সাম্প্রতিক সময়ে সব কিছুই রিফর্ম হচ্ছে বা রিফর্ম করার চেষ্টা হচ্ছে। এর পরিপেক্ষিতে কয়েকদিন আগে TIPAP থেকে আলোচনার আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রযুক্তি রিলেটেড অনেক সেক্টরের লোক ছিল। ফ্রিল্যান্সারদের পক্ষ থেকে আমরা কয়েকজন ছিলাম। আজ আবার BACCO তে ফ্রিল্যান্সারদের নিয়ে কিভাবে কাজ করা যায়, ফ্রিল্যান্সারদের কি কি সুবিধা নিশ্চিত করা উচিৎ, এসব নিয়ে আলোচনা করা হয়। আমরা বেশ কয়েকজন ছিলাম। ইমরাজিনা আপুকে ধন্যবাদ আমাদের ইনভাইট করার জন্য।
দুইটা আলোচনাতেই ইনসেন্টিভ নিয়ে কথা উঠে। ফ্রিল্যান্সাররা ইনসেন্টিভ পাচ্ছে না, এসব নিয়ে কথা উঠে। দুইটা যায়গাতেই আমি বলেছি আমাদের ইনসেন্টিভ দরকার নেই। আমাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচার দরকার। অনেকেই দ্বিমত করতে পারেন। আমি আমার পয়েন্ট গুলো ইনশাহ আল্লাহ ব্যাখ্যা করছি।
ইনসেন্টিভের যে নিয়ম বাংলাদেশ সরকারের, তা হচ্ছে রেমিট্যান্স আসলেই 2.5% পাওয়ার কথা। কিন্তু পাচ্ছে না অনেকেই। কয়েকজন হয়তো পাচ্ছে। কিন্তু আমরা পাচ্ছি না। এর মানে এমন না যে ইনসেন্টিভ গুলো সরকার থেকে নেওয়া হচ্ছে না। আমার কাছে তথ্য নেই। তাই আমি সত্যতা নিশ্চিত করতে পারছি না। তবে অনেককেই বলতে শুনি বিভিন্ন মাধ্যম এই ইনসেন্টিভ গুলো তুলে নেওয়া হয়। অথেনটিক নিউজ থাকলে কাইন্ডলি জানাতে পারেন।
আমরা ইনসেন্টিভ পাচ্ছি না, এটা নিয়ে আমার মাথা ব্যথাও নেই। সরকার যে কোন সময় ইনসেন্টিভ বন্ধ করে দিতে পারে। এটা কোন পার্মানেন্ট সলিউশনও না। কিন্তু আমি যা চাই, তা হচ্ছে ট্যাক্স মওকুফ। আইটি এনাবল সার্ভিসে এখন ২০২৬ পর্যন্ত কর মওকুফ করা হয়েছে। এখন আমরা যারা ফ্রিল্যান্সার বা বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স নিয়ে আসি, তাদের কোনটা বেশি জরুরী? আড়াই বা চার পার্সেন্ট ইনসেন্টিভ নাকি ইনকামের উপর ভিত্তি করে ৩০% পর্যন্ত ট্যাক্স দেওয়া? আপনি যদি আপনার ভয়েস রেইজ করেন আমি কেনো ইনসেন্টিভ পাচ্ছি না, তখন আবার আরেকটা ভয়েজ্জ রেইজ করতে হবে রেমিট্যান্সে কর মওকুফের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য। ডিভাইড না হয় শুধু একটা ভয়েসই রেইজ করুন। আমাদের যেনো রেমিট্যান্সের উপর কর মওকুফের সময়সীমা বাড়ানো হয়।
ইনসেন্টিভ যখন দেওয়া হয়, তখন তা সরকারের সংগ্রহকৃত ট্যাক্স থেকেই দেয়। এই ইনসেন্টিভ যে পাওয়ার, সে পায় না। পেপারওয়ার্ক করে অনেক ভাবেই এই ইনসেন্টিভ অন্যরা বের করে নেয়। সরকারের যখন দেওয়ার মত টাকায় টান পড়বে, ঠিকই অন্য খাতে ট্যাক্স বসিয়ে দিবে। এই জন্যই আমার সহজ হিসেব। আমাদের ইনসেন্টিভ দরকার নাই। তার পরিবর্তে আমাদের রেমিট্যান্সের উপর কর অব্যাহতির সময়সীমা বাড়ানো হোক। সর্ট টাইম লাভ দেখতে গিয়ে যেনো আমরা লংটাইম লসে না পড়ি, তাও দেখতে হবে আমাদের।
ইনসেন্টিভ যদি সরকার দেয়, তা পাওয়া নাগরিক অধিকার। কেনো পাচ্ছে না সবাই, এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা জরুরী। তবে তার থেকে বেশি জরুরী ইনকাম করার ব্যবস্থা করা। যেমন বাংলাদেশে পেপাল নেই। ইন্টারন্যাশনাল কোন পেমেন্ট গেটওয়ে নেই। অনেককেই নিজেদের প্রোডাক্ট সেল করার জন্য বিদেশে কোম্পনি খুলতে হয়। যার জন্য ঐ দেশে ট্যাক্স ফাইল সাবমিট করতে হয়। এক্সট্রা খরচ হয়। আবার দেশে ঐ উপার্জিত অর্থ আনাও অনেক ক্ষেত্রে ঝামেলার। অনেক গুলো চ্যানেল পাড়ি দিয়ে আনতে হয়। এক চ্যানেল থেকে অন্য চ্যানেলে টাকা পাঠাতে এই 2.5% বা 4% থেকে বেশি অপচয় হয়। তো এসব কারণেই আমি বলি। আমাদের ইনসেন্টিভ থেকে ইনফ্রাস্ট্র্যাকচার বেশি জরুরী। ইনসেন্টিভে ফোকাস দেওয়া থেকে ইনফ্রাস্ট্রাকচারে ফোকাস দেওয়া বেশি জরুরী।
এছাড়া আমরা দেখেছি ইন্টারনেট শাটডাউন ছিল পুরা দেশে। অনেকেই ক্লায়েন্ট হারিয়েছেন। অনেকেই জব হারিয়েছেন। অনেকেই বিশাল লসে পড়েছেন। অনেকে আবার লক্ষ টাকা খরচ করে বিদেশে চলে গিয়েছেন। এমন না যে শুধু আইটি রিলেটেড কোম্পানি গুলোরই ক্ষতি হয়েছে। গার্মেন্টস থেকে শুরু করে ইম্পোর্ট, এক্সপোর্ট বিজনেসের মত আরো অনেক বিজনেসেরই ক্ষতি হয়েছে। তো কোনটা দরকার? স্টারলিংক এর মত বিকল্প ইন্টারনেট খুবি জরুরী না আমাদের? বিগার ফিকচার দেখতে হবে আমাদের।
আমি একা এই বিষয় গুলো নিয়ে কথা বললে কখনোই সমাধান হবে না। আবার যারা নিজেরা বিদেশে কোম্পানি ওপেন করে বিজনেস করা শুরু করেছে, তারাও আমার আপনার হয়ে কথা বলবে না। তাদের সময়ের অপচয়। আপনার যদি এই সার্ভিস গুলো লাগে, পেমেন্ট গেটওয়ে লাগে, আপনাকেই ভয়েস রেইজ করতে হবে। কথা বলুন। ইনশাহ আল্লাহ ইফ্রাস্ট্রাকচার রেডি হবে। আইটি পার্ক থেকে আমাদের পেপালের মত সার্ভিস বেশি জরুরী। ইনসেন্টিভ থেকে পেমেন্ট গেটওয়ে বেশি জরুরী। দেখবেন ইনশাহ আল্লাহ একাধিক উপায় টাকা উপার্জন করার পথ খুলবে। তখন ৪% নয়, ইনশাহ আল্লাহ ৪০০% বা ৪০০০% এরও বেশি রেভিনিউ জেনারেট করতে পারবেন।