গল্পঃ কফিশপ

ইভান প্রথম এই কফিশপে এসেছে তার বন্ধুর সাথে। ঐদিন তার বন্ধু অনেক জোর করে কফি খেতে নিয়ে এসেছিল। বলল এদের কফি অনেক মজার। তাছাড়া কফিশপটাও সুন্দর। রুফটপে। শহরের বেশিরভাগ অংশ দেখা যায়। দেখা যায় নিচের মানুষ গুলোকে, কেমন দ্রুত এক দিক থেকে অন্য দিকে ছুটে চলছে। শুনা যায় গাড়ির হর্ণের শব্দ। হর্ণের শব্দ শুনলে মনে হয় সবার যেন তাড়া। সবাই খুব ব্যস্ত।

ঐ দিনের পর থেকে নিয়মিত ইভান এই কফি শপে চলে আসে। প্রতিদিন একই সময় আসে। এসে একই টেবিলে বসে। একই কফি অর্ডার দেয়। আর প্রতিদিন একই মেয়ে তাকে কফি সার্ভ করে যায়।

কফি খেতে খেতে দেখে, চারপাশ। শুনে হর্ণ এর শব্দ। মানুষের ব্যস্ততা দেখে। শুধু সেই স্থির। কোন কাজ নেই। একটি মাত্র কাজ ছাড়া। কফিশপের মেয়েটিকে দেখা, তাকে নিয়ে ভাবনার সাগরে ডুব দেওয়া। মেয়েটির জামার নেমপ্লেটে লেখা, আরিয়া। ইভানের একই রুটিন। এদিক সেদিক হয় না। যত কাজ থাকুক, সব কাজ ফেলে রেখে একই সময় কফি শপে থাকা তার চাই ই চাই। একই জায়গায় তার বসা চাই ই চাই।

ঐ দিন একই সময় এসে, একই টেবিলে বসেও আরিয়ার দেখা নেই। অন্য আরেকজন এসে কফি সার্ভ করে গেলো। অনেকক্ষণ পর ও যখন আরিয়াকে দেখল না, তখন কফিশপের ম্যানেজারের কাছে জিজ্ঞেস করল আরিয়ার কথা। ম্যানেজার বলল আরিয়া অসুস্থ, হাসপাতালে। ইভান হাসপাতালের কথা জিজ্ঞেস করল। কফিশপের বিশ্বস্ত কাস্টোমার মনে করে ম্যানেজার তথ্য দিল।

ইভান এক গুচ্ছ ফুল নিয়ে হাসপাতাল হাজির। মেয়েটির বেডের পাশের ডেস্কে ফুল গুলো রেখে জিজ্ঞেস করল কেমন আছে এখন।

মেয়েটি বলল ভালো। এরপর একটু থেমে ইভানকে জিজ্ঞেস করল, কফি খেতে পছন্দ না করেও প্রতিদিন কফি খেতে আসো কেনো?

ইভান বলল, ভালোবাসি তাই। … একটু থেমে জিজ্ঞেস করল, কফি পছন্দ করি না তুমি বুঝছ কিভাবে?

আরিয়া একটু হাসল। বলল এতটুকু বুঝতে শার্লক হতে হয় না।

ইভান হাসল। মনে মনে ভাবল এই শার্লকের ফিমেল ভার্সন নিয়ে তার অনেক রহস্যের সমাধান করতে হবে, শুধু সুস্থ হয়ে উঠুক।

Leave a Reply