অভিমানী ছেলেটি

দ্বীপ্তির কাছে অনিক সব সময়ই মলিন। দ্বীপ্তি তার দু্যতি দিয়ে সবাইকে আবিষ্ট করত। অনিক আবিষ্টদের একজন। কিছু মোহ ক্ষণিকের জন্য। অনিকেরটা ক্ষণিকের ছিল না। সত্যিকারেই দ্বীপ্তিকে তার ভালো লেগে যায়। কাউকে ভালো লেগে গেলে নিজের জগৎটি কেমন জানি ভালোলাগার মানুষটি দখল করে বসে। সব চিন্তা ভাবনা ভালোলাগার মানুষটি কেন্দ্রিক হয়ে পড়ে। অনিক মানুষ, ব্যাতিক্রম নয়।

দ্বীপ্তির সৌন্দর্যের কাছে নিজেকে তুচ্ছ মনে হয়। বার বার আয়নার সামনে যায়, গিয়ে চিন্তা করে, আরেকটু সুন্দর হলে কি এমন ক্ষতি হতো? নিজের মলিনতা দূর করার চেষ্টা করে। দ্বীপ্তির কাছে সে বার বার গিয়েছে, ভালোবাসা পাওয়ার আকুলতা নিয়ে। আকুলতার বিপরীত ঠিক ততটুকু অবজ্ঞা করেই দ্বীপ্তি তাকে ফিরে দিয়েছে, বার বার।

অনিকের দেওয়া প্রতিটি গোলাপ কিছু দূর গিয়ে ফেলে দিয়েছে। ঠিক যেমন নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় দেওয়া লিপলেট গুলো ছুঁড়ে ফেলে মুসুল্লিরা। লিপলেট দেওয়া ছেলে গুলো তা দেখেও না দেখার বান করে। কিন্তু অনিক বান করে থাকতে পারে না। দু চোখ দিয়ে দুই ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ে। ছেলেদের চোখে জল বেমানান, তাই সাথে সাথেই মুছে ফেলে।

এক সাথে বৃষ্টিতে ভিজবে বলে দ্বীপ্তিদের গেঁটে দাঁড়িয়ে থাকে। বৃষ্টি আসে, অনিক ভিজতে থাকে। একা একা। এক সময় ঠাণ্ডা লাগে। গা কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। কিন্তু দ্বীপ্তির অন্তর একটুও কাঁপে না। একটুও না। মাঝে মাঝে বারান্দায় এসে এক নজর দেখে আবার চলে যায়। মুখে কি ঐটা অবজ্ঞার হাসি ছিল? অনিক বুঝতে পারে না। জ্বর নিয়েই ফিরে যায়, নিজ নীড়ে।

দ্বীপ্তির অন্তরটি ছুঁয়ে দিতে চেয়েছিল, ভালোবাসা দিয়ে। তা কি কোন অহংকারে আবৃত ছিল? জানে না, অনিক কিছুই জানে না। ছেলেটির অভিমান বাড়তে লাগল। আস্তে আস্তে দূরে সরে যেতে লাগল। সকল অভিমানকে চাপিয়ে এখনো ছোট্ট একটু আশা, মেয়েটি এসে হাতটি ধরে কাছে টেনে নিবে। একটুখানি ভালবাসবে।

Leave a Reply