CSE এর জন্য কোন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবো…

লেখাটি শুধু মাত্র কম্পিউটার সাইন্স / কম্পিউটার সাইন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং / সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এসব বিষয়ে পড়তে আগ্রহীদের জন্য। ইউনিভার্সিটি পছন্দ নিয়ে তাদের মধ্যে যে কনফিউশন তৈরি হয়, তা দূর করার চেষ্টা।

আরেকটা কথা, বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে CS, CSE, CSSE এমন অনেক গুলো বিষয় দেখে অনেকেই হয়তো কনফিউসড হয়ে যেতে পারেন কোনটায় পড়ব। মূল বিষয় হচ্ছে কম্পিউটার সাইন্স। অন্যান্য গুলোতে দুই একটা সাবজেক্ট এদিক ঐদিক। আর স্ট্যান্ডার্ড হচ্ছে CSE বা কম্পিউটার সাইন্স এবং ইঞ্জিনিয়ারিং। কম্পিউটার সাইন্স এবং সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং এ হয়তো দুই একটা বিষয় এদিক ঐদিক হবে। ওটা নিয়ে চিন্তা না করলেও হবে। কনফিউসড না হয়ে যে কোন একটা নিয়ে পড়লেই হবে।

কম্পিউটার সাইন্সে ভালো করার জন্য যে জিনিসটা সবার আগে দরকার, তা হচ্ছে আগ্রহ এবং উৎসাহ। আমি ভালো করবই করব, এমন দৃড় বিশ্বাস। স্বপ্ন দেখা।

ভালো করার জন্য দরকার সঠিক গাইডলাইন। ভালো ইউনিভার্সিটি এ জন্যই দরকার। তারা ভালো শিক্ষক নিয়োগ দেয়। নিজেদের সেরাটা তাদের ছাত্রদের দেওয়ার চেষ্টা করে। ভালো ইউনিভার্সিটি বলতে প্রথমে আমরা বুঝি পাবলিক ইউনিভার্সিটি গুলো। সেখানে প্রয়োজনের তুলনায় সিট অনেক কম। অনেএএক কম।

নিজের স্বপ্ন, প্রচুর আগ্রহ থাকলেও তাই ভর্তি যুদ্ধে অনেকেই টিকতে না পেরে হয়তো অন্য বিষয় নিয়ে পড়ে বা প্রাইভেটে পড়ার চিন্তা করে।

বাংলাদেশে প্রায় সকল প্রাইভেট ইউনিভার্স্টিটিতে কম্পিউটার সাইন্স বিষয়টি রয়েছে। এমনকি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারেও অনেক গুলো কলেজে পড়া যায়। আর এখানেই কনফিউশন। কোথায় পড়ব?

প্রাইভেটে পড়ার জন্য যেটা দরকার তা হচ্ছে পর্যাপ্ত আর্থিক ব্যাকআপ। যে সব ইউনিভার্সিটি গুলো ভালো বলে জানি, সেখানে পড়ার জন্য খরচ ও বেশি। এখন আপনার আর্থিক ব্যাকআপ থাকলে অবশ্যই ভালো ইউনিভার্সিটিতে পড়ার চেষ্টা করবেন। মানষিক প্রশান্তি বলে একটা কথা আছে। আমি ভালো যায়গায় পড়ছি। আমার দ্বারা ভালো কিছু করা সম্ভব হবে… ইত্যাদি…

অনেকেই মনে করে ভালো ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট একটু বেশি ভারি… জব করার ক্ষেত্রে কাজে দিবে। অন্য কোন বিষয়ে হয়তো এটা সত্য। কম্পিউটার সাইন্সে এসে এটা ভুল ধারণা।

কম্পিউটার সাইন্সে যেটা দরকার, তা হচ্ছে স্কিল। প্রোগ্রামিং করার দক্ষতা। প্রোগ্রামিং সম্পর্কিত সমস্যা গুলো সমাধাণ করার দক্ষতা। বিভিন্ন অ্যালগরিদম সম্পর্কে ধারণা, সফটওয়ার আর্কিটেকচার সম্পর্কে ভালো ধারণা। ইত্যাদি ইত্যাদি। এসব কিছু সার্টিফিকেটে লেখা থাকে না। সার্টিফিকেটে শুধু আপনার CGPA লেখা থাকে। আর ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনার CGPA দেখবে না, দেখবে আপনার দক্ষতা গুলো। আপনি কি কি জানেন, তা।

কম্পিউটার সাইন্স দারুণ একটা বিষয়। এখানের প্রায় সব কিছুই খুব দ্রুত পরিবর্তন হয়। তাই অনেক এক্সাইটিং। এ ছাড়া ভালো স্কিল নিয়ে বের হতে পারলে রয়েছে দারুণ ক্যারিয়ারের হাতছানি। ইচ্ছে থাকলে নিজ পছন্দের ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে যেতে পারেন। যে কোন একটা। ৪ বছর পর ইউনিভার্সিটি খুব একটা ম্যাটার করবে না। যা করবে, তা হচ্ছে আপনি কয়টা প্রোগ্রামিং কন্টেস্টে অংশগ্রহন করেছেন, অনলাইনে বিভিন্ন সাইটে কয়টা প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধান করেছেন, আপনি কি কোন রিয়েল লাইফ প্রজেক্ট তৈরি করেছেন কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। তো এগুলো ইউনিভার্সিটির উপর নির্ভর না। এমন কি এসব ইউনিভার্সিটিতে না পড়েও করা যায়। এ জন্যই কেউ ডাক্তার হয়েও সফটওয়ার ইঞ্জিনার হিসেবে জব করতে পারে, কেউ কেউ কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াও সফটওয়ার ইঞ্জিনার হিসেবে ভালো কম্পানিতে চাকরি করতে পারে।

ইউনিভার্সিটি গুলো আপনাকে গাইড করবে, এটা এটা শিখ, এভাবে এভাবে শিখ। এর বেশি কিছু না। একটুও না। আর সমস্যায় পড়লে স্যারদের সাহায্য পাবেন। এখন আপনার যদি আগ্রহ থাকে, মুক্ত জ্ঞানের এই পৃথিবীতে আপনার শেখা কেউ থামিয়ে রাখতে পারেব না। সব জ্ঞান এখন সবার জন্য উন্মুক্ত। দরকার উন্মুক্ত জ্ঞানের সাথে যুক্ত হওয়া। দরকার একটি কম্পিউটার আর একটি ইন্টারনেট কানেকশন। এরপর আপনি জানার জন্য প্রস্তুত। প্রস্তুত নিজের স্কিল ডেভেলপ করার জন্য।

নাহ! CGPA ও একটু দরকার। কেমন দরকার তা বলি, যখন কোন জবের জন্য অনেক গুলো এপলিকেশন পড়ে, তখন সর্ট করার জন্য লো CGPA গুলো ছাটাই করা হয়। কারণ ইন্টারভিউ বোর্ডের তো এত সময় নেই সবাইকে ডাকার। তাই আবার CGPA বেশি খারাপ হলে সাধারণ জব গুলোতে সমস্যা হয়ে যেতে পারে।

আর অসাধারণ জব? সে গুলোতে CGPA ও লাগে না। যেমন কম্পিউটার সাইন্সে যারা পড়ে, তারা স্বপ্ন দেখে একদিন তারা গুগলে জব করবে। আর গুগলে জব করার জন্য বা ফেসবুকে জব করার জন্য CGPA লাগে না। কোন ইউনিভার্সিটি তাও না। প্রতি বছর হ্যাকাথনের আয়োজন করা হয়ে থাকে। ঐ হ্যাকাথনে যারা ভালো করে, তাদেরকে ইন্টারভিউর জন্য ডাকে, আর এভাবেই তাদের জব হয়ে যায়। এটা শুধু একটা পদ্ধতি, আরো অনেক ভাবেই তারা ইমপ্লোয়ি নেয়। আমি শুধু লেখার সাথে রিলিভেন্টটা বলার চেষ্টা করেছি…

এর থেকে অসাধারণ কিছু? কেন নয়! কেন স্বপ্ন দেখি না গুগল, ফেসবুকের মত কিছু একটা নিজেরাই করব? কেন চিন্তা করি না Linus Torvalds এর মত অসাধারণ কিছু আমিও করব না। কেন চিন্তা করি না Dennis Ritchie মত তৈরি করে যাবো পৃথিবীর জন্য দারুণ কিছু। জব না করে বিল গেটস, স্টিভ জবস বা বর্তমানের থমাস এডিসন হব না?

মানুষ যা স্বপ্ন দেখে, স্বপ্ন নিয়ে কাজ করে গেলে সবই সম্ভব। অসম্ভব নয় কোন কিছু 🙂

14 thoughts on “CSE এর জন্য কোন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হবো…”

  1. ভাইয়া আপনার সাহায্যে প্রাথী। আমি একজন মিডেল ক্লাস পামেলির ছেলে। কিন্তু আমি CSE পড়তে চাই। ভাল কিছু করতে চাই। সল্প খরছে আমি কোন university তে পড়ে ভাল কিছু করতে পারবো। প্লিজ হেল্প করেন। আপনার নাম্বার লিখে আমাকে মেইল করলে খুব উপক্রিত হবো। কারন আমাকে হেল্প করার জন্য আমার আশে পাশে কেউ নেই।

    Reply
    • কয়েকটা ইউনিভার্সিটিটে গিয়ে পরিবেশ + ওদের কারিকুলাম দেখে নিন। এরপর কোনটা আপনার উপযোগী, তাতে ভর্তি হয়ে যান।

  2. ভায়া আমি একটা গরিব পরিবারের ছেলে, আমার স্বপ্ন আমি সফটয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হবো, আমি এখন ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারে শেষ বর্ষে পড়ি, শেষ হওয়ার পর ইচ্ছা আছে একটা জব করবো এবং একটা ভালো বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ব ,ডুয়েট ভার্সিটিতে পড়ার ইচ্ছা আছে, কিন্তু চাঞ্চ যদি না পাই তবে private কোন ভার্সিটিতে পড়লে ভালো হবে, plz একটু যানাবেন ??

    Reply
  3. ভাইয়া, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমার একটুহলেও উপকারে আসলো।

    Reply
  4. আর্টিকেলটা পড়ে কষ্টে বুকটা ভারি হয়ে গেল। সিনিয়র হিসেবে দোয়া রাখবেন ভাই যেন সি.এস.ই নিয়ে পড়তে পারি।

    Reply

Leave a Reply