- উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ, প্রথম দিনঃ সৈয়দপুর, রংপুর
- উত্তরবঙ্গ ভ্রমন, দ্বিতীয় দিনঃ রংপুর
- উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ, তৃতীয় দিনঃ নীলফামারী, তেঁতুলিয়া, বাংলাবান্ধা, পঞ্চগড়
- উত্তরবঙ্গ ভ্রমণ, চতুর্থ দিনঃ ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর
সকালে ঘুম থেকে উঠেছি ৭টা ৩০ এর দিকে। এরপর ফ্রেস হলাম। রোহান ভাইকে কল দিলাম। উনি চলে আসল। এরপর গেলাম নাস্তা খেতে। দিলশান হোটেলে। সেখান থেকে গিয়েছি রাম সাগর পার্কে। বিশাল দীঘি, চারপাশে সবুজ আর সবুজ। বিশাল বলতে আসলেই বিশাল।
রামসাগরে এলাকার কিছু মানুষ গোসল করছিল, আমার ইচ্ছে করছিল ওদের সাথে নেমে যাই। আমি ঢাকা থেকে যাওয়ার সময় চিন্তা করে গিয়েছি উত্তর বঙ্গে গিয়ে কোন পুকুরে নেমে গোসল করব। কিন্তু করা হয় নি।
রামসাগর পার্ক থেকে বের হয়েছে গিয়েছি রাজবাটী মন্দির। মন্দিরের একটু পরেই সুখ সাগর। মন্দির থেকে সুখ সাগরে গিয়েছি। মোটর সাইকেলে করে সব জাগায় নিয়ে যাচ্ছে রোহান ভাই।
রাজা তার রানীর জন্য তৈরি করেছে সুখ সাগর। সুখ সাগর পাড়ে কিছুক্ষণ বসলাম। দিঘি গুলোকে কেন সাগর বলে, এখনো জানি না।
সুখও সাগর পাড়ে কিছুক্ষণ থেকে আমরা গিয়েছি মাতা সাগর। অসাধারণ জায়গা। মাতা সাগরের এক পাড়ে লিচু বাগান। লিচু বাগান পাহারা দিচ্ছি ঐখানে কিছু মানুষ। ঐ সব দেখে রওনা দিয়েছি বিরল থানার উদ্দেশ্যে। সেখানে মহেশপুর যাবো। গত কাল জাহাঙ্গীর এবং আলমগির এর সাথে পরিচয় হয়েছে, তাদের বাড়িতে।
যাওয়ার পথে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় লিচু মার্কেট দেখে গিয়েছি, দিনাজপুরের নিউমার্কেট। এত্ত লিচু! আমাকে সেখান থেকে রহান ভাই ১০০ লিচু কিনে দিয়েছে, মোটর সাইকেলের পেছনে বসে বসে খাওয়ার জন্য।
পথে পড়েছে মনপুর ব্রিজ। দারুণ জায়গা। ঐখানে এ রোদের মধ্যেও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেছি। ভালোই লেগেছে।
জাহাঙ্গীর বাড়ি যাওয়ার পর পথটা অনেক সুন্দর। চোখে পড়ল অনেক গুলো মিল, ফ্যাক্টোরি। চালের মেশিন। দিনাজপুরের চাল নাকি বিখ্যাত। পথে পড়ল অনেক লিচু বাগান। ওদের বাড়ি যাওয়ার পর ওরা নাস্তা দিল। খেলাম। খেয়ে বের হলাম লিচু বাগান দেখতে। এত সুন্দর করে লিচু ঝুলে থাকে গাছে, দেখতেই কেমন ভালো লাগে। থোকায় থোকায় লিচু। রঙ্গিন হয়ে ঝুলে আছে। মন চাইবে সারাক্ষণ লিচু খেতে। কিছু কিছু লিচু গাছ অনেক বড়। কিছু কিছু ছোট। সব গুলোতেই সম পরিমান লিচু।
মহশপুর একটা দিঘি আছে। কি নাম ভুলে গিয়েছি। কড়াই বিল সম্ভবত বা এমন কিছু। ঐ দিকে গিয়েছি।
লিচু বাগান দেখে ফিরে এসেছি হোটেলে। রোহান ভাই গিয়েছে উনার বাড়ি। ফ্রেস হয়ে আসার জন্য। মাত্র ত্রিশ মিনিট পরই আবার বের হয়ে পড়লাম।
এরপর আমরা গিয়েছি ফুলবাড়ি থানা। যাওয়ার পথে এক জাগায় হাঁসের মাংস দিয়ে দুপুরের খাবার খেয়ে নিয়েছি। সিম্পল একটা হোটেলে এত মানুষ। নাম মান্নান ভাত ঘর। ঐটা লক্ষীতলা বাজার, দিনাজপুরে। এখানে এত দূর থেকে মানুষ খেতে আসে। না দেখলে বিশ্বাস হবে না। রান্না ও সেইরকম টেস্টি।
ফুলবাড়ি গিয়েছি স্বপ্নপুরি দেখতে। যাওয়ার পথটা অসাধারণ রকমের সুন্দর। দুপাশে জাউ গাছ সহ বিভিন্ন গাছ। সোজা রাস্তা। ট্রেন নামিয়ে দেওয়া যাবে, এমন। দুই পাশে ধান খেত। মোটর সাইকেল ফুল স্পিডে চালিয়ে যাচ্ছিল। অনেক ভালো লাগা কাজ করছিল।
স্বপ্নপুরিতে ঢুকে অবাক হয়েছি। সত্যিই স্বপ্নপুরি। মালিক নিজ স্বপ্ন যেন নিজ হাতে বাস্তবায়ন করেছে, এমন। বিশাল এরিয়া। যার মধ্যে দেখার মত অনেক কিছু রয়েছে। চিড়িয়া খানা, কৃত্তিম পশু দুনিয়া, কৃত্তিম মাছের দুনিয়া, থাকার জন্য হোটেল, কত শত রকমের গাছ। সুন্দর ভাবে সব সাজানো। মালিকের নিজ বাড়িও এ স্বপ্ন পুরির ভেতর।
স্বপ্নপুরি থেকে শহরে ফিরে এসেছি। এসে গিয়েছি দিনাজপুরের বড় মাঠে। সেখান থেকে গিয়েছি কফি হাউজ নামক সুন্দর একটি রেস্টুরেন্টে। পার্ক এবং রেস্টুরেন্টের সমন্বয়। সুন্দর জায়গা। সেখানে গিয়ে নাস্তা করে হোটেলে ফিরলাম। গত কালের হোটেলই, মৃগয়া।
আজও এক দিনে অনেক জাগায় ঘুরা হয়েছে। অনেক গরম ছিল, তারপর ও ঘুরে ভালো লেগেছে।