এসপ্রেসো মেশিন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা

বলা যায় রেগুলার কফি খাওয়া হয় কফিশপে। চায়ের মত আমরা চাইলেই বাসায় কফি বানিয়ে খেতে পারি না। দরকার হয় এসপ্রেসো মেশিন এর। তাই ক্যাফে গুলোই ভরসা। কফি তৈরি করার জন্য কফি বিনের সাথে ভালো কফি মেশিনও লাগে। ভালো মেশিন না হলে কফির টেস্টও ভালো হয় না। কফি মেশিন বলা যায় এক্সপেনসিভ। কাকলি ফার্নিচারের মত দামে কম মানে ভালো কোন কফি মেশিন নেই। অন্তত আমার জানা মতে।

পরিচিত যারা কফি মেশিন ব্যবহার করেছেন, সবাই De’Longhi এর কফি মেশিন কিনতে সাজেস্ট করেছিলেন। বাংলাদেশে এদের অফিশিয়াল পার্টনার হচ্ছে ইউরো কিচেন। এরপরও দেশে সব গুলো মডেল পাওয়া যায় না। অনেক ধরনের কফি মেশিন রয়েছে। যা নিয়ে লিখতে গেলে একটা রচনা লেখা যাবে। আমার দরকার ছিল অটোমেটিক কফি মেশিন। যেন প্রতিদিন কফি বিন গ্রাইন্ড করে ফ্রেস কফি খেতে পারি। যেটাকে বলে ‘বিন টু এসপ্রেসো বা বিন টু কফি’।

অটোমেটিক কফি মেশিনের মধ্যে আবার সেমি অটোমেটিক এবং ফুল অটোমেটিক রয়েছে। সেমি অটোমেটিকে মিল্ক নিজেকে ফ্রথ করতে হয়। ফুল অটোমেটিকে মেশিন নিজেই মিল্ক ফ্রথ করে লাতে, ক্যাপাচিনো ইত্যাদি তৈরি করে দেয়। ক্যাপাচিনো বা লাটেতে যে আর্ট করে সার্ভ করে কফি শপে, ফুল অটোমেটিকে এই অপশন নেই। নিজে মাঝে মধ্যে আর্ট করার ইচ্ছে থেকে সেমি অটোমেটিক মেশিন নেওয়ার প্ল্যান করলাম। যে মডেল পছন্দ হয়েছে তা হচ্ছে De’Longhi Dinamica ECAM350.35.W। ঐটা না থাকায় সিমিলার আরেকটা প্রোডাক্ট Magnifica S ECAM 22.110 B নিয়েছি আমি।

Magnifica S ECAM 22.110 B

কফি মেশিনের সাথে আরো কিছু লাগে। সবার আগে যেটা দরকার, তা হচ্ছে কফি বিন। নর্থ এন্ড কফি বিনের জন্য বিখ্যাত। তাদের বিন বলতে পারেন বাংলাদেশে সেরা। এমনকি প্রায় কফি শপে তাদের বিন ব্যবহার করে। বনানী কামাল আতার্তুক ব্রাঞ্চ থেকে তাদের সিগনিচার ব্লেন্ড বিন নিয়ে নিলাম। এছাড়া মিল্ক ফ্রথিং এর জন্য একটা স্কেল জার লাগে। স্টিলের একটা মগ বলতে পারেন। তো De’Longhi এরই ছিল। দাম তিন হাজার টাকা দেখে আর নেই নাই। মেহেদি মার্টে এসে পেয়ে গেলাম, তাও কম না। প্রায় নয়শ টাকা। এই জারটা স্টিলেরই দরকার। মিল্ক কতটুকু গরম হয়েছে, যেন হাত দিয়ে ধরলে বুঝা যায়। সর্বশেষ যেটা দরকার, তা হচ্ছে মিল্ক। যদিও যারা এসপ্রেসো বা অ্যামেরিকানো খায়, তাদের দরকার হয় না মিল্কের।

যারা রেগুলার কফি খায়, তাদের স্বপ্ন থাকে নিজের কফি নিজে তৈরি করবে। খুবি এক্সাইটেড ছিলাম কখন বাসায় আসব, কখন নিজ হাতে কফি তৈরি করব। বাসায় এনে অপেক্ষা করতে ইচ্ছে করল না।

বাসায় এসে আনবক্স করে সেট করে নিলাম। কমপ্লিকেটেড কিছু না। কোন গাইড ছাড়া একটু দেখলেই যে কেউ পারবে। কফি তৈরি করাও সহজ। পানির জন্য আলাদা একটা চেম্বার থাকে। ঐখানে পানি দিলাম। কফি বিন যেখানে দিতে হয়, দিলাম। এরপর নির্দিষ্ট বাটনে ফ্রেস করার পরই এসপ্রেসো বের হলো। মিল্ক ফ্রথ করে এসপ্রেসোর সাথে এড করে নিলাম। হয়ে গেলো ক্যাপে লাতে!

বিভিন্ন প্রকার কফি সম্পর্কে এর আগে একটা লেখা লিখেছি। তা দেখতে পারেন। এই মেশিনে অটোমেটিক ক্যাফে অ্যামেরিকানো তৈরি করা যায়। এসপ্রেসোর সাথে বিভিন্ন ফ্লেবার যুক্ত করে বিভিন্ন কফি তৈরি করা যায়। আমার লাতে পছন্দ। আর তার জন্য দরকার কফি বিন এবং মিল্ক। তৈরি করাও খুব সহজ। তবে যার জন্য স্কিল দরকার হচ্ছে ক্যাফে লাতের উপরের আর্ট তৈরি করতে। ইনশাহ আল্লাহ আর্ট করাও শিখে যাবো। B)

1 thought on “এসপ্রেসো মেশিন ব্যবহারের অভিজ্ঞতা”

Leave a Reply