পথে আমি নামতে চাইনি। নামতে হয়েছে। হাঁটতেছি তো হাঁটতেছি। হাঁটতে হাঁটতেই নতুন অনেক গুলো মুখ দেখি। দেখি অনেক নতুন নতুন বস্তু। নতুন জায়গা। নতুন সবই নতুন… হাঁ সবই নতুন। কারন পুরাতন হয়ে গেলেই আবার নতুন কিছুর জন্য ছুঁটে যাই… ছুঁটতে ছুঁটতেই হোঁচট খাই। আবার উঠে দাঁড়াই। আবার দৌঁড় দি… এভাবেই চলছে। পথে নতুন দেখা কারো সাথে দেখা হলেই কথা বলার চেষ্টা করি। কথাও বলি। আবার কেউ কেউ কথা বলতে চায় না। কারন তাদের অনেক কাজ। কথা বলার সময় নেই। কেউ আবার আমার থেকে অনেক বড়। এত ছোট আমির সাথে তো তাদের কথা বলা মানায় না। কেন তারা আমার সাথে কথা বলবে? তাদের কিসের গরজ?
পথ চলতে চলতে যখন কাউকে কাউকে পাইনা তখন নিজে নিজে কথা বলি। কথা বলি আর পাগলামি করি। কারন কি জানেন? ওহ! বলতেই ভুলে গেছি। জানবেন কিভাবে। চুপি চুপি বলে রাখি, কাউকে জানাবেন না। কারনটা হল আমি একটা ছোট খাট পাগল।। হি হি হি…. কাউকে বলবেন না বলছিলেন, ঠিক আছে তো?
পথে যখন নামছি তখন ও আমি জানি না আমি কেন নেমেছি। কারন আমাকে জানানো হয় নি। আজ অনেক গুলো বছর হয়ে গেলো। এখন ও আমি জানি না। কারন আমাকে জানানো হয় নি। তবে একটা কিছু আমাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে সামনে যেতে হবে। পিছনে আর তাকাতে পারব না। কিন্তু আমাকে পিছনে তাকাতে হয়। কারন কি জানেন ? আবারো ভুল হয়েছে। আমি তো এবার ও বলি নি। কারন হচ্ছে পেছনে আমি অনেক গুলো অতীতকে রেখে আসছি। তাদের ছাড়া তো আমি সামনে যেতে পারি না। তাইতো আমি বার বার পিছনে ফিরে আসি। থেকে যেতে চাই আমার অতিতে। কিন্তু অতীত আমাকে আর রাখতে চায় না। দূরে সরিয়ে দেয়। তাই আবার সামনে এগিয়ে যাই। আবার ও ভুল, নাহ! আমাকে যেতে হয়… আবারও নতুন কিছুর জন্য আমি ছূটে যাই।
গন্তব্য সম্পর্কে এখন ও জানি না। জানি না… কিছুই জানি না। কেউ কি তার সামনের পথ সম্পর্কে জানতে পারে? তা কিভাবে জানতে পারে? এসব প্রশ্ন প্রায় সময়ই আমি ভাবি। আমি কেন সামনে যাবো? কেন আমি এখানেই থাকতে পারি না? সামনে না গেলে কি হবে… আরো অনেক গুলো প্রশ্ন।
একটু গেলেই দেখি ঐ তো আমার গন্ত্যব্য। পাশের সবাই ও তাই বলে। বলে যে ঐখানে যেতে পারলেই হবে। কিন্তু ঐ খানে যেতে পারলে বলে নাহ!! আরো সামনে যেতে হবে। আর একটুহ!! আমি দৌঁড় দি। ছূটে যাই সামনে। কিছুক্ষন পরই হাঁপিয়ে উঠি। তখন একটুর জন্য বিশ্রাম নি। হাঁ, আমাকে বিশ্রাম নিতে হয়। কারন আমি তো মানুষ।। আর মানুষ বলেই তো নাকি আমাকে সামনে যেতে হবে। অন্য কোন প্রানীকে নাকি সামনে যেতে হয় না।।
কিছুক্ষন পর আমি দেখি সব অন্ধকার। আগে আমার পাশে অনেক গুলো মানুষ ছিল। ছিল কি সুন্দর পরিবেশ। সব কিছু সহজেই পাওয়া যেত। যা চেতাম তাই পেতাম। কোন পথে যেতে হবে তাও পাশের মানুষেরা বলে দিত। কিন্তু আমি এখন কোথায় এসে পড়লাম? আমার পাশের ওরা কোথায়? সবাই আমাকে ছেড়ে কোথায় চলে গেল? নাকি আমিই সবার পাশ থেকে হারিয়ে গিয়েছে? আমি তখন চিৎকার করে কান্না করি।। কেউ শুনতে পায় না আমার কথা। কেউ না… আমি ভীষন একা হয়ে উঠি।। ভীষন একা।।
কান্না করে দেখি কিছুই হবে না, তখন আবার উঠে দাঁড়াই। অন্ধকারে কোন পথ ঠিক মত দেখা যায় না। তার পর ও অনেক গুলো পথ থেকে একটা পঁথ বেছে নি। অনেক দূরে চলে যাই। তার পর ও দেখি অন্ধ কার কাটে না। সব কিছু আগের মত। তখন ভাবি নতুন পথে আমাকে যেতে হবে। নতুন পথে নেমে আবার দূর্দান্ত বেগে ছূটে যাই সামনে।। কিছু দূর পরেই দেখতে পাই একটূ আলো। আমার বেগ বেড়ে যায়। হাঁ। আগের থেকেও দ্রুত ছূটে যাই সামনে।। কিন্তু গিয়ে দেখি ঐখানে কিছুই নেই। ছোট একটা বাতি নিভু নিভু করে জ্বলছিল। আমি যেতে যেতে পুরিয়ে গেছে। আবার ও আমি ছূটে যাই। নতুন আলোর জন্য… আবার দেখি আলো। আবারও আগের থেকে বেশি দ্রূত বেগে ছূটে গিয়ে দেখি বাতি নিভে গেছে… আমি থামি না। হতাশ হয়ে যাই মাঝে মাঝে। তার পরও ছূটে যাই। ছূটে যাই ঐ সামনের আলো টুকুর জন্য… আমার অজানা গন্তব্যে …
বহুত প্লান করি সামনে যাবার…কিন্তু কিছুতেই পারি না!