স্মার্ট অ্যাপ বলতে স্মার্ট ফোন গুলো যেমন এন্ড্রয়েড, আইওএস, উইন্ডোজফোন ইত্যাদির অ্যাপের কথা বলছি।
কোন এক সময় ডেস্কটপ সফটওয়ার এর চাহিদা বেশি ছিল। এখনো আছে। কিন্তু স্মার্টফোন আসার পর থেকে এই ফিল্ডকে হারিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করে নিয়েছে মোবাইল অ্যাপ। ২০০৫ সালেই পিসি থেকে স্মার্টফোন সেল বেশি হয়ে আসছে। আর এখন তো ২০১৪ শেষ হচ্ছে। অ্যাপের স্ট্যাটিসটিক্স মাথা খারাপ করার মত। আগে প্রত্যাক বাসায় একটা করে কম্পিউটার থাকতো। আর এখন পিসির পাশাপাশী এক একটা মানুষের কাছেই কয়েকটা করে স্মার্ট ফোন। তাই স্মার্ট ফোন রয়েছে পিসি থেকে কয়েক গুন বেশি। সাথে রয়েছে ট্যাব। ট্যাব এবং স্মার্টফোন একই ওএস দিয়ে চলে। সাফোর্ট করে একই অ্যাপ। স্মার্ট ফোন + ট্যাব = বর্তমান + ভবিষ্যৎ।
ব্যবহারের কথা যদি বলি, পিসি ব্যবহার করতে হয় কোথাও বসে। ল্যাপটপ গুলোও ব্যবহার করতে স্থির হয়ে কোথায় বসতে হয়। স্মার্টফোন গুলো সব সময়ই পকেটে থাকে। যে কোন সময়ই পকেট থেকে বের করা যায়। যে জিনিস যত বেশি ব্যবহার হবে, সেখানে রেভিনিউর তত বেশি স্কোপ। কেমন তা বলি, এডভার্টাইজরা আগে এড দিত টিভি এবং পত্রিকাতে। কিন্তু এখন কে টিভির সামনে বসে থাকে, কে পত্রিকাটি ঠিক মত পড়ে? সবাই অনয়ালাইনেই টিভি দেখার কাজ এবং পত্রিকা পড়ার কাজ করে নিচ্ছে। আর তাই এডভার্টাইজাররা সব অনলাইনেই নিজেদের প্রচারের কাজ করছে।
এডভার্টাইজাররা অনলাইনে ঝুঁকে আসার পর পরই শুরু হয়ে গিয়েছিল স্মার্টফোন বিপ্লব। সবাই যেহেতু এই ফোনে সময় বেশি দিচ্ছে, তাই তারা ভিন্ন ভিন্ন ভাবে নিজেদের প্রচারের কাজে ব্যবহার করছে। এডভার্টাইজারদের কথা এখানে বলছি কারণ হচ্ছে রেভিনিউ। আমাদের ধারনা থাকার কথা টিভি, পত্রিকা গুলো কেমন রেভিনিউ জেনারেট করে এই এড দিয়ে।
কিন্তু এখন যেহেতু সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার করে, তাই এখন এখানেই রেভিনিউ জেনারেট করার স্কোপ সবচেয়ে বেশি। অনেক অনেক বেশি।
টিভি বা একটা পত্রিকা [অনলাইন হোক আর অফলাইন] অনেক বেশি ইনভেস্ট করতে হয়। দরকার অনেক লোকবল। কিন্তু একটা অ্যাপ এর কথা চিন্তা করলে বলা যায় নিজে নিজেই একটা সুন্দর আইডিয়া দিয়ে সুন্দর একটি অ্যাপ তৈরি করা যায়। আর আইডিয়া সুন্দর হলে এবং তা মানুষের কাজে আসলে অনেক ভাবেই রেভিনিউ জেনারেট করা যায়। সব চেয়ে কমন দুইটা পদ্ধতি হচ্ছে অ্যাপটি বিক্রি করা। আর না হয় আপের মধ্যে এড দেওয়া। দুই ভাবেই স্মার্ট রেভিনিউ জেনারেট করা যায়। আমরা ফ্লাপি বার্ড এর কথা শুনেছি, অনেকে খেলেছি। ঐ ছোট্ট গেমটি প্রতিদিনে প্রায় ৫০ হাজার ডলার ইনকাম করত। আলাদীনের চেরাগের মত! এটা একটা উদারহন মাত্র। হাজার উদাহরণ দেওয়া যাবে। এক রাতে ১২ বছরের একটা বাচ্চা মিলিয়নিয়ার হওয়ার গল্প ও রয়েছে এই অ্যাপ এর মাধ্যেমে। রাতে অ্যাপ সাবমিট করে ঘুমুতে গিয়েছিল, সকালে উঠে দেখে হিউজ সেল। এভাবেই…
২০১২ তে অ্যাপ মার্কেটের ভ্যালু ছিল $10 বিলিয়ন ডলার। যার গ্রোথ ১০০%। এখন যা ১০০ বিলিয়ন এই মার্কেটের ৫% বাংলাদেশে আনতে পারলে আমাদের ন্যাশনাল বাজেট থেকে বেশি হবে। আনতে পারাটা কঠিন নয়। দরকার সবার চেষ্টা। নিজ নিজ স্থান থেকে ভালো করে অ্যাপ ডেভেলপ করা, মানিটাইজ করা। নিজের জন্যই। মার্কেটটা বিশাল। নিজের জন্য কাজ করে যাবেন। এক নিজের অজান্তেই দেশেরও উপকার হবে। দেশের জন্য কাজ করা গর্বের নয় কি? এখন তো বিজয়ের মাস। নিজের জন্যই শুরু করুন, একটু পড়ালেখা। নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে…
এ ছাড়া কোন প্রতিষ্ঠানের জন্য অ্যাপ তৈরির রয়েছে বিশাল সুযোগ। আজ কাল প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের একটি ওয়েব সাইটের পাশা পাশী একটি অ্যাপ ডেভেলপ করে নিচ্ছে। তা ছাড়া বিজনেস যারা করে, তারা সব কিছু চায় নিজেরা দেখা শুনা করতে। তাই যারা বিজনেস করে, তারা যদি তাদের বিজনেসের সকল আপডেট নিজ মোবাইলে বা ট্যাবে পেয়ে যায়, দারুণ হয় তাদের জন্য। প্রোডাক্টিভিটি বেড়ে যাবে তাদের। শুধু একটা অ্যাপই পারে তা করতে। দরকার ডেভেলপারের। হাতছানি দিচ্ছে আপনাকে.
কোন কিছু তৈরি করার মধ্যে আনন্দ রয়েছে। অনেক বেশি আনন্দ। শুধু যে রেভিনিউ এর জন্যই অ্যাপ ডেভেলমেন্ট, তা নয়। অ্যাপ নিয়ে কাজ করা, নিজের ইচ্ছে মত করে কিছু করা যথেষ্ঠ আনন্দদায়ক।
অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট কঠিন নয়, সহজ। লার্নিং কার্ভটা একটু বেশি, এই যা। ঠিক মত শিখে একবার শুরু করলে পেছনে তাকাতে হবে না একটি বারের জন্য ও। শুরু করতে হবে, শুরু করাটাই কঠিন। একটা, শুধু একটা অ্যাপ হিট হলেই স্বপ্নটাই পরিবর্তন হয়ে যাবে। নতুন করে স্বপ্ন দেখাবে, নতুন লক্ষ্যে। হিট না হলেও সমস্যা নেই, ব্যবহার উপযোগী হলেই স্মার্ট একটা রেভিনিউ আসতে থাকবে। যাকে বলা যায় রয়াল রেভিনিউ। শুভ কামনা এবং স্বাগতম অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে।
বিদ্রঃ ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে সবাইকে এক সময় স্বপ্ন দেখানোর চেষ্টা করেছি। অনেকেই না শিখেই কাজ খোঁজে হতাশ হয়েছেন। অনেকেই মার্কেটপ্লেস নষ্ট করার মত কাজ করেছেন। তাই নতুনদের বলব, দয়া করে ভেবে চিন্তে, এই বিষয়ে আগ্রহী হলে প্রয়োজনীয় সময় হাতে নিয়ে শেখা শুরু করুন।
এ সম্পর্কিত দুটি লেখাঃ
# হতে চাইলে মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপারঃ http://jakir.me/1414 [কালের কণ্ঠে প্রকাশ হয়েছিল]
# এসো, কোড লিখি। কোডিং করতে শিখি। http://jakir.me/1734
inapired
Darun laglo
পেলানটি দেখে বালো লাগলো