সাইন্স ফিকশনঃ হ্যাকার

নিলয় একটা ইভেন্টে এসেছে। বিভিন্ন বিষয় সফল মানুষদের একটা অনুষ্ঠান। সফলতা পরিমাপ করা যায় না। এটা খুবি আপেক্ষিক একটা বিষয়। খুবি নিজস্ব বিষয়। কিন্তু আমাদের সিস্টেম একটা পরিমাপক ব্যবহার করে নির্ধারন করে কে সফল। সিস্টেমটি ধরে নিয়েছে নিলয়ও একজন সফল ব্যক্তি। সে তেমন কিছুই করে নি, শুধু সিকিউরিটি রিলেটেড একটা সমস্যার সমাধান করেছে। তার এসব অনুষ্ঠান ভালো লাগে না, তারপর ও আসতে হয়েছে।

নিলয়ের চোখের চশমা টা বলে দিচ্ছে কার সাথে কথা বলতে হবে। কে সবচেয়ে পাওয়ারফুল, কার সাথে কথা বললে তার কি উপকার হবে। সবার চোখেই এমন একটা চশমা রয়েছে। সবাই দেখছে সবার প্রোফাইল। কিছু কিছু মানুষের চারপাশে অনেক মানুষ। তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করছে। তারা কি বলছে, সেসব শুনার চেষ্টা করছে। হয়তো ভাবছে ঐসব শুনলে নিজেও ওদের মত হতে পারবে।

নিলয়ের এসব ভালো লাগে না। কে ভালো, কার পাওয়ার কত বেশি, এটা দিয়ে মানুষের সাথে কথা বলতে হবে কেনো। মানুষের সাথে কথা বলতে কোন কারণ লাগবে না। যদি এসব দিয়েই সফলতা পরিমাপ করা হয়, তাহলে রোবট গুলো সবচেয়ে সফল। তারা এত কিছু করতে পারে, যা একজন মানুষ দ্বারা সম্ভব না। তাছাড়া সফলতা আর ব্যর্থতার দূরত্ব খুবি কম। মোটামুটি সবাই কম বেশি চেষ্টা করে। যাদের চেষ্টার সাথে সময় মিলে যায়, তাদেরকে সবাই সফল হিসেবে ধরে নেয়। এসব দিয়ে আসলে মূল্যায়ন করা ঠিক না। দূর থেকে সে দেখছে সবাইকে। দূর থেকে দেখতে আসলে ভালোই লাগছে। দূর থেকে হয়তো সব কিছুই সুন্দর।

নিলয় তার তথ্য গুলো হাইড করে রেখেছে। তথ্য গুলো হাইড করে রাখা একটু কষ্টকর বটে। হাইড করতে তার হ্যাকিং স্কিলকে কাজে লাগিয়েছে। তা না হলে এখন অনেকেই তার চারপাশে এসে একত্রিত হত। তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করত। সে কিছুটা ইন্ট্রোভার্ট। মানুষের সাথে বেশি মেশা পছন্দ করে না।

একটা মেয়ে এদিকে এগিয়ে আসল। সে ভাবল অন্য দিকে যাবে, কিন্তু তার কাছেই আসল। এসেই তার নাম ধরে জিজ্ঞেস করল কেমন আছে সে। নিলয় একটু অবাক হলো। তার নাম জানার কথা না। কিভাবে জেনেছে? তাছাড়া মেয়েটি সম্পর্কেও খুব একটা তথ্য দেখা যাচ্ছে। নিজের জ্ঞান কাজে লাগিয়ে মেয়েটির প্রোফাইল দেখল। দেখে অবাক হলো। তারা সমগোত্রীয়। নিলয়ের কাছে খারাপ লাগেনি ব্যপারটা।

প্রাথমিক কথাবার্তা শেষে মেয়েটি বলল, ঐ দিকে যাওয়া যায়। নিরিবিলি, তা ছাড়া চাঁদের আলোও দেখা যাবে। এত সুন্দর মেয়ের সাথে হাঁটার অফার উপেক্ষা করার কোন মানে হয় না। নিলয় বললঃ চলো প্রিয়া। প্রিয়া একটু দাঁড়িয়ে বললঃ তুমি আমার নাম জানলে কিভাবে? নিলয় বলল, তুমি যেভাবে আমার নাম জেনেছ, ঠিক সে ভাবে! দুইজনেই হেসে উঠল। মেকি হাসি না। সত্যিকারের হাসি।

1 thought on “সাইন্স ফিকশনঃ হ্যাকার”

Leave a Reply