট্র্যাফিক ও থাকে প্রচুর। যদিও আমাদের দেশের মত অত ভয়ঙ্কর না। ঘুরা শেষে হোটেলে ফিরে রাতের খাবার খেয়ে নিলাম। মাছ ভাজি, ডাল, সবজি দিয়ে।
তৃতীয় দিন
আজও পুলিশ বাজার মোড়ে গিয়ে সকালের খাবার খেয়ে নিলাম। রুটি আর ডিম দিয়ে সুন্দর করে স্যান্ডুইস তৈরি করে দিল। তা খেয়ে নিলাম। এরপর হোটেলে ফিরে রওনা দিলাম লাইটল্যুমের দিকে।
শিলং এ রাস্তা ভালোই ছিল। আবহাওয়া ও ভালো ছিল। লাইট ল্যুমের কাছের দিকে রাস্তা একটু ভাঙা ছিল। গিয়ে দেখি লাইট ল্যুমে কোন আলো নেই। সব মেঘে ঢাকা। মেঘালয় এর নামের সার্থকতা। কিছুক্ষণ মেঘ থাকে, কিছুক্ষণ পর কেটে যায়। আমরা অনেক্ষণ অপেক্ষা করলাম মেঘ চলে যাওয়ার জন্য। কিন্তু মেঘ কাটেনি। রাগ করছে সম্ভবত। ঐখানে একটা দোকান ছিল। আমরা হালকা চা নাস্তা খেয়ে নিলাম।
মেঘ না কাটায় রওনা দিলাম পরবর্তী স্পটে। ডন ভসকো মিউজিয়ামে। টিকেটের পাশা পাশি ছবি তোলার জন্য আলাদা টাকা দিয়ে পাস নিতে হয়। পাস নিলাম।
মিউজিয়ামে আমাদের এই উপমহাদেশের বিভিন্ন বিষয়ের সংগ্রহ রয়েছে। পাহাড়ি এলাকার বিভিন্ন হাতিয়ার, সংগ্রামী মানুষ গুলো, মেঘালয় বা কাছা কাছি এলাকার ইতিহাস ইত্যাদি।
মিউজিয়ামের উপরে শিলং শহর দেখার জন্য রেলিং করা রয়েছে। উপর থেকে শহর দেখতে ভালোই লাগছিল।
মিউজিয়ামের নিচে ক্যান্টিন ছিল। ক্যান্টিনে গিয়ে আমরা নাস্তা করে নিলাম। লুচি, সবজি আর ডিম। শেষে চা। ঐখানে কিছুক্ষণ থেকে রওনা দিলাম পরবর্তী স্পপ্টে। উমিয়াম লেকে। উপর থেকেই লেকটা দেখলাম। নিচে নামা হয়নি। পানি খুব একটা ছিল না লেকে।
এরপর গেলাম গলফ ক্লাবে। চারদিকে সবুজ ঘাস। ঘাসের গালিচা। শুয়ে থাকতে ইচ্ছে করছিল। কিছুক্ষণ এখানে থেকে গেলাম ওয়ার্ডস লেকে।
লেকে ঢুকতে ১০ রুপি। ক্যামেরার জন্য ২০ রুপি। লেকের পানি তেমন একটা সুন্দর না। চার পাশে বসার জায়গা আছে। বসে আড্ডা দেওয়ার জন্য দারুণ।
লেক থেকে রওনা দিলাম হোটেলের দিকে। তখনো বিকেল। সবাই ফ্রেস হয়ে রওনা দিল শপিং করতে। আমার আর বের হতে ইচ্ছে করছিল না। শপিং ও করতে ইচ্ছে করেনা খুব একটা। ক্যারি করার ভয়ে। আমি ঘুমিয়ে নিলাম। রাতে উঠে খেতে বের হলাম। সবাই মিলে প্ল্যান করল পিজ্জা খাবে। কাছেই ছিল পিজ্জা হাট। সবাই মিলে বসে পিজ্জা খেয়ে নিলাম।
খাওয়া শেষে এসে ঘুম। বাকিরা আর্জেন্টিনা এবং ক্রোশিয়ার খেলা দেখছিল। খেলা শেষে এসে যখন জানালো আর্জিন্টিনা ৩ গোলে হেরেছে, তখন মনে হচ্ছিল আমি ঘুমে, স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু বাস্তবতা নির্মম!
চতুর্থ দিন
সকালে ঘুম থেকে উঠে হোটেলেই নাস্তা করে নিলাম। অমলেট স্যান্ডুইস। খাওয়া শেষে ব্যাগ প্যাক করে রওনা দিলাম ঘুরতে। আজ আমাদের শেষ দিন এখানে।
আমাদের গন্তব্য হচ্ছে কারাং সুরি ওয়াটার ফল। এটা ডাউকি পোর্টের কাছা কাছি। গত তিন দিন কোন বৃষ্টি হয়নি কিন্তু আজ অনেক বৃষ্টি হচ্ছে। মাঝে মাঝে মেঘ। মেঘের জন্য সামনে কিছুই দেখা যায় না, এমন। মেঘের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা।
কারাং সুরি এখানে একই সাথে লেক ও রয়েছে। এখানে তাবু টাঙানো রয়েছে। কেউ ইচ্ছে করলে এখানে রাতে থাকতে পারে। কিছুক্ষণ পর এখানেও বৃষ্টি শুরু হলো। ছাউনি ছিল। ছাউনিতে বসে বসে বৃষ্টি দেখলাম। এরপর উপরে উঠে এলাম।
উপরে এখানে খাবারের হোটেল রয়েছে। যাওয়ার সময় আমাদের জন্য খাবার তৈরি কররে বলে গেলো। আমরা এসে খেয়ে নিলাম। মাছ অথবা মুরগি, সালাদ, আলু ভাজি দিয়ে।
এরপর রওনা দিলাম সোনাং পেডাং গ্রামে। এটা ডাউকি বর্ডারের কাছাকাছি। এখানে একটা ঝুলন্ত ব্রিজ রয়েছে। নিচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছিল স্বচ্ছ পানি। পানিতে নেমে গোসল করলাম। এরপর রওনা দিলাম বর্ডারের দিকে। আমরা প্রায় ১৮ জনের একটা টিম ছিলাম। পুরো ট্যুরে আমাদের সাথে তিনটি টাটা সুমো সাথে ছিল। এগুলোতে করে পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখেছি।
বর্ডারে এসে প্রথমে ইন্ডিয়ান পাশে ইমিগ্রেশন শেষ করলাম। এরপর বাংলাদেশ অংশে। বাংলাদেশ পাশে এরাইভাল সীল নেওয়ার জন্য ১৫০ টাকা স্পীড মানি দিতে হচ্ছিল নাকি। স্বাগতম বাংলাদেশে!
ইমিগ্রেশন শেষ করে একটা বাস রিজার্ভ করে আমরা রওনা দিলাম সিলেটে। তখন ব্রাজিলের খেলা হচ্ছিল। প্রথম ৯০ মিনিট ভালোই ছিল। কোস্টা রিকা কত লাকি ছিল। কত গুলো গোল হতে পারত, কিন্তু হয়নি। পরের ৬ মিনিটে একটু কষ্ট পেয়েছি।
সিলেট এসে আমরা নামলাম পানসীর সামনে। রাতের খাবার খাওয়ার জন্য। ভর্তা, মাংস দিয়ে খুব ভালো একটা খাবার খেয়ে রওনা দিলাম গ্রীন লাইন কাউন্টারে। বাকি সময় ঐখানে বসে কাটালাম। ১২টার দিকে রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। পরের দিন সকালে বাসায় ফিরলাম আরেকটা সুন্দর ট্যুর শেষ করে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া সব কিছু সুন্দর ভাবে শেষ হওয়ার জন্য।
ট্যুর ভিডিওঃ
পড়তে পড়তে আবার ঘুরে চলে আসলাম!ধন্যবাদ!
লেখাটা সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন তাই ধন্যবাদ। অনেক ভালো লাগলো।
ভাই খরচাপাতির ব্যাপারে একটু লিখলে ভাল হত