একাধিক মেশিন একই কিবোর্ড এবং মাউস ব্যবহার

আমরা যারা একাধিক মনিটরে কাজ করি, তাদের মেশিন একটাই থাকে। তাই কিবোর্ড এবং মাউসও এক সেট। কাজ করতে অসুবিধা হয় না। কিন্তু যদি একাধিক কম্পিউটারে কাজ করতে হয়, তখন একাধিক মাউস কিবোর্ড লাগে। ডিফল্ট ভাবে এক সেট মাউস কিবোর্ড দিয়ে কাজ করা যায় না। অ্যাপল ডিভাইস গুলোতে যদিও ডিফল্ট ভাবে একাধিক মেশিনে কাজ করা যায়। উইন্ডোজ বা লিনাক্সে কাস্টোমাইজ করে নিতে হয়।

আমার প্রাইমারি ওয়ার্কস্টেশন হচ্ছে ম্যাক। কয়েক দিন থেকে পিসিতে কিছু কাজ করতে হচ্ছে। পিসির জন্য আলাদা মাউস কিবোর্ড ব্যবহার করতে হচ্ছে। পরে হাসান যুবায়ের ভাই একটা সুন্দর অ্যাপ সাজেস্ট করল Synergy নামে। যা দিয়ে একই মাউস এবং কিবোর্ড দিয়ে উইন্ডোজ এবং ম্যাক একই সাথে ম্যানেজ করা যায়।

ডুয়াল মনিটর ব্যবহারের সময় যেভাবে এক পাশে মাউস নিলে অন্য পাশের মনিটরে কাজ করা যায়, ঠিক একই ভাবে অন্য মেশিনে কাজ করা যায়। যে জিনিসটার জন্য অনেকে হার্ডওয়ার KVM সুইচ ব্যবহার করে। পরে দেখলাম এটার জন্য একাধিক সলিউশন রয়েছে। সফটওয়ার সলিউশন গুলোকে বলে Software KVM।

অনেকে লজিটেকের MX সিরিজের মাউস এবং কিবোর্ড সাজেস্ট করল। যার জন্য এক্সট্রা বাজেট লাগবে। এছাড়া আমি এমনিতে অ্যাপল মাউস এবং কিবোর্ডে অভ্যস্ত। তাই অন্য কিবোর্ডে সুইচ করতে চাচ্ছিলাম না।

Synergy হচ্ছে পেইড অ্যাপ। ওপেনসোর্স বিকল্প হচ্ছে Barrier, Input Leap ইত্যাদি। আরেকটা অ্যাপ বলল Share Mouse। এগুলো সম্পর্কে পরে জেনেছি। তাই আর ঘাটাঘাটি করিনি। কেউ ফ্রি অল্টারেন্টিভ খুঁজলে এগুলো ট্রাই করে দেখতে পারেন। গতকাল Synergy সম্পর্কে পোস্ট দেওয়ার পর অনেকেই অনেক সলিউশন সাজেস্ট করেছিল। একেক জনের জন্য একেক সলিউশন ভালো স্যুট করবে।

গত রাত থেকে Synergy অ্যাপটা ব্যবহার করছি। সো পার যথেষ্ঠ স্মুথ। কম্পিউটার অফ করে অন করলেও কাজ করে। মানে লগিন স্ক্রিনেও কাজ করে। কপি পেস্ট করা যায় কম্পিউটার গুলোর মধ্যে। আর একটা ফিচার হলে পুরাই জোস হইত। আর তা হচ্ছে ড্র্যাগ এন্ড ড্রপ ফাইল শেয়ার বা ফাইল কপি।

আপডেটঃ Share Mouse ব্যবহার করে দেখলাম। এটাতে ড্র্যাগ এবং ড্রপ ফাইল শেয়ারিং আছে। ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়। Synergy থেকে ভালো মনে হচ্ছে।

যারা ম্যাক ব্যবহার করছে, তারা জানেন উইন্ডোজ এবং ম্যাকে কন্ট্রোল এবং কমান্ড একটু উল্টা পাল্টা। ম্যাকের সাথে সিমিলার কমান্ড ম্যাচ করার জন্য উইন্ডোজে PowerToys অ্যাপ ব্যবহার করে Key Map করে নিয়েছি।

উইন্ডোজের কিবোর্ড গুলোতে ডিলিট কী থাকে। ম্যাকে ব্যাকস্পেস দিয়েই ডিলিটের কাজ হয়। তাই Command + Delete বাটন এ ডিলিট কী ম্যাপ করে নিয়েছি।

আবার উইন্ডোজে এবং ম্যাকে মাউস স্ক্রল উল্টা। তার জন্য উইন্ডোজে মাউস সেটিং এর স্ক্রলিং ডিরেকশন পরিবর্তন করে নিয়েছি।

যেহেতু আমি টুকটাক লেখালেখি করি। বিভিন্ন সময় অনেক স্ক্রিনশর্ট নিতে হয়। উইন্ডোজের ডিফল্ট স্ক্রিনশর্ট নেওয়ার জন্য ডেডিকেটেড বাটন থাকে। অ্যাপল কিবোর্ডে ঐ বাটন নেই। অ্যাপলে স্কিনশর্ট নিতে হয় Shift + Command + 4 কী প্রেস করে। উইন্ডোজে LightShot অ্যাপ ডাউনলোড করে হট কী পরিবর্তন করে Shift + Command + 4 করে দিয়েছি। সো পার এই সমস্যারও সুন্দর সমাধান হয়েছে।

জিজ্ঞেস করতে পারেন কেনো ম্যাকের পাশা পাশি উইন্ডোজ ব্যবহার করা লাগে। তার উত্তর হচ্ছে টুকটাক মেশিন লার্নিং নিয়ে কাজ করছি। ম্যাকে NVIDIA গ্রাফিক্স কার্ড ব্যবহার করা যায় না। মডেল ট্রেইনিং এর জন্য NVIDIA গ্রাফিক্স কার্ড লাগে। দ্রুত মডেল ট্রেইন করা যায় CUDA সাপোর্টের জন্য। আর সব এক্সপেরিয়েন্স স্মুথ করার জন্যই এত কিছু। 😐

টেনসরফ্লো লেটেস্ট বিল্ড গুলো শুধু মাত্র লিনাক্সে কাজ করে। উইন্ডোজে কাজ করে না। WSL ব্যবহার করে উইন্ডোজের ভেতর আবার লিনাক্স রান করা যায় আলাদা করে লিনাক্স সেটআপ না করে। WSL – উইন্ডোজ সাব সিস্টেম ফর লিনাক্স

Leave a Reply