ব্যস্ত

সবাই কত ব্যস্ত। সবার কত তাড়া। ব্যস্ত রাস্তার মোড়ে বসে থাকতে আমার ভালো লাগে। ভালো লাগে দেখতে সবার ব্যস্ততা। কেউ বাসে উঠে। কেউ নামে। জ্যামে দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ি গুলো। যে গাড়িতে চড়তে যত কম টাকা, ঐ গাড়িতে মানুষ সংখ্যা তত বেশি।

কিছু গাড়ি কত সুন্দর। সে সব গাড়ির ভেতরের মানুষ গুলোও যেন একটু আলাদা। কিছু কিছু গাড়িতে দুই একটা বাচ্চা থাকে। অদ্ভুত ভাবে চারপাশ দেখে। দেখে তাদের বয়সেরই কেউ পানি পানি বলে হাতে কয়েক বোতল পানি নিয়ে চিৎকার করে। কেউ বিক্রি করে লবণ দেওয়া শসা অথবা আমড়া। কেউ বা গাড়ির গ্লাসের সামনে মুখ নিয়ে বলে, ‘দুইটা টেকা দেন’। কখনো ঐ শব্দ ভেতর থেকে শুনা যায়, কখনো শুনা যায় না। লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে যারা চিন্তা করে, দুইটা টেকা দেওয়া নেওয়া নিয়ে ভাবার মত সময় অনেকেরই থাকে না।

বাস গুলোর ভেতরের মানুষ গুলো কিছুটা চটপট করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর পরই ড্রাইভারকে তাড়া দিয়ে উঠে। কখনো কখনো ড্রাইভার ইচ্ছে করে দাঁড়িয়ে থাকে, আরো কয়েকটা যাত্রী নেওয়ার জন্য। কখনো কখনো ট্রাফিক পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকতে বলে। সামনে দিয়ে কোন VIP যাবে বলে রাস্তা ফাঁকা রাখার জন্য। বাসের ভেতরের মানুষ গুলো একে অন্যের গাঁ লেপটে দাঁড়িয়ে থাকে। কারো কারো প্রতিদিনের রুটিনই এমন। তখন তারা নির্লিপ্ত হয়ে বসে না হয় দাঁড়িয়ে থাকে।

এই বিষয় গুলো দূর থেকে দেখতে কত অসামঞ্জস্য। কিন্তু মানুষ গুলোর সব কিছু সয়ে গিয়েছে। এখন আর তাদের কাছে এসব অসামঞ্জস্য মনে হয় না। সব কিছুই স্বাভাবিক মনে হয়। মাঝে মাজে আমার কাছে মনে হয় স্বাভাবিক আর অস্বাভাবিক একটা ধাঁধাঁ। এলোমেলো ভাবে হাঁটতে হাঁটতে ধাঁধাঁর উত্তর খুঁজে ফিরি। এটাই আমার ব্যস্ততা। এটাই আমার তাড়া। যেন কেউ একজন দূর থেকে বার বার বলছে, তোমার কিসের এত তাড়া? রাস্তা পার হবে সাবধানে।

4 thoughts on “ব্যস্ত”

Leave a Reply