সবাই যেখানে দেখে দুটি কাক বসে আছে, আমি দেখি ভালোবাসা। একটি কাকের প্রতি আরেকটি কাকের ভালোবাসা। একটি প্রাণীর প্রতি আরেকটি প্রাণীর ভালোবাসা। দুটি কাক একে অপরকে আদর করার দৃশ্য।
ওরা ছোট প্রাণী। আর আমরা মানুষ। বিশাল প্রাণী। শ্রেষ্ঠ প্রাণী। ওদের মধ্যে ভালোবাসা আছে। আমাদের মধ্যে ও আছে। ওদের থেকে অনেক বেশি। সে জন্যই আমরা মানুষ। আমরা শ্রেষ্ঠ। সবাই বলে নাকি প্রাণী দের মধ্যে ভালোবাসা থাকলেও মানুষের মধ্যে নেই। মানুষ আজ মানুষ নেই। তারা মিথ্যে বলে।
যাকে বলে ডাহা মিথ্যে।
ঐ যে, আমার সামনেই বারান্দায় বসে আছে, ৫০ বছরের এক যুগল । ২৫ বছর বয়সে যদি তাদের বিয়ে হয়ে থাকে, তারা এক সাথে ছিল ২৫ বছর। এত গুলো বছর এক সাথে কাটিয়ে দিতে হলে ভালোবাসা লাগে। আজ কালকের মত এক সাথে অতি আধুনিক ভালোবাসা, লীভ ট্যুগেদার করার মত না। যে মতের মিল না হলে ২ মাস পর নিজ নিজ বাড়ি চলে গেলাম। খাঁটি ভালোবাসা, যেখানে আজ ও তারা এক সাথে বসে বিকেলে আড্ডা দিচ্ছে। একই মগে করে দু জনে চা খাচ্ছে।
ছাঁদের উপর এক ছাঁদ থেকে আরেক ছাঁদে একটি ছেলে আর একটি মেয়ে কথা বলতে দেখি। আস্তে আস্তে জেগে উঠা প্রেম। ভালোবাসা।
রাস্তায় গেলে দেখি ট্রাফিক পুলিশ অসহায় মানুষদের রাস্তা পার করতে দেখি। এই ট্রাফিক পুলিশ দের আমি অবাক চোখে দেখি। কিভাবে এক সাথে রোদ এবং স্টুপিড ড্রাইভারদের প্যাঁ পোঁ শব্দের মধ্যে দাঁড়িয়ে কাজ করে। মেজাজ তিরিক্ষে উঠার পরিবর্তে দেখায় ভালোবাসা।
ইউনিভার্সিটিতে পড়া একটি ছেলের কাছে ছোট্ট একটা বাচ্চা এসে বলে, “দুটা টাকা দেন। নাস্তা খামু” ছেলেটি বাচাটির হাত ধরে হোটেলে নিয়ে গিয়ে ইচ্ছে মত খাইয়ে বিল দিতে দেখি। এটাকি ভালবাসা নয়? মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসা নয়?
আরও কত কিছুই না দেখি। সেসবের কথা লিখতে গেলে আমার জীবন পার হয়ে যাবে। তারপর ও তারা বলে আজ মানুষের মধ্যে ভালোবাসা নামক কিছুই নেই। সবই মিথ্যে। মাকে পিটায় ছেলে, বউ কে পিটায় স্বামী, বোনকে পিটায় ভাই। এক জন জগড়া করে আরেক জনের সাথে। তাদেরকে বলি, আরে! ওরা তো মানুষ নয়। নয় কোন প্রাণী। নয় কোন কীট। তারা অপদার্থ। মহাবিশ্বের জঞ্জাল।