পেটের ক্ষুধা খাবার খেলে মিটে কিন্তু মনের ক্ষুধা কিভাবে মেটে?

মানুষের প্রথম মৌলিক চাহিদা হচ্ছে খাবার। সব কিছুর আগে মানুষ পেটের চিন্তা করে। এর পরই পোষাক তার পর বাসস্থান। 
মোটামুটি এগুলো পূরন হলেই একজন মানুষকে সুখী বলা যেতে পারে। অন্তত যারা না খেয়ে বেঁচে থাকে তাদের কাছে এ গুলো পূরন হওয়ার মানেই হচ্ছে সুখ। 
কিন্তু পেটের ক্ষুধার পরই মানুষের আরেকটি ক্ষুধা জন্ম নেয়। আর তা হচ্ছে মনের ক্ষুধা। আর তার জন্যই অনেকে সুখী হয়েও অসুখী। এমনকি যারা না খেয়ে বেছে থাকে তাদের থেকে বেশি অসুখী। 
এ মনের ক্ষুধা বয়সের উপর নির্ভর করে। এক এক বয়সের এক এক ধরনের মনের ক্ষুধা। আর এ মনের ইচ্ছে বা ক্ষুধা না মেটাতে পারলেই অনেকে কষ্ট পায়। আসলে অনেকে না, সবাই। 
একদম ছোট বেলার কথা চিন্তা করুন। যখন আপনার বয়স দুই কিংবা তিন। তখন আপনার কি ধরনের চিন্তা ছিল? পাশের বাসার রনির অনেক গুলো খেলনা, আমার মাত্র একটা। ওর একটা সুন্দর প্লেন আছে, আমার নেই। আর ঐ মির্জা আংকেলের মেয়ে উর্মির কি সুন্দর একটা বার্বি ডল আছে আমাকে আজই কিনে দিতে হবে। এরকমই ইচ্ছে গুলো। একটা থাকলে দুটো পাওয়ার ইচ্ছে ঐ ছোট কাল থেকেই। 
একটু বড় হলে চিন্তা করে ঐ রনির একটা সাইকেল রয়েছে আমাকেও কিনে দিতে হবে। ওর কম্পিউটার রয়েছে আমাকেও কম্পিউটার কিনে দিতে হবে। এরকমই। 
একটু শেয়ানা হলে গার্ল ফ্রেন্ড আর বয় ফ্রেন্ড এর ঝোক মাথায় চেপে বসে। আহারে, রনি কত গুলো মেয়ের সাথে ডেটিং মারে আর আমার কপাল পুরোই মন্দ, আজ পর্যন্ত একটি মেয়ের সাথে হ্যাল্লো পর্যন্ত বলতে পারলাম না। 
বিয়ের বয়স আসলে বিয়ে হয়, হয়তো কারো বৌ অনেক সুন্দর বা কারো স্বামীর ধন সম্পদ। যার সুন্দর বৌ নেই সে আপসুস করে আহ!! আমি ইচ্ছে করলে তো আরো ভালো দেখে একটা বিয়ে করতে পারতাম, আর তখন অন্য মেয়েদের সাথে কথা বলা শুরু হয়। সংসারে তখন আস্তে আস্তে ঝগড়া সৃষ্টি হয়। আর যাদের হয়তো অনেক টাকা, সব ঠিক আছে তখন ঝগড়া হয় কৃপণতা নিয়ে বা টাকা খরচ নিয়ে। তোমার সাথে আমার বিয়ে হয়েই ভুল হয়েছে। আহ!! বাপের বাড়ি আমি কত সুখেই না দিন কাটাতাম। যা চাই তাম তাই পেতাম। আর তুমি!! 
আবার কারো কারো ছেলে সন্তান হয়, তখন চিন্তা করে মেয়ে হলো না কেনো। কারো আবার মেয়ে সন্তান হলে চিন্তা করে কেন যে ছেলে হয় নি।। আবার যাদের কোন সন্তানই হয় না তাদের কি অবস্থা?
ছেলেরা বা মেয়েরা বড় হলে চিন্তা করে আমার ছেলেটা বা মেয়েটা দিয়ে কিচ্ছু হবে না। পড়ালেখা যদি একটু করত। এর চেয়ে আমার কোন সন্তান না হওয়াই ভালো ছিল। 
ছেলে সন্তান বড় হলে বিয়ে দেওয়ার পর ছেলে বৌ বা জামাই আসলে তা নিয়ে আবার কত চিন্তা। আহ!! আমার ছেলেটা ছিল মাছের মত। কিন্তু দেখ বৌটা কেমন ঝগড়াটে। আবার আমার মেয়েটা না কি ভালো ছিল, আর জামাইটা না হয়েছে খাচ্চর। 

এভাবেই চলে, চলে আসছে আদিকাল থেকেই। চলেবেও এরকম। কেন জানি মনে হয় মানুষ হয়েছে অসুখের মধ্যে থাকতে। ভালো থাকতে আসে নি। কিছ কিছু সময় প্রাকৃতিক কারনে সমস্যার মধ্যে থাকে আর যদি প্রকৃতি থেকে সুখ পায় তাহলে নিজে নিজে সমস্যা তৈরি করে নিজের সৃষ্ট সমস্যাতে ঢুবে থাকে। থাকার চেষ্টা করে। আর আমি ও সেই দলে। কেন যানি ইচ্ছে করে এসব থেকে দূরে চলে যাই। আর এটাই হচ্ছে আমার মনের ক্ষুধা। এটাকে কিভাবে মেটাবো দিন রাত তাই চিন্তা করি। আর নিজের সৃষ্ট সমস্যায় ঢুবে থাকি।

Leave a Reply