গল্প – ভালো লাগা

স্নিগ্ধাকে ভালো লাগে তার প্রাণবন্ততার জন্য। অন্যান্য ছেলেরা স্নিগ্ধা মধ্যে যে ধরণের সৌন্দর্য খুঁজবে, তা হয়তো স্নিগ্ধার মধ্যে নেই। না না, স্নিগ্ধা অসুন্দর না। বন্ধুরা মেয়েদের বর্ণনা যেমন দেয়, তেমন নয় স্নিগ্ধা। তারা সবার আগে ফর্সাটাকেই কেন জানি প্রাধান্য দেয়। স্নিগ্ধা ফর্সা নয়। শ্যমলা। সুন্দর। ন্যাচারাল বিউটি যাকে বলে, সেটা। তার মুখে যে মায়া রয়েছে, তা ফর্সা মেয়েদের মুখে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাদের মুখে পাওয়া যাবে আটা ময়দার প্রলেফ।

আসলে স্নিগ্ধা ফর্সা, শ্যামলা এসবের উর্ধে। মানুষের ব্যাহিক সোন্দর্য একটা খোলস। খারাপ মানুষের সাথে মিশতে কেউই চায় না। সবাই ভায় ভালোর সাথে মিশতে। তাই সৌন্দর্য্যটাকে দিয়ে ভালোটা মাপার একটা মানদণ্ড হিসেবে ধরে নেয়। কিন্তু ফর্সা চেহারা দিয়ে একটা মানুষের ভেতরে ভালো না খারাপ, তা বুঝা যায় না। স্নিগ্ধা শ্যমলা হয়েও কি স্বচ্ছ। কি প্রাণচঞ্চল। কত উৎসাহী। সব কিছুতেই যার উৎসাহ। যার ভেতরে কি রয়েছে, তা সহজেই যে কেউ দেখে নিতে পারে। দেখে নিতে পারবে।

পড়ালেখায় ভালো করার পাশা পাশি কত শত মহৎ কাজ করে বেড়ায় স্নিগ্ধা। সবার বিপদে এগিয়ে আসে। রাস্তায় কোন অন্ধ দেখলে এগিয়ে গিয়ে সাহায্য করে। কারো চিকিৎসার জন্য ফান্ডের দরকার হলে ফান্ড তুলতে সাহায্য করে। পথ শিশুদের পাশে বসে গল্প শুনায়। যে গল্প গুলো তাদের মা বাবা তাদের ঘুম পাড়ানীর সময় শুনানোর কথা ছিল।

মানুষের জন্য কাজ করতে ইথানের ও খুব ভালো লাগে। করেও। ইথান ভাবে তা স্নিগ্ধার তুলনায় কিছুই না। এ জন্যই স্নিগ্ধাকে যে ভালো লাগে, তা জানাতেও চাচ্ছে না। স্নিগ্ধার তুলনায় নিজেকে তুচ্ছ ভাবে। ভাবে যে দিন স্নিগ্ধার সমান হতে পারবে, সেদিনই জানাবে তাকে।

ইথান মানুষের কল্যাণে কাজ করে যায়, এমন অনেক গুলো অর্গানাইজেশনের সাথে ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেছে। শুধু মাত্র একটি ভালো লাগা থেকেই। না, দুইটি ভালো লাগা থেকে। একটি হচ্ছে মানুষের জন্য কাজ করার আনন্দ, আরেকটি হচ্ছে স্নিগ্ধার জন্য। অনেক কাজ করেও মনে হচ্ছে স্নিগ্ধার সমান কিছু করতে পারে নি। চেষ্টা করে যাচ্ছে। ভালো লাগে বলে। হয়তো সব সময়ই ভালো লাগবে।

ভালোলাগাটা অদ্ভুত। পেছনে কোন কারণ নেই। মানুষের একটা দুর্ভলতা হয়তো যাকে ভালো লাগে, তার জন্য কিছু করতে ইচ্ছে করে। ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও স্নিগ্ধার জন্য কিছু করতে পারে নি। একদিন করতে পারবে। একদিন রিফতির সামনে গিয়ে বলতে পারবে, স্নিগ্ধা, তোমাকে আমার খুব ভালো লাগে। এটা ইথানের বিশ্বাস। আর বিশ্বাস নিয়েই মানুষ বেঁছে থাকে।

Leave a Reply