বিদেশে উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে অনেক আগে থেকেই আগ্রহ ছিল। সামহোয়ারইন ব্লগে উচ্চশিক্ষা নিয়ে যত ব্লগ পোস্ট পেয়েছি, সব গুলো একে একে পড়ে ফেলেছি। অনেক আগেই, ২০১০ এর দিকে। তখন মাত্র সাউথইস্টে ভর্তি হয়েছি। ইন্টারনেটের সাথে তার কিছুদিন আগেই যুক্ত হয়েছি। তখন থেকেই একটু আধটু GRE সম্পর্কে জানতাম।
এরপর ক্লাসের পড়ার চাপ বেড়েছে। নিজের পড়ালেখা থাকা খাওয়ার চিন্তা ভাবনা নিয়ে GRE উচ্চশিক্ষা এসব ভুলে গিয়েছি। ইউনিভার্সিটির শেষের দিকে আবার উচ্চশিক্ষার চিন্তা মাথায় উকি দিতে লাগল। চিন্তা করলাম আগে ইউনিভার্সিটি শেষ করি তারপর প্রিফারেশন শুরু করব।
সাউথইস্টে শেষ পরীক্ষা দিয়ে সিলেট থেকে ঘুরে আসলাম। এরপর GRE সেন্টারে গিয়ে ভর্তি হলাম। ক্লাসের প্রথম ক্লাসটিই একটু মনোযোগ দিলাম। ক্লাসে যা বলল তার সব কিছুই লেকচার শিটে রয়েছে।
পরের ক্লাসে গেলাম, বেশিরভাগ সময়ই আমি ঘুমিয়ে কাটিয়েছি। ঐখানে কফি পাওয়া যায়, কফি খেয়ে আবার মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করলাম। দেখি কোন কাজে আসে না। আরো ঘুম আসে।। এভাবে শেষ করলাম।
প্রতি ক্লাসেই একই রকম। মনোযোগ দিতে পারি না। সকালে ঘুম থেকে উঠে ঐখানে গিয়ে ঘুমাই।। পরে আর যেতে ভালো লাগতো না। দুই এক সপ্তাহ পর এক বার যেতাম। গিয়ে লেকচার শীট নিয়ে আসতাম। পরে একবার বলল এভাবে লেকচার শীট দিবে না, ক্লাস করে লেকচার শীট নিতে হবে।।
এরপর ঈদ এলো, ঈদের আগের ক্লাস গুলো মিস করেছি, পরের এক সপ্তাহ ও। বাড়ি থেকে ঠিকই চলে এসেছি। ঢাকায় এসে অলসতা করে বাসায় বসে ছিলাম। ক্লাস করি নি।
শেষ দিকে দুই একটা ক্লাস করেছি। আবার ঘুরতে চলে গেলাম। আবার অনেক গুলো ক্লাস মিস হয়ে গেলো। এ দিকে লেকচার শেষ! দুই দিন আগে গেলাম লেকচার শীট গুলো নেওয়ার জন্য। দেয় নি। মাত্র তিনটা লেকচার শীট দিল। আর দিবে না! ক্লাস করা ছাড়া লেকচারশীট দেওয়ার নিয়ম নেই… এভাবেই GRE সেন্টার থেকে gre এর উপর কোচিং এর সমাপ্তি ঘটেছে।
ঐখানে প্রতি সপ্তাহে একটা করে পরীক্ষা নেওয়া হতো। ওয়ার্ডের উপর। আমি পরীক্ষা দিয়েছি মাত্র একটা ! যদি মনযোগী হতে পারতাম, তাহলে ভালো একটা প্রিফারেশন নিতে পারতাম। কিন্তু মনোযোগ দিতে পারি নি! GRE সেন্টারের পাট চুকিয়ে এখন নিজে নিজে কিছু শেখার চেষ্টা করছি।
হাতে অল্প কয়েক দিন সময় রয়েছে। GRE এক্সাম হচ্ছে নভেম্বরের ৫ তারিখ এ, TOEFL এক্সাম হচ্ছে নভেম্বরের ৮ তারিখ এ।
মনোযোগ দিতে না পারার কারণে কয়েক দিন আগে ফেসবুক ডিএকটিভ করে দিয়েছি। তবে সারাক্ষণই চিন্তা করি, সামনে GRE এক্সাম। এটা আমাকে ভালো একটা জাগায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ দিতে পারে। তাই কিছুই ভালো লাগতো না।
ভালোভাবে প্রিফারেশন নেওয়ার জন্য যা যা লাগে সব করার চেষ্টা করতে লাগলাম। সব কিছু ভালো লাগলেও ওয়ার্ড পড়তে ভালো লাগত না। অসয্য লাগত। সবাই বলে ওয়ার্ড পড়লে ভালো করা যাবে। কিন্তু ওয়ার্ড পড়া পুরাই বোরিং!
একদিন পড়ি তো তিনদিন পড়ি না।
অনলাইনে অনেক গুলো ভিডিও দেখার চেষ্টা করছি। অনেক পালতু ভিডিও তে ভর্তি। কি আর করা। ভালো কিছু ওয়ার্ডের ভিডিও দেখে শেখার চেষ্টা করছি। ওয়ার্ড বই পড়া থেকে ভালো লাগে।
ইউটিউভে অনেক ভিডিও রয়েছে, সে গুলো দেখি। দুই একটা ওয়েবসাইটে সুন্দর সুন্দর কন্টেন্ট রয়েছে সে গুলো দেখি।
কয়েকদিন আগে ঠিক করলাম পড়তে যেতে হলে অ্যামেরিকায়ই যাবো। আর অ্যামেরিকার মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়াতে। ক্যালিফোর্নিয়ায় যে কয়টা ইউনিভার্সিটি রয়েছে, সব গুলোই একদম টপ লেভেলে। চান্স পাওয়ার কোন চান্স নেই। তাই হতাশ লাগে।
হাতে আর অল্প কিছু দিন সময় রয়েছে। GRE তে যদি ভালো করতে পারি, হয়তো চান্স পেতেও পারি। হোপ, আশা। আশা করে আছি। বাকিটা আল্লাহর ইচ্ছে…
নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি, চান্স পাবো তো? উত্তর জানা নেই। তাই খারাপ লাগে। কেউ যদি উৎসাহ দিতো, ভালো লাগতো। সারাক্ষণই ডিপ্রেশন এ ভুগি। CGPA ভয়াবহ খারাপ। মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট এর কাছা কাছি। তারপর ও চেষ্টা করছি… চেষ্টা করে যাই 🙂