আপওয়ার্কে টপরেটেড কয়েক ফ্রিল্যন্সারদের নিয়ে Upwork Premier Club নামে একটা আনঅফিশিয়াল গ্রুপ রয়েছে আমাদের। মাঝে মধ্যে সবাই মিলে এক সাথ হওয়া, গল্প করার জন্য গ্রুপ। ছোট খাটো অনেক গুলো মিটআপ হয়েছে। এ ছাড়া রোজার সময় ইফতার পার্টিও হয়েছে দুই একবার। কয়েক দিন আগে শরিফ ভাই গ্রুপ থেকে একদিনের ট্যুরে যাওয়ার কথা বলল। এরপর সবাই মিলে আলোচনা করে ঠিক করল জল ও জংগলের কাব্য রিসোর্ট, টঙ্গী। ২৯ তারিখে। যাওয়া আসার জন্য একটা মিনিবাস ভাড়া করা হলো। এসব আয়োজন করেছেন তারেক মাহমুদ ভাই ও জুয়েল রানা ভাই।
২৯ তারিখ ছিল শনিবার। মতিঝিল থেকে সকাল ৬টা ১৫ তে বাস ছাড়বে, এরপর এক এক জায়গা থেকে এক একজনকে তুলে নিবে। আমি গিয়েছি বরিশাল। ভাবলাম সকাল ৬টার আগেই ঢাকা পৌছাতে পারব। যখন দেখলাম ৬টার মধ্যেও ঢাকায় পৌছাতে পারি নি, তখন আমি এই ট্যুরের আশা ছেড়ে দিলাম।
লঞ্চ থেকে নেমেছি সাড়ে ছয়টার দিকে। এরপর তারেক ভাইকে কল দিলাম, জিজ্ঞেস করলাম আপনারা কোথায়? উনি বলল মতিঝিল এখনো। বলল খিলক্ষেত যদি আমি সিএনজি করে চলে যাই, তাহলে উনাদের আগে পৌছে যাবো। উনারা ধানমন্ডি ও মিরপুর থেকে কয়েকজনকে পিক করবে। আমি সিএনজি করে খিলক্ষেত চলে গেলাম। ঐখানে রিফাত ভাইয়েরা অপেক্ষা করবে বলল। গিয়ে দেখি রিফাত ভাইয়েরা নাস্তা করছে। আমিও নাস্তা করে নিলাম উনাদের সাথে। এর কিছুক্ষণ পর বাস আসল। আমরা সবাই মিলে রওনা দিলাম জল ও জঙ্গলের কাব্যের উদ্দেশ্যে। আমরা আটটার দিকে পৌছে গেলাম ঐখানে।
জল ও জঙ্গলের কাব্যের পৌছানোর পর আমাদের লেবুর সরবত দেওয়া হলো, মেহেমান মেহমান অনুভূতি। এখানে অনেক গুলো ছোট ছোট ঘর রয়েছে। বেশির ভাগ অংশই খোলা। আমরা ছাড়াও আরো অনেকেই ঐখানে গিয়েছে। আমাদের একটা ঘর দেখিয়ে দেওয়া হলো। ঐখানে আমরা ব্যাগ রাখলাম। এরপর এদিক সেদিক হাঁটা হাঁটি করলাম। নয়টার দিকে আমাদের নাস্তা দিল। চিতল পিঠা, পরটা, রুটি, মাংশ, ভর্তা ও সবজি। আমরা খেয়ে নিলাম। আমাদের জন্য রয়েছে আনলিমিটেড চা কফি। চা/কফি নিয়ে যে যার মত করে আড্ডা দিতে লাগলাম।
এখানে রয়েছে লাইভ মিউজিকের ব্যবস্থা। বাউল গান। বসে বসে গান শুনলাম কিছুক্ষণ। কেউ কেউ কার্ড খেলল।
জল ও জঙ্গলের কাব্যের পূর্বদিকে রয়েছে বিল। আমরা ট্রলারে করে বিলে ঘুরে আসলাম কিছুক্ষণ। এখানে একটা উঠোন রয়েছে, ঐখানে কেউ কেউ ফুটবল খেলল। আমরা বসে বসে আড্ডা দিতে লাগলাম। দুপুরের দিকে আমাদের আমড়া কেটে দিল লবন মরিচ দিয়ে। আর দেখলাম ঐখানের স্টাফরা রান্না করছে। গ্রামের বাড়িতে যেমন রান্না, তেমন ভাবে রান্না করা হচ্ছিল। রান্না করছিল মহিলারা।
দুপুরে গোসল করতে পারলে দারুণ হতো। গোসল করার ব্যবস্থা আছে। কিন্তু ততটা ভালো না। এ ছাড়া এখানে বড় একটা পুকুর আছে। পুকুরে ঘাট থাকলে দারুণ হতো। বাকি সব কিছুই ভালো লেগেছে।
তিনটের দিকে আমাদের দুপুরের খাবার দিল। অনেক অনেক আইটেম। কয়েক প্রকারের ভর্তা, কয়েক প্রকারের মাছ, তরকারী, মাংশ, ডাল, ভাত, পোলাউ, ভাজি, সবজি ইত্যাদি। ঘরের রান্নার মত সুস্বাদু। এখানের খাবার গুলোর জন্যই জায়গাটা ঘুরে আসা যায়। ঢাকার কাছেই। বেশি সময়ও লাগে না যেতে।
দুপুরের খাবার খাওয়ার পর যে যার মত করে রেস্ট নিল। ঢাকা থেকে যাওয়ার সময় কিছু গিফট নিয়ে যাওয়া হলো। ঐ গুলো দেওয়ার জন্য লটারি করা হলো। ৭টা পুরষ্কারের মধ্যে আমি একটা পেলাম। এছাড়া অনেক মটিভেশনাল কথাবার্তাও হলো 😉
বিকেলের দিকে আবার আমাদের পিঠা দিল। বিলের উপর ছোট ছোট ঘর রয়েছে। ঐখানে বসে গল্প করে বিকেল কাটালাম। সন্ধ্যার দিকে আমরা রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে।
পুকুরে ঘাট আছে। ৪ টা সিড়ি সম্ভবত। ঢোকার গেইটের দিকটায় ঘাট
ঐদিকে গিয়েছি তো, পাই নি।
ধন্যবাদ জাকির ভাই আপনার সুন্দর বিবরণের জন্য। জায়গাটা অনেক সুন্দর। যারা যাই নাই তাদের জন্য বলা, আসলে কোনো সুন্দর জায়গা আপনি পরিদর্শন না করা পর্যন্ত এর বাস্তবিক সৌন্দর্য কল্পনা কঠিন।
সেটাই 🙂