অবজারভার।

একটি মেয়ে। নাম আনিকা। প্রথম দেখছি তাদের ছাদের উপর। বিকেল বেলায়। গান শুনে কানে এয়ারফোন দিয়ে। আমি ছিলাম তাদের বিল্ডিং এর পশ্চিম দিকে একটা বিল্ডিং এ। ছয় তলার একটা বারান্দায়। ঐদিন থেকে শুরু। প্রতিদিন বারান্দায় গিয়ে আনিকাকে দেখা। আজ ও দেখি। বিকেল বেলায়। বারান্দায় গিয়ে বসে থাকি একবার দেখার জন্য।

কোন কোন দিন আনিকা আসে না। কিছুক্ষন পর পর ই তাকা ওদের চাদের দিকে। কিন্তু কেউ থাকে না ওইদিন। অনেক কষ্ট লাগে। মাগরিবের নামাজের আজান দিলে নামাজ পড়তে চলে যাই।

একই নিয়মে। আজও। শুরু হয়েছে অনেক আগে। ঢাকায় প্রথম আসছি পড়ালেখা করার জন্য। একটা অপদার্থ ছিলাম। নিজের কাছে যেমন, সবার কাছেও। ছিলাম গুড ফর নাথিং। জানতাম আমি আনিকার সামনে যাওয়ার যোগ্য না। তাই যেতে পারতাম না। অবজারভার হিসেবে কাজ করছি। দূর থেকে সব কিছু দেখে যেতাম। অবজারভার। দেখতে পারব, কিন্তু ছূতে পারব না, কিছুই করতে পারব না।

আজ অনেক দিন হয়ে গেছে। তিন বছরের ও বেশি। মনে হয় চার বছর। বা চার বছরের ও বেশি হবে। এখনো আমার বারান্দায় বসে আনিকাকে দেখার জন্য অপেক্ষা করি। ঐ একই বারান্দায়, ঐ একই সময়। ঐ একই নিয়ম। এখনো আমি অবজারভার। এখনো আমি ছুঁতে পারিনা কিছু। কিছুই না। এখন আমার আনিকার সামনে যাওয়া যোগ্যতা হয়েছে, ওদের ফ্যামিলির সামনে যাওয়ার যোগ্যতা হয়েছে। তারপরও যেতে পারি না। কেন জানি কেমন একটা ভয় লাগে। হেরে যাওয়ার ভয়। আমি হেরে যেতে চাই না। “না” শব্দটি আমি শুনতে চাই না।।

পদার্থ বিজ্ঞানের সকল নিয়ম মেনে চলা একজন অবজারবার কিন্তু একটা অপদার্থ।

Leave a Reply