জেনে নেই কিভাবে ১৫ দিনে গেম ডেভেলপার হওয়া যায়।

গেম তৈরি করা জানার আগে সবার আগে আপনাকে প্রোগ্রামিং সম্পর্কে জানতে হবে। প্রথম দিন আপনি জানবেন প্রোগ্রামিং এর ব্যাসিক ধারণা, কিভাবে কম্পাইলার ইন্সটল করতে হয়, কিভাবে কম্পাইল করতে হয়, ভুল কোড লিখলে কিভাবে ভুল ধরতে হয়, জানবেন ভ্যারিয়েবল সম্পর্কে, লুপ সম্পর্কে, অ্যারে সম্পর্কে, বিভিন্ন সিনট্যাক্স সম্পর্কে, এক্সপ্রেশন সম্পর্কে, একটু আধটু ডেটা স্ট্র্যাকচার সম্পর্কে, খুব ভালো ডেডিকেশন থাকলে অ্যালগরিদম সম্পর্কেও জানতে পারেন।

দ্বিতীয় দিন পয়েন্টার, রেফারেন্স, ক্লাস, অবজেক্ট, ইনহেরিটেন্স, পলিমরপিজম, অ্যাবাস্ট্রাকশন ইত্যাদি ইত্যাদি …

তৃতীয় দিন প্রোগ্রামিং রিলেটেড কিছু সমস্যা সমাধান করবেন। অনেক ভুল করবেন। ঘন্টারপর ঘন্টা একটা সমস্যা নিয়ে পড়ে থাকবেন, সমাধান হবে না। তারপরও চেষ্টা করতে থাকবেন। এক সময় সমাধান হবে। তখন আর্কিমিডিসের মত ইউরেকা বলে চিল্লাফাল্লা শুরু করবেন। তখন একটু নিচের দিকে তাকিয়ে খেয়াল রাইখেন যেন পরনে কিছু থাকে। আর্কিমিডিসের আমলে সিসি ক্যামেরা ছিল না, মোবাইল ও ছিল না। এখন সব আছে। তাই সাবধান।

চতুর্থ দিন। গেম তৈরি করার জন্য কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর পাশাপাশি আপনার কম্পিউটার গ্রাফিক্স সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। ধারণা থাকতে হবে কিভাবে GPU কাজ করে। জানতে হবে মেমরি ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে, তা না হলে এত পাওয়ারফুল কম্পিউটার থেকেও কম্পিউটার হ্যাং করতে পারে।জানতে হতে পারে কম্পিউটার আর্কিটেকচার সম্পর্কে, ভালো একটা গেম ডিজাইন করার জন্য। এত কমপ্লেক্সিটি পছন্দ না হলে যে কোন একটা গেম ইঞ্জিনের হেল্প নিতে পারেন। তার জন্যও ব্যাসিক প্রোগ্রামিং জ্ঞান লাগবে। লাগবে ঐ গেম ইঞ্জিন এনভারনমেন্ট সম্পর্কে ভালো ধারণা।
পঞ্চম দিন। বিভিন্ন ডিভাইসে গেমের রেস্পন্সিভনেস, ইউজার ইন্টারেকশন, ইউজার ইন্টারফেস ইত্যাদি ইত্যাদি…

ষষ্ঠতম দিন। ফিজিক্স সম্পর্কে পড়া। যত পারা যায়। গেমের কোড থেকে ফিজিক্স গুরুত্বপূর্ণ। মূলত আমরা ফিজিক্সকেই কোডে পরিনত করে গেম তৈরি করি।

সপ্তম দিন। আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, মেশিন লার্নিং, বিভিন্ন অ্যালগরিদম, ভার্সন কন্ট্রোল, টিমওয়ার্ক, স্ক্রাম, সফটওয়ার আর্কিটেকচার, ডিজাইন প্যাটার্ন ইত্যাদি ইত্যাদি।

৮ -১৪ তম দিনঃ অনেক গুলো কুল কুল ডেভেলপারের সাথে কাজ করা। তাদের থেকে শেখা। নিজের শেখা জ্ঞান অন্যদের সাথে শেয়ার করা। অন্যদের কোড দেখা, অন্যদের গেম দেখা। আইডিয়া নেওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি।

১৫ তম দিন… এস্ট্রোনোমি, জেনেটিক্স, স্পেস সাইন্স ইত্যাদি ইত্যাদি যতটুকু পারা যায় পড়া। এসব থেকে আইডিয়া নেওয়া। যত বেশি জানা থাকবে, তত চমৎকার আইডিয়া আসবে। তত সুন্দর গেম তৈরি করা যাবে। এরপর সুন্দর একটা গেম তৈরি করে পৃথিবীর বুকে নিজের নাম লিখে নেওয়া যাবে। রেখে যাওয়া যাবে নিজের পায়ের ছাপ।

…. এগুলো হচ্ছে গেম তৈরি করার সহজ ধাপ। কারো যদি সুপার ন্যাচারাল পাওয়ার থাকে, তাহলে সে ১৫ দিনে গেম ডেভেলপমেন্ট শিখতে পারবে। আর না হয় উত্তর মেরুতে চলে যেতে পারে। সেখানে একটানা ৬ মাস দিন, আর ৬ মাস রাত। চেষ্টা করলে ১৫ দিনে ভালো একজন গেম ডেভেলপার হিসেবে ফিরে আসা যেতে পারে।

// এটি একটি স্যাটায়ার লেখা। ICT মন্ত্রনালয় থেকে ১৫ দিনে গেম ডেভেলপার তৈরির একটা প্রজেক্ট হাতে নিয়েছিল। ঐ নিউজ দেখে লেখাটি লেখা।

2 thoughts on “জেনে নেই কিভাবে ১৫ দিনে গেম ডেভেলপার হওয়া যায়।”

Leave a Reply