টিউশনি

ত্বকির টিউশনির বেতনটা পাবে আজ। খুশি মনে টিউশনিতে গেলো। আচ্ছা গল্প বলার আগে ত্বকির পরিচয়টা দেওয়া যাক।

অন্য সব সাধারণ ছাত্রের মতই একজন। একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়তে পড়ে। ম্যাচে থাকে আর নিজের খরচ নিজে বহন করে। এ জন্যই টিউশনি। সাধারণ ছাত্রদের রুজির প্রধান মাধ্যম।

তের বা চোদ্দ বছরের একটি মেয়েকে পড়ায় সে। ভালো ছাত্রী। সব কিছুই সুন্দর মত বুঝতে পারে।

আজ পড়ানোর এক সময় ত্বকি পা নাড়াতে গিয়ে ইভার পায়ে লাগল। ত্বকি সরি বলল। ইভা বলল সমস্যা নেই স্যার।

কোন সমস্যা হতো না যদি না তা ইভার ছোট খালামনির চোখে পড়ত। ইভার খালামনি এদিক দিয়ে যাচ্ছিল, তখনি দেখল।

গৃহ শিক্ষক, স্কুল শিক্ষক এসব নিয়ে পত্রিকায় বা টিভিতে বিভিন্ন নিউজ দেখে সব অভিবাবকই চিন্তিত। আমার সন্তানটি কি নিরাপদ? এসব কিছু ত্বকিকে স্পর্শ করত না যদি ইভার খালামনি তার মায়ের কাছে গিয়ে বলত, ইভার পায়ে স্যারের পা লাগার কথা। দুই বোন, বলা যায় দুই নারী এক সাথে সব কিছু আলোচনা করতে লাগল। ইভার কিসে ভালো হবে তা নিয়ে চিন্তা করতে লাগল।

একসময় ইভাকে ডাকল স্যারের জন্য নাস্তা নিয়ে আসতে। নাস্তা আনতে গেলে ইভার হাতে একটি খাম দেয়। ত্বকির বেতন। ইভাকে বলল স্যারকে যেন বলে আগামীকাল থেকে আর না আসে। ইভা জিজ্ঞেস করল কি সমস্যা? কেন স্যারকে আর আসতে হবে না? তার আম্মু বলল তুই বুঝবি না।

ইভা অনেক কিছুই বুঝে না। সবাই বলে বড় হলে বুঝবি। সে যথেষ্ট বড় হয়েছে, চিন্তা করে আর কত বড় হতে হবে সব কিছু বুঝতে।

ত্বকির নাস্তা খাওয়ার পর ইভা তার হাতে খামটি দিল। ইভার বলতে কষ্ট হচ্ছিল। তারপর ও বলল, স্যার… ত্বকি বলল, কিছু বলবে? স্যার, আম্মু বলেছে আগামীকাল থেকে আপনাকে আর আসতে হবে না।

ত্বকির মন খারাপ হলো। মুখে তা না ফুটিয়েই বলল ঠিক আছে। ভালো থেকো ইভা।

কিছু কিছু মানুষ সব সময়ই ভয়ে থাকে, কি ভুল করেছে। কি ভুল হয়েছে। ভাবে তার জন্যই দূর্ঘটনা গুলো ঘটে। সে না থাকলে হয়তো এমন কিছু হতো না। ত্বকি তেমনি একজন। কি ভুলের কারণে টিউশনিটা গেলো, তা ভাবতে ভাবতে বাসায় ফিরল। ভুল খোজার পাশা পাশি আরো কয়েকটা ভাবনা, পরের মাস থেকে কি হবে, কিভাবে চলবে? কীভাবে ম্যাচের ভাড়াটা দিবে?

Leave a Reply