সাইন্স ফিকশন – হাইব্রিড

ইথান হৃদি কে বলল, তুমি হাইব্রিড হয়ে যাচ্ছো না কেনো? কত পিছিয়ে আছো। একজন হাইব্রিড কত কিছু জানে, তুমি এখনো কিছুই জান না। বই পড়ে শেখার এখন সময় আছে? হাইব্রিড হয়ে যাও। সব কিছু অটোমেটিক তোমার মাথায় ইন্সটল হয়ে যাবে। কষ্ট করতে হবে না। তারপর তুমি যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে।

মাথায় একটি চিপ বসিয়ে এখন যে কেউই হাইব্রিড হতে পারে। এক অংশ মানুষ। এক অংশ রোবট। দুইটা মিলে অসাধারণ কম্বিনেশন। মানুষের আগে ড্রিম ছিল হাইব্রিড হওয়ার। পড়ালেখার পেছনে সারাজীবন কাটিয়ে দিলে কাজ করবে কখন? তা ছাড়া আগে মানুষ ইচ্ছে করলেই কোন কিছু শিখতে পারত না। এখন যা শেখা দরকার তাই শিখতে পারছে। কোন সময় লাগছে না। মস্তিষ্ক ক্লাউডের সাথে কানেক্টেড। সব হাইব্রিড সব হাইব্রিডের সাথে কানেক্টেড। কত সুন্দর সিস্টেম, আর হৃদি কিনা এখনো সেই এনালগ সিস্টেমে পড়ে আছে।

হৃদি বলল, ইথান, এখন যাও। আমি কিছুক্ষণ একা থাকব। আমাকে একা থাকতে দাও।

ইথান চলে গেলো। হৃদি একসময় ইথানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখত। নদীর দ্বারে তাদের একটা বাড়ি হবে। ইথান আর সে এক সাথে থাকবে। তাদের এক ডজন বাচ্চা কাচ্চা হবে। আরো কত স্বপ্ন। এখন আর স্বপ্ন দেখে না। একটা রোবটকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে নেই।

ওরা দ্রুত সব কিছু জানার জন্য, সব কিছু দ্রুত করার জন্য মাথায় চিপ বসিয়েছে। হাইব্রিড হয়েছে। সব কিছু জেনে ফেললে আর কিছুই জানার থাকে না। আর জীবনের মানেই হচ্ছে অজানাকে জানা। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। অথচ ওরা যখন ইচ্ছে তখনই সব জানতে পারছে। এটাকে মানুষের জীবন বলা যায় না। রোবোটিক জীবন বলা যায়।

মানুষ আগেই রোবট ছিল। সারাক্ষণ মোবাইল, কম্পিউটার নিয়ে পড়ে ছিল। এখন সবাই নিজ মস্তিষ্কেই একটা কম্পিউটার নিয়ে হাঁটছে। সব কিছু মস্তিষ্ক থেকেই কন্ট্রোল করছে। আচ্ছা, নাকি কম্পিউটারটাই মস্তিষ্কটাকে কন্ট্রোল করছে? যাই হোক, এদের মানুষ বলা যায় না। এদের রোবটই বলা যায়।
হৃদি চেয়েছে একজন মানুষের সাথে থাকতে। মানুষের সাথে জীবন কাটিয়ে দিতে। অনুভূতিহীন রোবটের সাথে নয়। ইথান একটা রোবট। আর একথা মনে হলেই হৃদির দীর্ঘশ্বাস বের হয়। একটু একটু কষ্ট হয়। হারানোর কষ্ট।

Leave a Reply