-স্যার, আজ পড়ব না।
-কেনো, আজ আবার কি হয়েছে?
– কি হয়েছে মানে? আজ হচ্ছে সুপার মুন। সুপার জোছনা। আজ জোছনা দেখা বাদ দিয়ে পড়ালেখা করলে পাপ হবে। আপনি জানেন না?
নিলয় অনেক কিছুই জানে না। এসব জানত ঊর্মি। কোন দিন জোছনা, কোন দিন অমাবস্যা। কোন দিনে কার কি হয়েছে। কোন দিন কেন স্পেশাল সব। মাঝে মাঝে স্পেশাল সব দিনে নিলয়কে গিফট পাঠাতো।
স্বর্ণা আবার বলল, স্যার এক শর্তে পড়তে পারি। ছাদে বসে পড়তে পারি। তা না হলে পড়ব না।
-চল, তাহলে ছাদেই চলো।
বই খাতা নিয়ে স্বর্ণা ছাদের আসছে। নিলয় ছাদের লাইট অন করায় বলল, স্যার, আমি তো ছাদে পড়তে আসি নি। আপনাকে নিয়ে জোছনা দেখতে এসেছি। একা একা দেখার থেকে দুইজন মিলে গল্প করতে করতে দেখা ভালো না? বলে খিল খিল করে হাসতে লাগল। গিয়ে লাইটটি বন্ধ করে দিল।
– কিন্তু আমি তো তোমাকে পড়াতে এসেছি।
– প্রতিদিন পড়তে হয় না।
স্বর্ণা কোনদিনও পড়ে না। এক দিন একটা না একটা উছিলা দিয়ে গল্প করবেই। তারপর ও কিভাবে সে পরীক্ষায় ভালো করে নিলয় বুঝে না। সে আসলে অনেক কিছুই বুঝে না।
নিলয় ছাদে গিয়ে বসে ছিল। স্বর্ণা বলল, স্যার জানেন আজকের চাঁদটা না অন্যান্য পূর্ণিমার চাঁদ থেকে ১৩ গুণ বেশি বড় দেখাচ্ছে? মজার ব্যাপার কি জানেন, আজকে না অন্যান্য পূর্ণিমা থেকে ৩০ গুন বেশি জোছনা ছড়াচ্ছে।
নিলয় ভুলে যায় কে ছাত্রী কে শিক্ষক। সে বলে না তো, তুমি কোথায় থেকে জানলে?
– কোথায় থেকে আবার, ফেসবুক থেকে। বন্ধুরা শেয়ার করছিল তথ্য গুলো। ঐখান থেকে পেয়েছি। দেখেন না, সত্যিই আজ কত সুন্দর জোছনা।
স্বর্ণার পাগলামি বাড়তে থাকে। এক সময় এমন পাগলামি করত ঊর্মি। নিলয় দূরে দূরে থাকার চেষ্টা করত। ভুল করে একবার কাছে যেতে ছেয়েছে, এরপর ঊর্মি নিজেই দূরে চলে গেছে। নিলয় কে একা রেখে। ভাবতে লাগল একই ভুল দুই বার করা যাবে না। না কখনো না… ভাবতে ভাবতে চাঁদের দিকে তাকালো। সুপার জোছনার আলোতে তার কষ্ট গুলো দ্রবীভূত হতে লাগল।