কার্বন মনোক্সাইড, আর্সেনিক ইত্যাদির মত শিক্ষাও অনেক ধীরে ধীরে কাজ করে.

আমাদের দেশের রাজনীতিবিদেরা হয়তো শিক্ষার কোন ফলাফল খুজে পায় না, তাই এর পেছনে ব্যয় করতে এত কার্পন্য। ফলাফল দেখার জন্য যে জ্ঞান দরকার আল্লাহ তাদের সেই জ্ঞানটুকুও দেয় নি।
জাফর ইকবাল স্যার তার একটা লেখায় লিখছিলঃ
বাংলাদেশের শিক্ষার পিছনে খরচ করার কথা জিডিপির ছয় ভাগ- এই সরকার খরচ করে মাত্র ২.৪ ভাগ। পৃথিবীর আর কোন সভ্য দেশ শিক্ষার পিছনে এতো কম টাকা খরচ করে বলে আমার জানা নেই। সবাই পদ্মা ব্রিজ, উড়াল সেতু, পরিবেশ এই সব নিয়ে কথা বলে, কিন্তু যদি শুধু শিক্ষার জন্যে আর অল্প কিছু টাকা বেশী খরচ করত তাহলে এই দেশ যে কী ম্যাজিক হয়ে যেতো সেটা কেউ বুঝল না – আহা রে!
আহ!! প্রযুক্তি কত এগিয়ে গেছে, উন্নতদেশ গুলোতে যেখানে কম্পিউটারাইজড ক্লাস রুম, আমাদের দেশের কোন কোন অঞ্চলের ছাত্র/ছাত্রীরা কম্পিউটার কি তাই জানে না। তারা রচনা পড়ে কম্পিউটারের উপর। আর তা থেকেই তারা কম্পিউটার সম্পর্কে জানে। কিন্তু দেখার সুযোগ হয় না।
আমার উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকার সময় কম্পিউটারের প্রতি আমার আগ্রহের কথা মনে পড়ে গেলো। তখন আমিও রচনা পড়তাম, কিন্তু কম্পিউটার দেখা বা ধরার সুযোগ হয় নি। বইতে যেটুকু জানছি তাতেই মনে করতাম কম্পিউটারের অনেক ক্ষমতা, অনেক কিছু করা যায় কম্পিউটারের সাহায্যে। যাদুর মত সব কিছু। আর যখন কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছি, তখন বুঝতে পেরেছি এর ক্ষমতা কল্পনা থেকেও বেশি। যারা এটা ব্যবহারের সুযোগ পায় নি, তারা কিভাবে এর সুবিদা গুলোকে কাজে লাগাবে??
কিছু কিছু যাগায় এখন তবুও কম্পিউটার সহজলভ্য হয়েছে, কিন্তু ইন্টারনেট?? ইন্টারনেট ছাড়া কম্পিউটার যে একটা বোকার বাক্স ছাড়া আর কিছুই না তা কি আমাদের দেশের রাজনীতিবিদেরা বুঝে না? কেন তারা ইন্টানেটকে আরো সহজ করে না?? কেন দেশের সব জাযায় ইন্টারনেটকে পৌছানোর চেষ্টা করে না??
গ্রামীন ফোন তাদের ইনফরমেশন সেন্টার নামে একটা প্রকল্প ছালু করেছে, এর মাধ্যমে যে কত উপকার হয়েছে, কত জন যে ইন্টারনেট কি ও এর ক্ষমতা সম্পর্কে জানতে পেরেছে তা বলার বাহিরে। সরকার কি ইচ্ছে করলে এমন কিছু করতে পারে না? অন্তত প্রতিটি স্কুলে এমন একটি তথ্য কেন্দ্র চালু করা যায় না?? যেখানে সবাই কম্পিউটার কি তা জানবে, কম্পিউটারের ব্যবহার সম্পর্কে জানবে, জানবে ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে।
খান একাডেমি সম্পর্কে অনেক ছাত্র ছাত্রীই শুনে বা জানতে পেরেছে প্রত্রিকার কল্যানে, কয়জনে এটি ব্যবহার করতে পারছে?? ইন্টারনেট যে জ্ঞানের সাগর, সকল জ্ঞান নিয়েই এটা দিন দিন বিশাল হচ্ছে, আমরা কতটুকু ব্যবহার করতে পারছি?? সব কিছু শেখার জন্যই যে ইন্টারনেটে তথ্য রয়েছে, এখন শুধু ব্যবহার করা বাকি, জানা বাকি। আহ!! যদি সব কিছু যদি ইন্টারনেট সকল ছাত্র/ছাত্রীর হাতে পৌছিয়ে দিতে পারতাম, সবাইকে বলতে পারতাম দেখ ইন্টারনেট, এবার আর স্কুলের ঘাড় তেড়া শিক্ষকের দরকার নেই, নিজে নিজেই শিখে নে, কত ক্রিয়েটিভ শিক্ষক সবার জন্য অপেক্ষা করছে শেখানোর জন্য। Google Scholar এ গিয়ে কিছু সার্চ করলেই যে ঐ বিষয়ের সকল শিক্ষা উপকর দিয়ে দেয়, সারাবিশ্বের সকল ছাত/ ছাত্রী/ শিক্ষক ও অভিজ্ঞ ব্যাক্তি যে দিন দিনই উকিপিডিয়াকে বর্ধীত করে আমাদের জন্য কত বিশাল জ্ঞান কোষ তৈরি করেছে এটা যে কম্পিউটার ব্যবহার করে না, ইন্টারনেট ব্যবহার করে না সে কি জানবে কখনো?? এত গুলো তথ্য দেখে আমার একটুও কম্পিউটারের সামনে থেকে উঠতে ইচ্ছে করে না।  আমাদের দেশে এখন টিভি চ্যানেলের অভাব নেই, কয়টি চ্যানেল শিক্ষা বিষয়ক অনুষ্ঠান প্রচার করে?? পৃথিবী যে সব দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে গেছে, “Survival of the fittest” আমাদেরও যে টিকে থাকলে হলে জানতে হবে। জানতে জানতেই আমরা একদিন সব প্রয়োগ করতে পারব।
হয়তো কোন একদিন আমাদের সরকার পরিবর্তন হবে, অনেক ভালো ভালো জ্ঞানী লোক আমাদের দেশ চালাবে। তারা যেমন জ্ঞানী থাকবে, আমাদের দেশে তেমন আরো অনেক জ্ঞানী ব্যক্তি তৈরি করার জন্য তারা চেষ্টা করবে, তারা দেশের দক্ষ জন শক্তি তৈরি করার জন্য সকল চেষ্টা সবার আগে করবে। আমরা তখন কোন দিক দিয়েই পিছিয়ে থাকব না। সুন্দর সেই দিনের অপেক্ষায় …

3 thoughts on “কার্বন মনোক্সাইড, আর্সেনিক ইত্যাদির মত শিক্ষাও অনেক ধীরে ধীরে কাজ করে.”

  1. ইন্টারনেট ছাড়া কম্পিউটার যে একটা বোকার বাক্স ছাড়া আর কিছুই না তা কি আমাদের দেশের রাজনীতিবিদেরা বুঝে না? কেন তারা ইন্টানেটকে আরো সহজ করে না?? কেন দেশের সব জাযায় ইন্টারনেটকে পৌছানোর চেষ্টা করে না??

    Reply

Leave a Reply