আমার ইন্টারনেটের বেশির ভাগ ব্যান্ডউইথ আমি ব্যবহার করি ফেসবুক ব্রাউজ করার জন্য। আর ফেসবুকে যতটুকু সময় থাকি, তার অর্ধেকেরও বেশি সময় ব্যায় করি ঊর্মির ফেসবুক প্রোফাইল চেক করার জন্য। দেখতে ভালো লাগলে আমি কি করব বলেন? এছাড়া তেমন আর কোন কাজও নেই আমার যে করব।
আপনারা এতক্ষণে আমাকে একজন স্টকার ভেবে ফেলেছেন। স্টকার না ভেবে একজন নন পেইড প্রাইভেট ইনভেস্টিগেটর ভাবতে পারেন। বলতে পারেন আমার শুধু একটা কেইসই ভালো লাগে। জানি না কোন দিন এটি সলভ করতে পারব কিনা।
ঊর্মির ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামের সব পোস্ট দেখতে দেখতে বলা যায় তার সব কিছুই বলা যায় আমার মুখস্ত। ঊর্মির উপর গ্র্যাজুয়েটেডও বলতে পারেন আমাকে।
ঊর্মিকে ভালো লাগত প্রথম থেকেই। আমাদের একটু আধটু কথাও হতো। তার মেসেজের রিপ্লাই পেয়ে কি যে খুশি আমি। মনে হচ্ছিল যেন পৃথিবীর পক্ষ থেকে মঙ্গল গ্রহ জয় করে ফেলেছি।
যখন দেখলাম ঊর্মি অন্যকাউকে ভালোবাসে, তখন কেমন একটা শূন্যতা অনুভব করা শুরু করেছি। এই শূন্যতার অনুভূতিটা কাউকে বোঝানো যাবে না। নিজের ভালোলাগার কথা আর বলারও চেষ্টা করিনি এরপর। আমি চাইতাম সে ভালো থাকুক।
বিভিন্ন উপলক্ষ গুলোতেই আমাদের একটু আধটু কথা হতো। মাঝে মাঝে তার প্রোফাইলে একটু উঁকি দিয়ে আসতাম। ভালো লাগা থেকেই। একদিন দেখি রিলেশনশিপ এনগেজ থেকে আবার সিঙ্গেল। তখন আবার কেমন মিশ্র একটা অনুভূতি। তাদের ব্রেকআপ হয়ে গিয়েছে? ঊর্মির মন খারাপ না তো? সে ভালো আছে তো? যদিও জিজ্ঞেস করা হয় নি।
মাঝে মাঝেই চাইতাম বলি, এক সাথে কোথাও বসে চা বা কফি খাই। কিন্তু বলা হয় নি। সাহস করে উঠতে পারি নি। ঊর্মি কি ভাববে, তা ভেবেই বলা হয়নি। ভাববে না যে আমি সুযোগ নিচ্ছি? আরো কত কিছু।
অনেক দিন পর একট উপলক্ষ্যে উইস করার জন্য নক দিয়েছি। এভাবেই একটু আধটু কথা হচ্ছিল। এক সাথে বসে কিছু খাওয়ার কথা বললাম। ঊর্মি রাজিও হলো। কি যে খুশি খুশি লাগছিল আমার!
আমরা এক সাথে বসে হালকা নাস্তা খেলাম। কফি খেলাম। এটা সেটা নিয়ে কথার মাঝে ঊর্মি সময় দেখে বলল আজ উঠি? আমি ঘাড় নেড়ে সায় দিলাম। সে ব্যাগ থেকে একটা খাম বের করে আমার হাতে দিল।
উর্মিকে বিদায় জানালাম। সে যাওয়ার পর খামটি খুলে দেখি একটা কার্ড। তার বিয়ের কার্ড।