মিহানের গল্প

নতুন জামার গন্ধই অন্য রকম, ঐ গন্ধের ঘ্রাণ নেওয়ার জন্য এক সপ্তাহ পর্যন্ত ঐ জামা গায়ে দিয়ে থাকা যায়। মিহান এর অনেক দিন নতুন জামা কিনা হয় না, তাই বলে কিনা যাবে না এমন নয়। আজ কিনতে হবে। কারণ আজ রিমি আসবে।

রিমির সাথে কলেজের প্রথম দিনই পরিচয়। এক সাথে ক্লাস করা, একসাথে বসে ক্লাস নোট করা, ক্লাসের পড়া রেডি করা, বিকেলে বসে আড্ডা দেওয়া সবই চলত। সূর্য মামা অস্ত যাওয়া পর্যন্ত চল আড্ডাবাজি, সাথে চলত বাদাম কিংবা চা। কলেজ জীবন পার করে আসছে অনেক আগেই। এখন ইউনিভার্সিটিতে পড়ছে। দুই জন দুই ইউনিভার্সিটিতে। আগের মত বসে বাদাম খাওয়া হয় না এখন আর। দেখাও হয় না।
প্রথম প্রথম মিহান প্রতি সপ্তাহে বা বন্ধ ফেলেই চলে যেতো রিমির ক্যাম্পাসে। একদিন রিমি বলল মিহান যেন আর না আসে। স্যাররা সমস্যা করবে।
যেখানে ক্যাম্পাসের প্রতিটি গাছের গোড়ায় জোড়ায় জোড়ায় একটি ছেলে আর একটি মেয়ে বসে রয়েছে সেখানে মিহান শুধু দেখা করলে কি ধরনের সমস্যা হবে তা মিহান বুঝতে পারে নি। না বুঝলেও মেনে নিয়েছে, কারন রিমি বলছে। রিমির কোন কথাই সে ফেলে দিতে পারে না। কলেজ লাইফে যেমন সব কথা শুনে আসছে, এখনো। কারন রিমিকে মিহান সত্যিকারে ভালোবাসে। আর সত্যিকারে যাকে ভালোবাসা যায়, তার সবকিছুই শুনতে ইচ্ছে করে।

রিমি বলছিল সে নিজেই আসবে। সুযোগ পেলেই চলে আসবে। আগে আসত, প্রতি মাসে একবার করে আসত। তারপর আস্তে আস্তে দুই মাস অন্তর হতে লাগল। এরপর আরো বেশি সময়। আজ অনেক দিন পর রিমি আসবে বলছে। এ উপলক্ষে তো একটা নতুন জামা কিনাই যায়। ঈদের সময় মানুষ নতুন জামা কিনে। আজ মিহানের ঈদ ঈদ লাগছে।

মিহান বসে আছে। ক্যাম্পাসের বট গাছের নিছে। যেখানে সে সব সময় রিমির রিমির সাথে বসে সময় কাটায়।

সময় গুলো যেতে চাচ্ছে না। প্রতি মিনিটকে এক ঘন্টা বা আরো বেশি সময় মনে হচ্ছে। রিমি আসবে বলছিল, কেন আরো দ্রুত আসে না।
চারদিকে অন্ধকার হয়ে আসছে। পাখি গুলো নিজ বাসায় ফিরে যাচ্ছে। ছোট বেলায় এ পাখি গুলোর উদ্দ্যেশ্যে কি একটা ছড়া বলত, আজ মনে পড়ছে না। আজ মাথায় একটাই শব্দ, রিমি। আচ্ছা “out of side is out of mind” এটা কি সত্যি? মিহানের মনে প্রাণে চাচ্ছে যেন এ প্রবাদটা সত্যি না হয়।।

1 thought on “মিহানের গল্প”

Leave a Reply